আজকের শিরোনাম :

বাংলাদেশে যেসব দূষণ গর্ভধারণকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৩, ১৪:৪২

সম্প্রতি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় জনস্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থা আইসিডিডিআরবির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে ঢাকা শহরে অপরিণত শিশু প্রসব এবং কম ওজন নিয়ে শিশু জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের বায়ুমান যাচাই বিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘এয়ার ভিজ্যুয়াল’-এর বায়ুমান সূচক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী, ঢাকা সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম তিনটির মধ্যে ওঠানামা করে।

বায়ুদূষণের পাশাপাশি পরিবেশে এমন আরও নানা ধরনের দূষণ গর্ভাবস্থাকে আরও জটিলতায় ফেলে দিয়েছে।

টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটির করা এক গবেষণা বলছে, গর্ভাবস্থায় পরিবেশ দূষণের সংস্পর্শে আসার ফলে গর্ভকালীন শিশুর ওপর অনেক বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে যা একটি শিশুর প্রাপ্তবয়স্ক পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বাংলাদেশের পরিবেশে যেসব দূষণ প্রকট রূপ নিয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি ব্যাখ্যা করা হলো।

সিসা ও অন্যান্য ভারী ধাতু
গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সিসা বা লেড, ক্যাডমিয়াম, নিকেল, মার্কারি ইত্যাদির মতো ভারী ধাতু অনেকটা নীরব ঘাতকের মতো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সিসাকে জনস্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

গর্ভাবস্থায় কেউ এ ধরনের ভারী ধাতুর সংস্পর্শে এলে শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং তার দৃষ্টি, শ্রবণ, এবং মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা থেকে শুরু করে আচরণগত সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।

অথচ দৈনন্দিন নানা কাজে সিসাসহ অন্যান্য ভারী ধাতুর সংস্পর্শে আসতে হয়। বিশেষ করে খাদ্য চক্রে ঢুকে পড়েছে ক্ষতিকর এসব ধাতু।

বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি রসায়ন বিভাগের স্থানীয় পর্যায়ের এক গবেষণায়, বেগুনের মধ্যে সহনীয় মাত্রার দ্বিগুণের বেশি সিসা পাওয়া গিয়েছে।

এ ছাড়া ১০ শতাংশ বেগুনে ক্যাডমিয়াম সহনীয় মাত্রার চেয়ে চার গুণ বেশি পাওয়া গেছে।

ওই বেগুন যেখানে উৎপাদিত হয়েছে, সেখানকার মাটিতে সিসা, ক্যাডমিয়াম, তামা ও দস্তার মতো ভারী ধাতু স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় ছিল বলে গবেষণায় উঠে আসে।

এসব সবজি পানিতে অনেকবার ধুলে কিংবা উচ্চতাপে রান্না করলেও ভারী ধাতু থেকে যায় এবং খাদ্যের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে, যা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে।

ফলন বাড়াতে মাটিতে রাসায়নিক মিশ্রিত সারের ব্যবহার এবং কীটনাশক প্রয়োগে এসব ভারী ধাতুর মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে বলে অভিযোগ পরিবেশবাদীদের, যা গর্ভবতী মা ও শিশুসহ যেকোনো মানুষের হার্ট, কিডনি, লিভার, স্নায়ু, ত্বককে আক্রান্ত করতে পারে।

আবার খাবারে মসলা হিসেবে যে হলুদ গুড়া ব্যবহার হয় এর মধ্যেও বেশ কয়েকবার সিসা সনাক্ত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা হলুদ রং আনতে সস্তা মানের সিসা মিশ্রিত ক্ষতিকর গুড়া মেশায়।

সিসা দূষিত দেশের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। দেশটির প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ শিশুর (মোট শিশুর আনুমানিক ৬০ শতাংশ) রক্তে উচ্চ মাত্রার সিসা পাওয়া গেছে।

আন্তর্জাতিক শিশু সংস্থা ইউনিসেফের উদ্যোগে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআর,বি) সম্প্রতি পরিচালিত গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

এ ছাড়া অবৈধভাবে ব্যবহার করা পুরাতন সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং কারখানা, আবাসস্থলে সিসাযুক্ত রং, খেলনায় সিসাযুক্ত রং এবং অ্যালুমিনিয়ামের রান্নার বাসন চকচকে করতে সিসার ব্যবহার - এসবই বাংলাদেশে মানুষের দেহে সিসা ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম প্রধান উৎস। আবার ননস্টিক পাত্রে ব্যবহৃত টেফলনও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।

ইন্সটিটিউট অব হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের (আইএইচএমই) ধারণামতে, সিসা দূষণের কারণে বিশ্বের প্রায় ১০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু ঘটেছে।

বায়ুদূষণ
ঢাকায় গর্ভবতী মায়েদের ওপর আইসিডিডিআরবির গবেষণায় শিশু ও মায়েদের ওপর বায়ুদূষণের বিরূপ প্রভাবের চিত্র উঠে এসেছে।

ঢাকায় সম্প্রতি ভূমিষ্ঠ ৩ হাজার ২০৬টি নবজাতককে নিয়ে করা ওই গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় বেশি বায়ুদূষণের শিকার মায়েদের মধ্যে কম ওজনের শিশু জন্ম দেওয়ার হার বেশি। সেই সঙ্গে গর্ভে পূর্ণ সময় থাকার আগেই অপরিণত অবস্থায় শিশু জন্মদানের ঝুঁকিও তাঁদের মধ্যে বেশি দেখা গেেেছ।

জন্মের সময় নবজাতকের ওজন যদি ২৫০০ গ্রামের কম হয়, তাহলে তাকে ‘লো বার্থ ওয়েট’ বা কম জন্ম–ওজন বলা হয়।

বাতাসে উড়তে থাকা ধূলিকণা এবং যানবাহন ও কারখানার ধোঁয়া এবং ইটভাটা ঢাকায় বায়ু দূষণের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, সবচেয়ে কম দূষণের শিকার মায়েদের মধ্যে কম ওজনের শিশু জন্ম দেওয়ার হার ২০ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার মায়েদের মধ্যে এই হার ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ বেশি দূষণের শিকার মায়েদের মধ্যে কম ওজনের শিশু জন্ম দেওয়ার হার ১৬ পয়েন্ট বেশি।

অন্যদিকে কোনো শিশুর জন্ম মায়ের গর্ভধারণের ২৫৯ দিনের আগে হলে তা অপরিণত বা প্রিম্যাচিউর শিশু হিসেবে বিবেচিত হয়।

গবেষকেরা দেখেছেন, সবচেয়ে কম দূষণের শিকার মায়েরা নয় শতাংশ প্রিম্যাচিউর শিশুর জন্ম দিয়েছেন। বেশি দূষণের শিকার মায়েদের মধ্যে এই হার ১৫ শতাংশ, অর্থাৎ ছয় পয়েন্ট বেশি। দুটি ক্ষেত্রেই পার্থক্য বেশ স্পষ্ট।

গবেষণায় বলা হয়েছে, বায়ুদূষণ বা বাতাসে থাকা অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণার কারণে ভ্রূণের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এখানে ক্ষুদ্র কণার আকার পিএম ২.৫ বা নিচে বোঝানো হয়েছে।

একটি চুলের সঙ্গে তুলনা করলে এসব ধূলিকণার আকার এতটাই ক্ষুদ্র যে এটি একটি চুলের প্রায় ২০ ভাগের এক ভাগের সমান হয়ে থাকে।

এসব ধূলিকণা সহজেই মানুষের চোখ-নাক-মুখ দিয়ে ঢুকে মানবদেহে রক্তের সাথে মিশে যায় এবং ফুসফুস, হার্ট, কিডনি, লিভার আক্রান্ত করে থাকে।

তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রজনন স্বাস্থ্য। বিশেষ করে গর্ভপাত, জন্মগত ত্রুটি, শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে বায়ু দূষণ বড় ধরণের প্রভাব ফেলে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন প্রজনন বিশেষজ্ঞ ডা. রাশিদা বেগম।

শব্দদূষণ
বায়ুদূষণের পর শব্দদূষণেও বিশ্বের শীর্ষ স্থানে রয়েছে ঢাকা। গত বছর জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি ইউএনইপির প্রকাশ করা এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

শব্দদূষণে ঢাকার পরেই রয়েছে ভারতের মুরাদাবাদ ও পাকিস্তানের ইসলামাবাদ শহর। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশেরই আরেক শহর রাজশাহী।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষের জন্য ঘরের ভেতর শব্দের গ্রহণযোগ্য মাত্রা সর্বোচ্চ ৫৫ ডেসিবল। আমরা যে কথা বলি সেগুলো ৪০-৫০ ডেসিবলের মতো।

বাণিজ্যিক এলাকার শব্দের গ্রহণযোগ্য মাত্রা ঠিক করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৭০ ডেসিবল। অথচ ঢাকায় এই মাত্রা ১১৯ ডেসিবল ও রাজশাহীতে ১০৩ ডেসিবল।

যেখানে কিনা ৬০ ডেসিবল শব্দে একজন মানুষ সাময়িকভাবে বধির হয়ে যেতে পারেন এবং ১০০ ডেসিবল শব্দ সম্পূর্ণ বধিরতা সৃষ্টির ঝুঁকি থাকে। এসব শব্দ দূষণের মধ্যে রয়েছে গাড়ির হর্ন, শিল্প কারখানা, মাইক ইত্যাদি। এই শব্দ দূষণ গর্ভধারণে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এই উচ্চমাত্রার শব্দ শরীরে অ্যাড্রেনালিন এবং স্ট্রেস হরমোন, কর্টিসলের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে, মায়ের মানসিক চাপ বাড়ে, ঘুম ও মনোযোগ নষ্ট করে দেয়, রক্তচাপ বাড়ায়, শিশুর বুদ্ধিবৃত্তি বাধাগ্রস্ত করে, খিটখিটে মেজাজ হয়ে যায়, সেই সঙ্গে গর্ভজনিত হাইপারটেনশন বা প্রিঅ্যাক্লেমশিয়াও দেখা দিতে পারে।

এ ছাড়া প্রতিনিয়ত উচ্চ শব্দে থাকার কারণে শিশুর জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে এমনকি শিশুর শ্রবণশক্তি দীর্ঘমেয়াদী নষ্ট হতে পারে।
শহর ও শিল্পাঞ্চলগুলোর ৮০ শতাংশ পয়োবর্জ্য কোনও ধরনের পরিশোধন ছাড়াই নদীর পানিতে ফেলা হচ্ছে।

পানিদূষণ
‘এশিয়ান ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট আউটলুক-২০১৬’ শীর্ষক প্রতিবেদনে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৪৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নদীর পানি সবচেয়ে দূষিত হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়।

ওই প্রতিবেদনে জাতীয় পানি নিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থানকে বিপজ্জনক বা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।

মাঝের এই সময়ে পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে নাকি অবনতি সেটার প্রশ্ন থেকেই যায়। এর সবচেয়ে বড় কারণ দেশটির শহর ও শিল্পাঞ্চলগুলোর ৮০ শতাংশ পয়োবর্জ্য কোনও ধরনের পরিশোধন ছাড়াই নদীর পানিতে ফেলা হচ্ছে। আবার এই পানি শোধন করে খাওয়ার জন্য সরবরাহ করা হচ্ছে।

পানি শোধনের পরও ই-কোলাইসহ আরও নানা দূষিত উপাদানের উপস্থিতি পাওয়া গেেেছ যা গর্ভবতী থেকে শুরু থেকে সব মানুষের জন্য ক্ষতিকর প্রতীয়মান হতে পারে।

তবে গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে আশঙ্কার জায়গা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘পানি দূষিত হলে সেটা সবার আগে পরিপাকতন্ত্রে আঘাত করে। দূষিত পানি খেলে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।’

এসব রোগ একজন গর্ভবতী মায়ের হলে তার জরায়ুর পানি কমে শিশু প্রাণনাশের হুমকি দেখা দিতে পারে, শিশু বিকলাঙ্গ এমনকি ওজন কম নিয়ে জন্মাতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

প্লাস্টিক দূষণ
দৈনন্দিন মানুষের প্লাস্টিক নির্ভরতা বাড়তে থাকায় এর একটি বিরূপ প্রভাব পড়েছে গর্ভধারণের ওপর। বলা হয় বিশ্বে ক্যানসার সৃষ্টিকারী যদি ১০ উপাদানের তালিকা করা হয়, তার মধ্য একটি অবশ্যই প্লাস্টিক হবে।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অফিসারের সাবিহা আক্তার লাকীর প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, প্রতিদিন গ্রহণ করা খাবার, পানি ও বাতাসের মধ্য দিয়ে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। তবে এই প্রথমবারের মতো গর্ভের শিশুদের নাড়িতেও প্লাস্টিকের কণার উপস্থিতি খুঁজে পেয়েছেন একদল গবেষক।

জার্নাল এনভারয়নমেন্ট ইন্টারন্যাশনালে প্রকাশিত ওই গবেষণায় ওই অন্তঃসত্ত্বাদের গর্ভফুলে অন্তত কয়েক ডজন প্লাস্টিক কণা খুঁজে পাওয়া যায়।

তারা বলছেন, এমন সংবেদনশীল প্রত্যঙ্গে প্লাস্টিকের উপস্থিতি হতে পারে শিশুদের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ।

কেননা গর্ভাবস্থায় শিশুদের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গর্ভফুল। এটি গর্ভের শিশুদের শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ ও অপ্রয়োজনীয় উপাদান বের করে দেয়ার কাজ করে। শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতেও ভূমিকা রাখে প্রত্যঙ্গটি।

গবেষকরা বলছেন, ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণায় এমন রাসায়নিক উপাদান থাকতে পারে, যা শিশুর বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশের শহর এলাকায় ১৫ বছরে মাথাপিছু তিনগুণ বেড়েছে প্লাস্টিকের ব্যবহার।

২০০৫ সালে মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ছিল তিন কেজি। কিন্তু ২০২০ সালে সে পরিমাণ তিনগুণ বেড়ে ৯ কেজি হয়েছে। ঢাকা শহরে এই পরিমাণ ২২ কেজি ৫০০ গ্রাম, যা জাতীয় গড়ের চেয়ে অনেক বেশি।

‘প্রোলিফারেশন অব মাইক্রো-প্লাস্টিক ইন কমার্শিয়াল সি সল্টস ফ্রম দ্য ওয়ার্ল্ড লংগেস্ট সি বিচ অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণায় দেশের লবণে প্লাস্টিকের উদ্বেগজনক উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

এ গবেষণায় দেখা যায়, এ লবণের প্রতি কেজিতে প্রায় দুই হাজার ৬৭৬টি মাইক্রো-প্লাস্টিক রয়েছে। সেখানে বলা হয়, দেশের মানুষ যে হারে লবণ গ্রহণ করে, তাতে প্রতি বছর একজন মানুষ গড়ে প্রায় ১৩ হাজার ৮৮টি মাইক্রো-প্লাস্টিক গ্রহণ করে। এছাড়া সামুদ্রিক ছোট মাছের পাকস্থলীতেও প্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

মাইক্রো-প্লাস্টিকের কারণে হজমে প্রতিবন্ধকতা থেকে শুরু করে ক্যানসার, হরমোনের তারতম্য, প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধা, নারী ও পুরুষের বন্ধ্যত্বসহ যকৃৎ, ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা

এবিএন/এসএ/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ