আজকের শিরোনাম :

‘বিসিএসে মেধাবী প্রার্থী সবসময় যোগ্য নাও হতে পারে’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৫৫

ড. মোহাম্মদ সাদিক পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ১৭ সেপ্টেম্বর অবসর নিয়েছেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগে বিসিএসসহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হতো প্রায় নিয়মিত।  তিনি কঠোরভাবে এসব নিয়ন্ত্রণ করেছেন।  বিসিএসের সিলেবাসে পরিবর্তন এনে মুক্তিযুদ্ধের ওপর ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা চালু করেছেন। এর আগে তিনি আরেক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের সচিব ও সরকারের শিক্ষা সচিব ছিলেন। তিনি যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ‘সিলেটি নাগরী লিপির’ ওপর গবেষণার জন্য ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পিএসসির প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া ও সংস্কার নিয়ে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন একটি দৈনিক পত্রিকার বিশেষ সংবাদদাতা আশরাফুল হক।

প্রশ্ন : আপনি ১৯৮২ ব্যাচের অফিসার। ওই সময় যখন পিএসসিতে ভাইভা দিতে এসেছিলেন তখনকার কোনো স্মৃতি মনে পড়ে?

মোহাম্মদ সাদিক : আমি যখন বিসিএস দিয়েছি তখন পিএসসির কোনো নিজস্ব ভবন ছিল না। রাজধানীর ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ফরম জমা দিয়েছিলাম। ভাইভা দিয়েছি প্রেস ক্লাবের পাশে ‘চামেরী হাউসে’। আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ‘নির্ঝরের স্বপ্ন ভঙ্গ’ কোন বইয়ে আছে। আমি বললাম প্রভাত সংগীত। চেয়ারম্যান আশা করেছিলেন আমি হয়তো বলব সঞ্চয়িতা। আসলে সঞ্চয়িতা হচ্ছে কবিতা সংকলন।

প্রশ্ন : তখনকার পিএসসি আর বর্তমান পিএসসির মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে?

মোহাম্মদ সাদিক : অনেক পার্থক্য আছে। অবকাঠামোগত পার্থক্য হচ্ছে তখনকার পিএসসির আধুনিক ভবন ছিল না। এখন সেটা আছে। তখন ব্যাংকে টাকা জমা দিতাম। টাকা জমার স্লিপ রাখতে হতো। হারিয়ে গেলে বিপদ হতো। এখন ছেলেমেয়েরা বিসিএসের আবেদন করে ঘরে বসে। বেশিরভাগই ল্যাপটপে আবেদন করে। অ্যাডমিট কার্ড নিজে ডাউনলোড করে। তখন এক প্রশ্নে সবার পরীক্ষা হয়েছে। এখন প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় একই প্রশ্নের ছয় থেকে আট সেটে। আমাদের সময় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল কম। তখন হাজারে হিসাব হতো, এখন হিসাব হয় লাখে। এখন দুই থেকে আড়াই হাজার পদের জন্য পরীক্ষা দেয় চার লাখ। আমাদের সময় পদের সংখ্যা হতো এক হাজারের কম। বাংলাদেশ চেঞ্জ হয়েছে, পিএসসিও চেঞ্জ হয়েছে। তখনকার পিএসসির সঙ্গে এখন পার্থক্য অনেক বেশি।

প্রশ্ন : পিএসসিতে কখনো সদস্য আবার কখনো চেয়ারম্যান ছিলেন। দায়িত্ব পালনের এ সময়ে আপনার প্রধান চ্যালেঞ্জ কী ছিল?

মোহাম্মদ সাদিক : দুটো চ্যালেঞ্জ ছিল। এক পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা ও অন্যটি হচ্ছে ফলাফল ব্যবস্থাপনা। আপনারা শুধু ক্যাডার সার্ভিসের খবর নেন। প্রতি বছর বিসিএস পরীক্ষা ছাড়াও নন-ক্যাডারে একশর ওপরে পরীক্ষা হয়। গত বছর হয়েছে ১১০টি। পিএসসির কোনো নিজস্ব কেন্দ্র নেই। পিএসসির অফিসে সর্বোচ্চ চারশো লোকের পরীক্ষা নেওয়া যায়। এর বেশি লোক হলেই অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাদের নিজস্ব পরীক্ষা আছে। তাদের ইভেন্ট আছে। ছুটি-ছাটা থাকে। এসব দেখে আমাকে পরীক্ষার শিডিউল দিতে হয়। এরপরের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও মডারেশন। এরপর আসে মুদ্রণ। বিজি প্রেসের সবাই চোখ খুলে বসে থাকে কী প্রশ্ন ছাপা হচ্ছে। এখন ছোট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষার দিন পিএসসিতেই ছাপি। ৩৯ বিসিএসের প্রশ্নপত্রও আমরা পিএসসিতে ছেপেছি। ডা. লতিফ নামে একজন সদস্য ছিলেন। তিনি দুই রাত এক দিন টানা পিএসসিতে অবস্থান করে প্রশ্নপত্র ছাপিয়েছিলেন। লিখিত পরীক্ষার অনেক সেট করা হয়। সেসব প্রশ্নপত্র আগেই বিভাগীয় কমিশনারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরীক্ষার দিন আমরা সদস্যরা বসে ঠিক করি কোন সেটে পরীক্ষা হবে। অনেক সময় লটারি করে সেট চূড়ান্ত করা হয়। পরীক্ষার হলের ভেতরে নানা সমস্যা। এখনকার প্রার্থীরা কানের মধ্যে ডিভাইস লাগিয়ে রাখে। শার্টের বোতামে লাগিয়ে রাখে। হিজাবের নিচে লুকিয়ে রাখে। এগুলো হচ্ছে পরীক্ষার চ্যালেঞ্জ। এরপর ফলাফল শুদ্ধ হতে হবে এবং গোপন রাখতে হবে। এগুলোও চ্যালেঞ্জ ছিল।

প্রশ্ন : আপনার সময় বিসিএসে মুক্তিযুদ্ধের ওপর ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা চালু হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে এটা ১০০ নম্বরের হলে ভালো হতো। ১০০ নাম্বারের পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা কী?

মোহাম্মদ সাদিক : মুক্তিযুদ্ধ না হলে, দেশ স্বাধীন না হলে আমি সরকারের সচিব হতে পারতাম না। পিএসসির চেয়ারম্যান হতে পারতাম না। মুক্তিযুদ্ধের ওপর আমার সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাবোধ আছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠি আসার আগেই আমরা ৫০ নম্বরের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এ কারণে ১০০ নম্বর করা সম্ভব হয়নি। আমরা বিসিএসের কারিকুলাম রিভাইস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। দীর্ঘদিন এখানে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। সিলেবাসে পরিবর্তন আনা জটিল কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন কী পড়ায় তা জানতে হবে। আমরা এ কাজে হাত দিয়েছিলাম। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ের জন্য ১০০ নম্বর রাখার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের জন্য এ কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি।

প্রশ্ন : বর্তমানে দুজন পরীক্ষক একটি খাতা দেখেন। প্রয়োজনে তৃতীয় পরীক্ষকও রয়েছেন। এর কি প্রয়োজন রয়েছে?

মোহাম্মদ সাদিক : আমরা এটা শুরু করেছি ৩৮ বিসিএস থেকে। ৩৯ হচ্ছে বিশেষ বিসিএস। সেই হিসেবে ৪০ হচ্ছে দ্বিতীয় পরীক্ষা। কমিশন মনে করে দুজন পরীক্ষকের নাম্বার গড় করে দেওয়া হলেও প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে আমরা যে পাঠাই তাতে খুব বেশি লাভ হচ্ছে না।

তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠালে সময় বেশি লাগে। তথ্য-উপাত্ত নিয়ে গবেষণা না করলে এটার ফলাফল বোঝা যাচ্ছে না। তৃতীয় পরীক্ষক রাখা হবে কি না তা সিদ্ধান্তের বিষয়। এ সিদ্ধান্ত কমিশনকেই নিতে হবে।

প্রশ্ন : একটা বিসিএস পরীক্ষার বাছাই শেষ করতে দুই থেকে তিন বছর লেগে যায়। কিন্তু আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন এক বছরের মধ্যে বাছাই প্রক্রিয়া শেষ করে। আমাদের সমস্যাটা কোথায়?

মোহাম্মদ সাদিক : ভারতে প্রতিটি রাজ্যে পাবলিক সার্ভিস কমিশন রয়েছে। আবার কেন্দ্রীয়ভাবে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনও রয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে পুলিশ, প্রশাসন, ফরেন বা এরকম কয়েকটা সার্ভিসের পরীক্ষা হয়। তারা কখনো কখনো একসঙ্গে বা পৃথকভাবে পরীক্ষা নেয়। কিন্তু বাংলাদেশে ২৬টি ক্যাডারের পরীক্ষা একসঙ্গে নেওয়া হয়। ভারতে তো ২৬টি ক্যাডার নেই। আমাদের বিসিএস এডুকেশন ক্যাডারের কথাই ধরুন। বিজ্ঞান, বাণিজ্য আর মানবিক। এ তিন বিভাগের আরও কত বিষয়। তার ওপর টেকনিক্যাল বিষয় তো রয়েছেই। পিএসসিকে শুধু এডুকেশন ক্যাডারের জন্য ৮০ থেকে ৯০টা প্রশ্ন প্রণয়ন করতে হয়। একটা সার্ভিসেই যদি ৮০ থেকে ৯০ ধরনের পদ থাকে তাহলে সেটা কীভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব। জেনারেল সার্ভিসের পরীক্ষা এবং টেকনিক্যাল সার্ভিসের পরীক্ষা একসঙ্গে হচ্ছে। ২৬টা ক্যাডারের জন্য শত শত রকমের পদ। এ পদগুলোর জন্য আলাদা আলাদা ভাইভা নিতে হয়। পিএসসির সদস্য আছেন ১৪ জন। এ ১৪ জনকেই একসঙ্গে ভাইভার কাজে ব্যস্ত রাখা যায় না। শুধু বিসিএসে ভাইভা নিলেই তো হবে না। আমার তো আরও কাজ আছে। নন-ক্যাডারের পরীক্ষা নিতে হয়। এ বিষয়গুলো কাকে বোঝাব? জেনারেল ও টেকনিক্যাল সব একসঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ায় ভারতের সঙ্গে আমাদের মেলে না। আমাদের ক্যাডারের শেষ নেই। এসব ক্যাডার হয়েছে ১৯৭৭-৭৮ সালে। আগে এত ক্যাডার ছিল না।

প্রশ্ন : ক্যাডার কমানোর কি সময় এসেছে বলে আপনি মনে করেন?

মোহাম্মদ সাদিক : এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। আমি ক্যাডার কমাতে বললে সংশ্লিষ্টরা রুষ্ট হতে পারেন। কাজেই এ বিষয়ে সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

প্রশ্ন : ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলে বিসিএসসহ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে শতভাগ মেধাভিত্তিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর ফলে সিভিল সার্ভিসে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে?

মোহাম্মদ সাদিক : এতে মেধাবীরা জয়ী হবেন। এটা হচ্ছে প্রথম কথা। কিন্তু পৃথিবীর বিভিন্ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সঙ্গে আমাদের যখন মতবিনিময় হয় তখন তারা বলেন, তারা মেধাবী প্রার্থী চান না, যোগ্য প্রার্থী চান। এটা আপনার সিদ্ধান্ত। আপনি উপযোগিতা দেখবেন না মেধা দেখবেন। এমন তো হতে পারে, যে মেধাবী সে উপযুক্ত নয়। পরিবারের পাঁচজন সন্তান থাকলে সবচেয়ে মেধাবীটা বাবা-মার জন্য সবসময় আশীর্বাদ নাও হতে পারে। এটা বিতর্কের বিষয়। আমার কথা হলো মেধাবী প্রার্থী সবসময় যোগ্য প্রার্থী নাও হতে পারে।

প্রশ্ন : বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০। অনেক প্রার্থীর অভিযোগ শুধু ভাইভার নম্বরের হেরফেরের কারণে অনেকে কাঙ্ক্ষিত ক্যাডার হতে পারছেন না বা ননক্যাডার হচ্ছেন। একসময় বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ১০০ ছিল। আপনি কী মনে করেন বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ এর পরিবর্তে ১০০ হওয়া উচিত?

মোহাম্মদ সাদিক : লিখিত পরীক্ষার নম্বরের অনুপাতে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর রাখা উচিত। লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখতেন একজন করে পরীক্ষক। এখন দুজন করে দেখেন। ভাইভা নেন তিনজন পরীক্ষক। তারা মুখোমুখি বসেন। প্রার্থীকে প্রশ্ন করেন। তারা তিনজন মিলে নির্ধারণ করেন প্রার্থী কত পাবে। ৯০০ নম্বর নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। প্রশ্ন শুধু ২০০ নিয়ে। বিসিএসে ভাইভার নম্বর কমানো উচিত হবে না। সবসময় লিখিত পরীক্ষা সঠিক হচ্ছে এটার নিশ্চয়তা কে দেবে। ভাইভায় শুধু প্রার্থীর তথ্য-উপাত্তের গভীরতা দেখা হয় না। যে সার্ভিসে সে যেতে চায় সেই সার্ভিস সম্পর্কে তার ধারণা আছে কি না তা দেখা হয়। ভাইভাতে তার ভেতরের মানুষটাকেও দেখার চেষ্টা করা হয়। কক্ষে ঢোকার পর থেকে তার গেটআপ, মেকআপ, অ্যাপ্রোচ, কথাবার্তা, শব্দচয়ন, তাকানো, বডিল্যাঙ্গুয়েজ এসব দেখে অভিজ্ঞ তিনজন ঠিক করেন সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়ে সে কেমন করবে। প্রার্থীকে অপ্রাসঙ্গিক অনেক প্রশ্ন করেও কিন্তু যাচাই করা হয়। খুব সহজ প্রশ্ন থেকেও প্রার্থীর দৃষ্টিভঙ্গি বোঝা যায়। ভাইভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নম্বর কমানো মানে হচ্ছে ভাইভার গুরুত্ব কমানো। ভাইভাকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ এই প্রথম আপনি প্রার্থীকে সামনাসামনি দেখছেন। এর আগে প্রার্থী কাগজে ছিল। এখন সে দৃশ্যমান হয়েছে। এই নম্বরটা কমানোর জন্য যারা বলেন তারা আসলে এর গভীরতা বোঝেন না।

প্রশ্ন : সরকার চাচ্ছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির অর্থাৎ ১৩তম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেডের জনবল বাছাইয়ের দায়িত্ব পিএসসিকে দিতে। এতে কি পিএসসি অতিরিক্ত কাজের চাপে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়বে?

মোহাম্মদ সাদিক : লোকবল বাড়ালে সম্ভব হবে। অনুবিভাগ সৃষ্টি করতে হবে। এ কারণে আলাদা পিএসসিও হতে পারে। যতদিন সেটা না হচ্ছে ততদিন একটা পৃথক অনুবিভাগ করে দেখা যায় ফলাফল কী দাঁড়ায়।

প্রশ্ন : পিএসসি প্রার্থী বাছাই করার পরও সংশ্লিষ্টদের নিয়োগ দিতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে। বিশেষ করে পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই-বাছাইয়ে এত সময় লাগে কেন?

মোহাম্মদ সাদিক : এখন এটা কমে এসেছে। জনপ্রশাসন এখন সময় নির্ধারণ করে দেয়। আগে সবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষ হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ফলাফল দিত। এখন সেখানেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।

প্রশ্ন : পিএসসি প্রার্থী বাছাই করে দেওয়ার পরও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অনেক প্রার্থীকে নিয়োগ দেয় না। বঞ্চিতরা অভিযোগ করে থাকেন তাদের রাজনৈতিক বিবেচনায় বাদ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে কি পিএসসির কোনো করণীয় আছে?

মোহাম্মদ সাদিক : আমরা শুধু বাছাই করার বা সুপারিশ করার অধিকার রাখি। নিয়োগ দেয় রাষ্ট্রপতির পক্ষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতি পিএসসির যেকোনো বাছাই খারিজ করে দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন। এখানে পিএসসির বলার কিছু নেই।

প্রশ্ন : আপনি পিএসসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্বাচন কমিশনের সচিব ছিলেন। দুটি কাজেই দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ রয়েছে। এর মধ্যে কোন কাজটা বেশি কঠিন?

মোহাম্মদ সাদিক : দুটিই কঠিন। একটিতে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়। অন্যটিতে জনসেবক বাছাই করা হয়। দুটিই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। লাখো বেকারের দৃষ্টি থাকে পিএসসির ওপর। নির্বাচন কমিশনের ওপরও নজর থাকে অনেক মানুষের। জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা হয় পাঁচ বছরের জন্য। আর জনসেবক নির্বাচন করা হয় ৩০ থেকে ৪০ বছরের জন্য।

প্রশ্ন : অবসর কাটাবেন কীভাবে?

মোহাম্মদ সাদিক : ছুটি, ছুটি আর ছুটি। এখন আমার ছুটি। লেখালেখি আর গবেষণা করে বাকি সময়টা কাটাতে চাই।
 

সৌজন্যে: দেশ রূপান্তর।

এই বিভাগের আরো সংবাদ