এন্ডোস্কপি করাতে গিয়ে মৃত্যু, ফের অভিযোগ ল্যাবএইডের বিরুদ্ধে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৪, ১১:৩৮

ফের চিকিৎসায় অবহেলা ও গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে ল্যাবএইড হাসপাতাল ও চিকিৎসক ডা. স্বপ্নীলের বিরুদ্ধে।এবার ভাইয়ের মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দারস্থ হয়েছেন খায়রুল বাশার নামে এক ব্যক্তি।

জানা গেছে, ভাইয়ের মৃত্যুর সাড়ে ৪ মাস পর রোববার (২৪ মার্চ) স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ওই ব্যক্তি। অভিযোগে ‘চিকিৎসায় অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, অবহেলা ও গাফিলতির’ কারণে তার বড় ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন খাইরুল।

লিখিত অভিযোগে খায়রুল বাশার উল্লেখ করেন, তার ভাই ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর ধানমন্ডির ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের কাছে চিকিৎসা নিতে যান। ডা. স্বপ্নীল তাকে দেখে ব্যবস্থাপত্র দেন এবং অ্যান্ডোস্কপি, কোলনস্কপিসহ কয়েকটি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। চারদিন পর ৯ নভেম্বর সকালে পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালে যান। সেখানে তাকে জানানো হয় বিকাল ৪টায় অ্যান্ডোস্কপি করা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সকালে শুরু করা হলেও পরীক্ষাটি করা হয় রাত ৮টায়।

তিনি লিখেছেন, ডা. স্বপ্নীল এসে রোগীর শারীরিক অবস্থার কোনো পর্যবেক্ষণ না করে, কোনো ধরনের প্রি-ইভাল্যুয়েশন ছাড়াই অ্যানেস্থিশিয়া প্রয়োগের নির্দেশ দেন। এরপর তিনি টেস্ট করানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন। টেস্ট করানোর এক পর্যায়ে আমার ভাইকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। কারণ জিজ্ঞেস করলে বলা ভাইয়ের কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। তাই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হচ্ছে। সেদিন রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে হাসপাতাল থেকে আমাদের জানানো হয় আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।

তিনি আরও লিখেছেন, তার ভাই সুস্থ্য অবস্থায় ওই পরীক্ষাটি করাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু সময়ের ব্যবধানে লাশ হয়ে ফিরেছেন। এ ঘটনা তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তি দাবি করেন মারা যাওয়া আফসার আহমেদের ভাই।

অভিযোগের বিষয়ে খাইরুল বাসার গণমাধ্যমকে বলেন, ভেবেছিলাম অভিযোগ করব না কিন্তু ডা. স্বপ্নীলের হাতে আরেকজন রোগী মারা গেল। এ কারণে আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টিও সামনে আনা উচিত। নইলে ওই চিকিৎসকের সম্পর্কে মানুষ জানতে পারবে না।

অভিযোগের বিষয়ে কিছু বলতে চাননি ডা. স্বপ্নীল।

এ বিষয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম বলেন, এই কাজগুলো ওই পেশেন্টের (রাহিব রেজা) লোকজন করাচ্ছে। পুরোনো রোগী খুঁজে বের করে। যারা মারা যায় তাদের স্বজনদের ইনসিস্ট করে আমাদের বিরুদ্ধে কমপ্লেইন করার জন্য, যেন তাদের পাল্লাটা ভারী হয়। তাদের ভিত্তিটাকে মজবুত করার জন্য পুরোনো রোগী খুঁজে বের করে। সবাইকে অ্যাপ্রোচ করে, দুয়েকজন হয়তো তাদের কথায় রাজি হয়ে যায়।

খাইরুলের অভিযোগের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল গণমাধ্যমকে বলেন, একটি অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। আমি বিষয়টি তদন্ত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ডা. স্বপ্নীলের তত্ত্বাবধানে ধানমন্ডির ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে এন্ডোস্কপি করাতে এসে মারা যান রাহিব রেজা নামে এক যুবক। এরপর রাহিবের পরিবারের তিন সদস্য চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। তাদের অভিযোগ, এন্ডোস্কপি করার পরপরই অ্যানেস্থেসিয়ার কারণে রাহিবের ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয়। পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই ঘটনার বিশদ অনুসন্ধান করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে স্বাধীন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ