আজকের শিরোনাম :

‘আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে হলে চায়ের গুণগত মান বাড়াতে হবে’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২১, ১২:৩৭

মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম, এনডিসি, পিএসসি; বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান। দেশের চা খাতের সমস্যা, সমাধান, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন একটি জাতীয় দৈনিকের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন রাশেদ এইচ চৌধুরী।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের চা খাত একসময় স্বর্ণালী সময় পার করে এসেছে। মাঝে কিছু সমস্যা ও সংকট পেরিয়ে বর্তমানে দেশের বাগানগুলো ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্বের প্রথম সারির চা উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হতে বাংলাদেশের সুযোগ রয়েছে কি?

মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম: দেশে বর্তমানে ১৬৭টি চা বাগান রয়েছে। এসব বাগানে চা আবাদ সম্প্রসারণে বাধ্যতামূলক ২.৫% ভূমিতে চা সম্প্রসারণ, ইনফিলিং, পুনরাবাদ বৃদ্ধির কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে বৃহদায়তনের চা বাগান প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রয়োজনীয় বৃহৎ আকৃতির জমির প্রাপ্যতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। ফলে চায়ের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে বৃহৎ বাগানের পাশাপাশি ক্ষুদ্রায়তন চা আবাদ সম্প্রসারণে দুই দশক ধরে নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে সরকার। দেশের উত্তরাঞ্চল ও পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ক্ষুদ্রায়তন চা আবাদ সম্প্রসারণে তিনটি পৃথক প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। উত্তরাঞ্চল ও পার্বত্য অঞ্চলে প্রায় ১০ হাজার একর জমি এরই মধ্যে ক্ষুদ্র চা আবাদের আওতায় এসেছে এবং চা আবাদ বৃদ্ধিতে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া শেরপুর ও ময়মনসিংহ জেলায় ক্ষুদ্র চা চাষ শুরু হয়েছে। ২০২৫ সাল নাগাদ ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনসহ ১১টি কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৭ সালে উন্নয়নের পথনকশা: বাংলাদেশ চা শিল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সে লক্ষ্য অর্জনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন, টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, টি প্লান্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বটলিফ টি ফ্যাক্টরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নসহ চা-সংশ্লিষ্টদের নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ চা বোর্ড। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১০ বছরে দেশে চায়ের উৎপাদন প্রায় ৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৮ম চা উৎপাদনকারী দেশ।

প্রশ্ন: চা দিবস উদযাপন এ দেশের চা খাতের বিকাশে কতটুকু ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন?

মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪ জুন ১৯৫৭ সাল থেকে ২৩ অক্টোবর ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত প্রথম বাঙালি হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেন। জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনার্থে এবং চা শিল্পে তার আবদানকে অবিস্মরণীয় করে রাখার জন্য চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তার যোগদানের তারিখ ৪ জুনকে ‘জাতীয় চা দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে। ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, চা শিল্পের প্রসার’ স্লোগান নিয়ে এ বছর ৪ জুন প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপন করা হয়েছে। চা দিবসে বিটিআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত উন্নত জাতের ক্লোন বিটি-২২ ও বিটি-২৩ অবমুক্ত করা হয়, যা চা শিল্পের সম্প্রসারণে সহায়ক হবে। এ বছর চা দিবসের নানা আয়োজন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও স্বীকৃত ও প্রশংসিত হয়েছে। প্রতি বছর চা দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে র্যালি, সেমিনার, চা প্রদর্শনী এবং বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে দেশে চা আবাদ বৃদ্ধি, ভোক্তা পর্যায়ে চায়ের পরিচিতি বৃদ্ধি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চা বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। এছাড়া চা শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা নির্ণয় এবং তা সমাধানে আরো কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ সম্ভব হবে, যা দেশের অর্থনীতিতে চা শিল্পের অবদান আরো বৃদ্ধি করবে।  

প্রশ্ন: দেশের উত্তরাঞ্চলের ক্ষুদ্রায়তন চা চাষের বিকাশ ঘটছে। তবে উৎপাদনে দ্রুত প্রসার হলেও এখন পর্যন্ত গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদনে পিছিয়ে রয়েছে উত্তরাঞ্চল। আপনার অভিমত কী?

মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম: উত্তরাঞ্চলে ক্ষুদ্র পর্যায়ে চা চাষের পথিকৃৎ জেলা পঞ্চগড়। ২০২০ সালে উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট জেলায় চা বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে রেকর্ড পরিমাণ ১০.৩০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়, যা জাতীয় উৎপাদনের ১০% শতাংশের বেশি। উত্তরাঞ্চলের চায়ের গুণগত মান উন্নয়নে চা বোর্ড চাষীদের উন্নত মানের চারা বিতরণ, ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুলের ব্যানারে চা চাষী ও বটলিফ চা কারখানার ম্যানেজারদের চা আবাদ ও প্রক্রিয়াকরণে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান, নিয়মিত বাগান পরিদর্শন ও কারখানা মনিটরিং, প্লাকিং ও প্রুনিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ, টি টেস্টিং সেশন পরিচালনাসহ নানা উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া দুটি পাতা একটি কুঁড়ি মোবাইল অ্যাপ এবং ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চাষীদের সাথে চা-বিষয়ক জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে যা মানসম্মত চা উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের চায়ের উৎপাদন বাড়াতে কী কী প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম: দেশে চা বাগানের জন্য বৃহৎ আকারে জমির প্রাপ্যতা ও জমির উর্বরতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তবে ক্ষুদ্রায়তন চা আবাদের মাধ্যমে চা উৎপাদন বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দক্ষ শ্রমিকস্বল্পতা এবং বাগান ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ভবিষ্যৎ চা শিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া চা উৎপাদন ব্যয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে হলে চায়ের গুণগত মান বৃদ্ধির পাশাপাশি একরপ্রতি উৎপাদন ব্যয় হ্রাসকরণে বাগানগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রশ্ন: করোনাকালে দেশের চা বাগানগুলো বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়েছে। এ সংকট উত্তরণে চা বোর্ড ও বাগান মালিকদের গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে বলুন।

মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম: করোনা পরিস্থিতিতে চা উৎপাদন ও চা শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের সব চা বাগান চালু রাখা হয়। বাগান মালিক ও চা শিল্প-সংশ্লিষ্টদের করোনাকালীন আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ প্রদানের জন্য চা শিল্পকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৭টি চা বাগান বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এ সহায়তা পেয়েছে এবং অন্যান্য বাগানের সহায়তার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া উৎপাদনের পাশাপাশি চা বিপণন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলাম কেন্দ্র চালু রাখা হয়েছে। এছাড়া গত মার্চে পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইন চা নিলাম চালু করা হয়েছে। এতে চা বিপণন প্রক্রিয়া আরো গতিশীলতা পেয়েছে। ফলে কভিড পরিস্থিতিতেও চা উৎপাদন ও বিপণন কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, চলমান করোনা পরিস্থিতিতেও চা শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরি নিয়মিতভাবে প্রদান করা হচ্ছে এবং তাদের জীবনযাত্রাও স্বাভাবিক রয়েছে।

প্রশ্ন: দেশের চায়ের দুটি নিলাম বাজার রয়েছে। শ্রীমঙ্গলের নতুন নিলাম কেন্দ্রটির মাধ্যমে চা বিপণন কতটুকু এগিয়েছে?

মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম: দেশে বর্তমানে দুটি চা নিলাম কেন্দ্র রয়েছে। একটি চট্টগ্রামে, অন্যটি চায়ের রাজধানী হিসেবে খ্যাত শ্রীমঙ্গলে। ২০২০-২১ নিলামবর্ষে শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রে ২০টি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে প্রায় ১০ লাখ কেজি চা প্রতি কেজি ১৭২.২৬ টাকা দরে বিক্রি হয়। চলতি ২০২১-২২ নিলামবর্ষে ২২টি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে শ্রীমঙ্গলে চারটি নিলামে প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার কেজি চা প্রতি কেজি ১৯৭.৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নতুন এ নিলাম কেন্দ্রটিকে আরো গতিশীল করতে তিনটি ব্রোকার হাউজ ও পাঁচটি বন্ডেড ওয়্যারহাউজকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া এ নিলাম কেন্দ্রকে ঘিরে চা ব্যবসা ও আনুষঙ্গিক সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে।

প্রশ্ন: বিশ্ববাজারে বাংলাদেশী চায়ের বাজার প্রতিষ্ঠিত করতে কী করতে হবে। ভালো মানের চা উৎপাদনে বাংলাদেশ গত কয়েক দশকে কী পরিমাণ এগিয়েছে?

মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম: চা বাংলাদেশের একটি রফতানিমুখী শিল্প। আগে দেশীয় বাজারে চায়ের চাহিদা কম থাকায় দেশে উৎপাদিত বেশির ভাগ চা রফতানি করা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে আর্থসামাজিক উন্নয়নের কারণে দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার সাথে সাথে চায়ের অভ্যন্তরীণ ভোগও বাড়তে থাকে। ফলে চায়ের উৎপাদন আগের তুলনায় বহুগুণ বাড়লেও রফতানি কমতে থাকে। বর্তমানে কভিড-১৯ মহামারীর কারণে মানুষের স্বাভাবিক কার্যক্রম কমে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ ভোগ সাময়িক কমলেও রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ২০২০ সালে ২.১৭ মিলিয়ন কেজি চা রফতানি হয়েছে। ২০২৫ সাল নাগাদ সাড়ে ১০ মিলিয়ন কেজি চা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের দূতাবাসে কর্মরত কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের চা রফতানিতে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদানুযায়ী আকর্ষণীয় ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মোড়কে চা বাজারজাত এবং চাকে বহুমুখীকরণের জন্য চা কোম্পানিগুলোকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। রফতানিকারকদের সাথে নিয়ে আন্তর্জাতিক মেলাগুলোতে অংশগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ চা বোর্ড থেকে চা রফতানিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সর্বত্তোম ও দ্রুততম সেবা প্রদান করা হচ্ছে। উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হলে উৎপাদনকারীকে অবশ্যই ভোক্তার চাহিদাকে প্রাধান্য দিতে হবে। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের সাথে সাথে মানুষের রুচি ও চাহিদার পরিবর্তন ঘটেছে। ভোক্তাদের চাহিদার বৈচিত্র্যের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট ভ্যালু অ্যাডেড চা তৈরিতে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ভোক্তার চাহিদানুযায়ী নিলামে ক্রেতারা ভালো লিকার ও উজ্জ্বল রঙের চা ভালো দামে ক্রয় করছে। ফলে চা বাগান মালিকরা আগের তুলনায় ভালো মানের চা উৎপাদনে উৎসাহিত হচ্ছেন। ভোক্তার চাহিদানুযায়ী হোয়োইট টি, ইয়েলো টি, ওলং টি, গ্রিন টি, অর্থোডক্স টিসহ বিভিন্ন ভ্যালু অ্যাডেড চা তৈরিতে বাগানগুলো বর্তমানে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

প্রশ্ন: চা খাতকে এগিয়ে নিতে সার্বিকভাবে কোন কোন উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এ দেশের চা খাত নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম: চা শিল্পের টেকসই উন্নয়নে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক উন্নয়নের পথনকশা: বাংলাদেশ চা শিল্প অনুমোদিত হয়। পথনকশায় স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে ১১টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে স্বল্পমেয়াদি (২০১৬-২০) কর্মপরিকল্পনা শতভাগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পথনকশায় ২০২৫ সালের মধ্যে বৃহৎ ও ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাগানসংশ্লিষ্টদের সাথে নিয়ে চা বোর্ড কাজ করছে। এছাড়া বাগানগুলোকে একরপ্রতি গড় উৎপাদন বৃদ্ধি করে উৎপাদন খরচ হ্রাস করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। 

চা শিল্পে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধিতে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ, চা বহুমুখীকরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভ্যালু অ্যাডেড টি বিপণনে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি ও চায়ের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা লক্ষ্যে শতভাগ অনলাইন চা অকশন সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রশ্ন: চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে আপনারা কী করেছেন?

মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম: নির্ধারিত মজুরির বাইরেও বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বিনামূল্যে বাসস্থান, চিকিৎসা সুবিধা, রেশন সুবিধা, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, স্যানিটারি ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা করে। শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে বাগানগুলোর কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করে চা বোর্ড। চা শ্রমিক কল্যাণ তহবিল এবং শিক্ষা ট্রাস্টের মাধ্যমে বাগানের শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি, খেলাধুলা সামগ্রী বিতরণ, স্কুল ভবন নির্মাণ, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, কন্যা বিবাহ অনুদান ইত্যাদি দেয়া হয়। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় তাদের নানা ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

 

সৌজন্যে: দৈনিক বনিক বার্তা

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ