আজকের শিরোনাম :

‘যাঁরা দায়িত্বে আছেন তাঁরা কেউ কথা শোনেন না’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২২, ১০:৪২

নিরাপদ সড়কের দাবিতে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সজিব ঘোষ। 

প্রশ্ন : নিরাপদ সড়কের দাবিতে আপনি দীর্ঘদিন আন্দোলন করে যাচ্ছেন। আরো কিছু সংগঠনও একই দাবিতে আন্দোলন করছে। নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠায় আপনারা কি ভূমিকা রাখতে পারছেন?

ইলিয়াস কাঞ্চন : আমরা সামাজিক সংগঠন।

আমাদের বেশি কিছু করার সুযোগ কম। আমরা শুধু মানুষকে সচেতন করতে পারি। মূল কাজ করবে সরকার। আমরা সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি, পরামর্শ তুলে ধরতে পারি; কিন্তু সরকার তা বাস্তবায়ন করে না। রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে নিরাপদ সড়ক গড়া সম্ভব। সড়ক নিরাপদ করার জন্য সরকারের দৃঢ় মনোভাব দরকার, যা নেই।

প্রশ্ন : আপনার সংগঠন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। আপনারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন; কিন্তু সড়ক নিরাপদ হচ্ছে না কেন? 

ইলিয়াস কাঞ্চন : কারণ যাঁরা দায়িত্বে আছেন তাঁরা কেউ কথা শোনেন না। আইনের বাস্তবায়ন নেই। আমাদের গণপরিবহনের মান ভালো নয়। সড়কে ব্যবস্থাপনা ঠিক নেই। মানুষ সচেতন নয়। সড়ক যারা ব্যবহার করে তাদেরও নিরাপত্তার বিষয়টি জানতে হবে, সেগুলো মানতে হবে। চালক, যাত্রী, পথচারী—সবাইকেই সড়কে নিয়ম মানতে হবে। চালকরা বেপরোয়া। এসব ঠিক করতে হবে। নিয়ম না মানলে আইনের প্রয়োগ করতে হবে।

প্রশ্ন : আপনি আইনের কথা বলছিলেন। আইন কার্যকর করতে বিধিমালা গুরুত্বপূর্ণ। সেই বিধিমালা এখন চূড়ান্ত। খুব দ্রুতই হয়তো প্রকাশ করা হবে। বিধিমালার পর আইন কতটা কার্যকর হবে বলে মনে করেন?

ইলিয়াস কাঞ্চন : আমাদের দাবি ছিল, বিধিমালা চূড়ান্ত করার আগে আমাদের দেখাতে হবে। জনসাধারণের মতামত নিতে হবে। আইন করার সময় ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে যেভাবে মানুষের মতামত যাচাই করার চেষ্টা করা হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই বিধিমালার ক্ষেত্রেও মতামত যাচাইয়ের দরকার ছিল। তা না হলে তাঁরা যদি নিজেরা নিজেরাই এটা চূড়ান্ত করে ফেলেন, তখন তো আমাদের জন্য সমস্যা। আমরা তো জানিই না, বিধিমালার মধ্যে কী আছে? এটা প্রকাশ হওয়ার পর দেখে মন্তব্য করতে পারব। যেহেতু দেখি নাই সেহেতু কী আছে, ব্যাঙ আছে না বিড়াল আছে—না দেখে বলতে পারব না।

প্রশ্ন : সড়ক পরিবহন নিয়ে সরকারের যে দপ্তরগুলো কাজ করে, নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠায় সেসব প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা কেমন বলে মনে করেন?

ইলিয়াস কাঞ্চন : প্রথম কথা হলো, এসব প্রতিষ্ঠানের দক্ষতার অভাব আছে। আবার দায়িত্ব অবহেলারও নজির আছে। তাদের যেভাবে দায়িত্ব পালন করার কথা, তারা তা করছে না। এ জন্য তাদের জবাবদিহিও করতে হচ্ছে না। যার কারণে তারা দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না।

প্রশ্ন : চালকদের বেপরোয়ার কথা বলেছেন, এর পেছনে দায় কার?

ইলিয়াস কাঞ্চন : মালিকদের দায় আছে। মালিকরা দৈনিক জমার টাকা বেঁধে দেন চালকদের। যে করেই হোক চালকরা সেই টাকার চেয়ে বেশি ভাড়া তুলে আনার চেষ্টা করেন। তাই তাঁরা সড়কে যাত্রী পেতে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নামেন। আর মালিকরা রাজনীতি করেন বলে সড়কে নানাভাবে ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ পান।

প্রশ্ন : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ইলিয়াস কাঞ্চন : আপনাকেও ধন্যবাদ।

 

সৌজন্যে : দৈনিক কালের কণ্ঠ

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ