আজকের শিরোনাম :

সিডিএলজি'র পক্ষ থেকে আগামী দিনের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের একটি রূপরেখা

  মোশাররফ হোসেন মুসা

০৬ আগস্ট ২০২৪, ১৩:১৯ | অনলাইন সংস্করণ

মোশাররফ হোসেন মুসা
সেন্টার ফর ডেমোক্রেটিক লোকাল গভার্নেন্স( সিডিএলজি)- এর পক্ষ থেকে আগামী দিনের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের একটি রূপরেখা:-------
দেশের ক্রান্তিকাল চলছে। ইতোমধ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে ও সাধারণ জনতার সঙ্গে আইনশৃংখলা বাহিনীর সংঘর্ষে ( ক্ষমতাসীন দলও ছিল) এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক( মতান্তরে চার শতাধিক)  মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। তাদের মধ্যে শিশু, ছাত্র, গৃহবধু, পুলিশ  সহ সাধারণ মানুষ রয়েছে। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সমস্যাটি শাসনের ত্রুটি সংক্রান্ত। সংবিধানে ত্রুটির কারণেই প্রধানমন্ত্রীকেন্দ্রিক শাসন তথা এক ব্যক্তির শাসন পরিচালিত হয়ে আসছে। বিদ্যমান পদ্ধতি বজায় রাখলে আগামীতেও এক ব্যক্তির শাসন আমরা দেখতে পাবো। সেক্ষেত্রে সর্বস্তরে গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রায়নের কথা সিডিএলজি দীর্ঘদিন যাবৎ বলে আসছে।  তার রুপরেখা বহুদিন আগে থেকে বৃহৎ দুটি দল সহ সকল রাজনৈতিক দলের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। সংক্ষেপে গণতান্ত্রিক জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের রূপরেখা তুলে ধরছি।  

১) দুই প্রকারের সরকার ব্যবস্থা  থাকবে, তথা জাতীয় সরকার ও স্থানীয় সরকার। 
২) জাতীয় সরকারের হাতে জাতীয় কাজ, বৈশ্বিক কাজ, জাতীয় নিরাপত্তার কাজ নির্দিষ্ট থাকবে। আর যাবতীয় স্থানীয় কাজ স্থানীয় সরকার একক ভাবে সম্পন্ন করবে। 
৩) স্থানীয় ইউনিটগুলোর সঙ্গে' সরকার' সংযুক্ত করে প্রতিটি স্থানীয় ইউনিটকে প্রজাতান্ত্রিক রূপ দিতে হবে। 
৪) জেলা সরকার হবে স্থানীয় সরকারের সর্বোচ্চ ইউনিট( প্রদেশ চিন্তা ইউটোপিয়। তদস্থলে জেলা সরকার করে বিকেন্দ্রীকরণের চিন্তা করতে হবে)।
৫) প্রতিটি জেলা সরকার থেকে ২ জন প্রতিনিধি নিয়ে জাতীয় সংসদের উচ্চ কক্ষ করতে হবে। 
৬) নগরীয় বাংলাদেশকে সামনে করে স্থানীয় সরকারের স্তর বিন্যাস করতে হবে।  
৭) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সমানুপাতিক ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে ( স্থানীয় সরকার পরবর্তীতে)। 
৮) জাতীয় সংসদের প্রতিনিধি ও স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। তাহলে প্রেসিডেন্ট সর্বদলীয় হয়ে পড়বেন। 
৯)  প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী  পর পর দুইবার নির্বাচিত হতে পারবেন না। 
১০) প্রধানমন্ত্রী  একাধারে দলীয় প্রধান, সরকার প্রধান ও সংসদলীয় দলের প্রধান হতে পারবেন না। 
১১) সমহারে সমগুরুত্বে নর-নারীর গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়নের জন্য প্রথমে জাতীয় সংসদে ও স্থানীয় সরকারের সংসদে ১০০:১০০ হারে ক্ষমতায়নের চিন্তা করা যেতে পারে। 
১২) সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটিগুলো আরও গণতান্ত্রিক করে কার্যকর করা যেতে পারে। 
১৩) তাছাড়া গণতান্ত্রিক জাতীয় নির্বাচন কমিশন, গণতান্ত্রিক স্থানীয় নির্বাচন কমিশন, গণতান্ত্রিক দুর্নীতি দমন  কমিশন,  গণতান্ত্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণতান্ত্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক শিল্প ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক বিচার বিভাগ, গণতান্ত্রিক মিডিয়া, গণতান্ত্রিক নির্বাহী বিভাগ, গণতান্ত্রিক পুলিশিং ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক ভূমি ব্যবস্থা তথা এইভাবে রাষ্ট্রের ২৮ টি ক্ষেত্রকে গণতান্ত্রিক করতে হবে।  

দেশকে ভালোবাসি। নতুন প্রজন্মকে ভালোবাসি।  রাষ্ট্র সকলের। এখন প্রয়োজন জাতি গঠন, রাষ্ট্র গঠন ও সরকার গঠনের উদ্যোগ। তবেই আমরা নাগরিক হবো, সরকারের অংশ হবো। ধন্যবাদ সকলকে।
 

মোশাররফ হোসেন মুসা : গণতন্ত্রায়ন ও গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার বিষয়ক গবেষক।

এই বিভাগের আরো সংবাদ