আজকের শিরোনাম :

সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্মবিদ্বেষের শিকার অক্সফোর্ড শিক্ষার্থী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:৪৮ | আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:৫১

বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রশ্মি সামন্তের। এবার ধর্মবিদ্বেষের শিকার তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘বর্ণবিদ্বেষী’ মন্তব্যের জেরে নির্বাচিত হওয়ার পরেই পদত্যাগ করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রথম ভারতীয় মহিলা প্রেসিডেন্ট রশ্মি। তাঁর মায়ের পুরনো একটি ফেসবুক পোস্টের জেরে আবার হেনস্তার মুখে পড়তে হল ছাত্রীকে।

কয়েক বছর আগে ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন রশ্মির মা। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘জয় শ্রীরাম’। আর রশ্মিকে নিশানা করতে এই পোস্টকেই ঢাল করেছেন একদল ব্যক্তি। তাঁরা রশ্মিকে ‘সনাতনী’ প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট আখ্যা দিয়ে বলেছেন, উনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যতের জন্য বিপদ। তবে অনেকেই আবার এ বিষয়ে রশ্মিকে সমর্থন করেছেন। তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের ঘৃণা ছড়ানোর ঘটনায় তদন্ত দাবি করেছেন। এ প্রসঙ্গে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী তথা অল্পেশ প্যাটেল ওবিই ব্রিটেনের এক ম্যাগাজিনে লিখেছেন, ‘অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট মানে ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী, সেই দিন এখন অতীত। ছাত্র হিসেবে ২০ বছর আগে বিতর্কের যে মান দেখেছিলাম, এখন তার ধারে কাছেও নেই।’ এখানেও থেমে থাকেননি তিনি। অল্পেশ আরও বলেন, ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট হয়ে কেউ যদি গণহত্যা নিয়ে লেখালিখি করেন, তাহলে তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে? এমনটা কাম্য নয়। আমি উল্টে সমালোচকদের সমালোচনা করব।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরনো মন্তব্যের জন্য রশ্মির গায়ে ‘বর্ণবিদ্বেষী’ তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছে। ‘নির্বোধ’ও আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০১৭ সালে বার্লিনে হলোকাস্ট স্মারক ভ্রমণের সময় একটি পোস্ট এবং ইনস্টাগ্রামে নিজের আরেকটি ছবিতে লিখেছিলেন ‘চিং চ্যাং’। তাতে ক্ষুব্ধ হন চীনা পড়ুয়ারা। পাশাপাশি, মহিলা ও রূপান্তরকামীদের নিয়েও ছাত্র ভোটে আলাদাভাবে রশ্মি প্রচার করেছিলেন। যার জেরে তাঁকে ‘হোমোফোবিক’ আখ্যা দিয়ে অক্সফোর্ডের এলজিবিটিকিউ সংগঠনও তাঁর পদত্যাগ দাবি করে। তারপরেই বাধ্য হয়ে ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেন রশ্মি।

বিতর্কের প্রেক্ষিতে চলতি সপ্তাহে পড়ুয়াদের সংবাদপত্র ‘চেরওয়েল’-এ একটি খোলাচিঠি লেখেন রশ্মি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে আমি অত্যন্ত ব্যথিত। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পড়ুয়ার কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি। পড়ুয়াদের আস্থা হারিয়েছি ভাবতেই আমার কষ্ট হচ্ছে। আমার পদক্ষেপ বা মন্তব্যে যে সমস্ত পড়ুয়া দুঃখ পেয়েছেন, তাঁদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। বিশ্বাস অর্জনের জন্য আমাকে আরও একবার সুযোগ দেওয়া হোক।’ তাঁর পদত্যাগের পর অক্সফোর্ড ছাত্র সংসদ জানিয়েছে, আমরা বৈষম্যের ক্ষেত্রে আমরা নো-টলারেন্স নীতিতে চলি। বর্ণবিদ্বেষ, ট্রান্সফোবিয়া, অ্যান্টিসেমিটিজম আমাদের সংগঠনে স্থান পায় না। প্রসঙ্গত, বর্তমানে রশ্মি কর্ণাটকের উদুপিতে ফিরে গিয়েছেন।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ