৭০ বছর বয়সে যমজ সন্তান জন্ম দিলেন সাফিনা!

  জি নিউজ

১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৫৯ | অনলাইন সংস্করণ

বয়স সংখ্যা মাত্র! কথাটা সময়ে-সময়ে অতি কঠিন মনে হয়, বিশেষত এই জটিল সময়ে। কথাটা স্বীকার করে নিতে সমস্যা হয়। কিন্তু কখনো কখনো এমন ঘটনাও ঘটে যে তখন মন যেন অতি সহজেই মেনে নেয় যে, হ্যাঁ, বয়স সত্যিই সংখ্যামাত্র! না হলে কোনো নারী ৭০ বছর বয়সে মা হতে পারেন! পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক না হলেও তিনি আফ্রিকার সবচেয়ে বয়স্ক মা! নিজের জীবেন এই প্রায়-অলৌকিক ঘটনা ঘটানো নারীর নাম সাফিনা নামুকওয়ায়া।

এই সাফিনা ৭০ বছর বয়সে মা হলেন। একেবারে যমজ সন্তানের মা হয়েছেন তিনি- এক পুত্রসন্তান ও এক কন্যাসন্তান। চিত্তাকর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে আফ্রিকার উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায়। এই ঘটনায় সদ্য মাতৃত্বে উপনীত স্বয়ং সাফিনাই হতবাক। তিনি নিজেই বলছেন, সত্যিই এ এক 'অলৌকিক ঘটনা'!

সাফিনার জীবনে কিভাবে ঘটল এই 'অলৌকিক ঘটনা'?

উগান্ডার 'উইমেন হসপিটাল ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ফার্টিলিটি সেন্টারে'র এক বিশেষজ্ঞ সাফিনার কথা বলতে গিয়ে জানান, ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ পদ্ধতিতে সাফিনা এক মহিলাদাতার ডিম্বাণু ও তাঁর পুরুষসঙ্গীর শুক্রাণু ব্যবহার করেছেন। যথাসময়ে এবং ঠিকঠাক ভাবে পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া এগিয়েছে। এবং শিশু দুটি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই, মাত্র ৩১ সপ্তাহের মাথায়, জন্মগ্রহণ করেছে। সেজন্য তাদের ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তারা স্থিতিশীল।

তবে অন্যের থেকে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু গ্রহণ করে মা হয়েছেন বলে সাফিনার কৃতিত্ব একটুকু কমে না। ৭০ বছর বয়সে মা হতে গেলে মনের শক্তি লাগে, শরীরের শক্তিও লাগে। এ বয়সে শরীরে যেমন জরা আসতে শুরু করে, তেমন নানা রকম অবসাদ গ্রাস করতে থাকে মনকেও। ওই সব আক্রমণকে সরিয়ে নিজের ভিতরে নতুন প্রাণের জন্মসম্ভব করা চাট্টিখানি কথা নয়‌! সেই কাজটিই সফলভাবে করতে পেরেছেন সাফিনা। তার পক্ষে দুটি ভ্রুণ গর্ভে ধারণ করা সহজসাধ্য ছিল না।

কিন্তু এত লড়াইয়ের মধ্যে নিজেকে কেন ঠেলে দিলেন সত্তরের সাফিনা?

কেউ যেন কখনও তাকে 'নিঃসন্তান' বলে কটাক্ষ করতে না পারে! না, সেটাই সব নয়। এর চেয়েও বড় কথা আছে। সেটা তার নিজের কাছে নিজের জবাবদিহি। তা হলো একাকিত্ব। এ বড় কঠিন বস্তু। এর কবলে পড়তে চাননি সাফিনা। জীবন থেকে এই একাকিত্বের অন্ধকার সরাতেই সাফিনা বৃদ্ধ বয়সে আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হওয়ার আলো-আস্বাদ গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন।

তবে অন্য লড়াইও ছিল। সাফিনা যমজ সন্তান গর্ভে ধারণ করেছেন জানতে পেরে তার সঙ্গী তাকে ছেড়ে চলে যান। ভেঙে পড়েননি সাফিনা। হাসিমুখে নবজাতকের প্রতীক্ষা করেছেন। একাকিত্ব কাটানোর লড়াইটা লড়েছেন একাকিত্ব দিয়েই।

এবিএন/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ