আজকের শিরোনাম :

আলুর খোসার স্বাস্থ্য উপকারিতা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১০:০৭

আলু রান্নার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। রান্নাঘরে আর কোনো সবজি না থাকলেও, আলু থাকবে না, তা কখনো ভাবাই যায় না। তাই হয়তো, আলুকে সবজির রাজাও বলা হয়। তা ছাড়া ভাত, ডাল, মাছ, মাংস কিংবা তরকারি, যে কোনো রান্নায় আলুর যুগলবন্দি, সব কিছুকেই হার মানিয়ে যায়।

পুষ্টিকর সবজিগুলোর মধ্যে অন্যতম আলু। তবে কেবল আলু নয়, আলুর খোসাও কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারি! আলুর খোসা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ফাইবারের উৎস। তাই আলুর খোসা বাদ দিয়ে ফেলে দেওয়ার আগে এর স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলো সম্পর্কে একবার অবশ্যই চিন্তা করে দেখবেন। তা হলে দেখে নেওয়া যাক, আলুর খোসার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে। 

হার্টের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ভালো
আলুর খোসায় প্রভাবশালী ফেনোলিক যৌগ তথা ক্লোরোজেনিক এবং গ্যালিক অ্যাসিড উপস্থিত। এগুলো শক্তিশালী রেডিকাল স্ক্যাভেঞ্জিং বা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ন্যায় কাজ করে। তাই এই যৌগগুলো ফ্রি রেডিকেলের কারণে হওয়া, হার্টের ক্ষতি প্রতিরোধ করে এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সহায়তা করে। 

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক 
আলুর খোসা, হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতেও অত্যন্ত সহায়ক। আলুর খোসা পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের একটি উৎকৃষ্ট উৎস। এই খনিজগুলিই মূলত, শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। 

অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য বর্তমান
আলুর খোসায় শক্তিশালী অ্যান্টি- মাইক্রোবিয়াল যৌগ, তথা টারপেনস এবং ফ্ল্যাভোনয়েড বর্তমান, যা বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক সংক্রমণ, প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া আলুর খোসা ব্যাকটেরিওস্ট্যাটিক প্রকৃতির হওয়ায়, এটি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পেও নিরাপদ বলে ব্যবহার করা হয়। এমনকি এটি প্রাকৃতিক সংরক্ষক হিসেবেও কাজ করে। জগদ্ধাত্রী পুজোয় অবশ্যই করুন এই কাজগুলো, জীবনের সব সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে! 

অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্য বর্তমান
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য ছাড়াও, আলুর খোসায় অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য বর্তমান। যা মূলত আন্ত্রিক ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে, সহায়তা করে। আলুর খোসায় থাকা ক্লোরোজেনিক এবং ক্যাফেইক অ্যাসিড, প্রধান ফেনোলিক যৌগ হিসেবে কাজ করে। যা এই অ্যান্টি-ভাইরাল কার্যকলাপের জন্য দায়ী। 

হাড়ের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ভালো
আলুর খোসা আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, কপার এবং জিঙ্কের একটি উৎকৃষ্ট উৎস, যা হাড়কে শক্তিশালী করে তুলতে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তা ছাড়া শরীরের প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম, হাড়েই উপস্থিত। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে, আলুর খোসার নিয়মিত সেবন, হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে এবং নারীদের মেনোপজের পরে অস্টিওপরোসিস হওয়ার ঝুঁকি কমাতে, সহায়তা করে। 

অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করতে সহায়ক 
আলুর খোসা, আয়রন সমৃদ্ধ হওয়ায়, এটি অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করতেও সহায়তা করে। তা ছাড়া এতে, লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন এবং সরবরাহকে বজায় রাখতে সহায়ক, গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গুলিও উপস্থিত। তাই আলুর খোসার নিয়মিত সেবন, রক্তাল্পতা সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। 

অ্যান্টি-অ্যালার্জি এবং অনাক্রম্যতার বৈশিষ্ট্য বর্তমান
আলুর খোসা মূলত ফ্ল্যাভোনয়েডের একটি প্রাকৃতিক উৎস। এটি এক ধরনের ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহবিরোধী রূপে কাজ করে। এটি সংক্রমণ এবং অ্যালার্জির মতো বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতেও সহায়তা করে। 

ক্ষত নিরাময়ে সহায়ক
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, আলুর খোসা ক্ষত নিরাময় করতেও অত্যন্ত সহায়ক। তাছাড়া, আলুর খোসায় থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের কারণে, এটি ব্যাকটেরিয়ার অতিরিক্ত বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতেও সহায়তা করে। 

ওজন কমাতে সহায়ক 
আলুর খোসা মূলত অত্যন্ত পুষ্টিকর। এটি ভিটামিন বি, সি, পটাসিয়াম এবং ফাইবার সমৃদ্ধ, তবে এতে ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে। তাই এর নিয়মিত সেবন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি, দীর্ঘ সময় পেট ভর্তি রাখতে এবং ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করতেও, সহায়তা করে।
তথ্যসূত্র: বোল্ডস্কাই

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ