শুভ জন্মদিন আলোকবর্তিকা

১৮ আগস্ট ২০২৩, ১৮:১৩ | অনলাইন সংস্করণ

প্রয়াত ডা. এস এ মালেক গত বছর ১৮ আগস্ট তার জন্মদিনে আমাকে বলেছিলেন, তোকে ২০ বছর আগে পেলে দেশের মানুষকে দেখাতাম কিভাবে রাজনীতি করতে হয়?
বহু পরিচয়ের কারনে আমরা তাকে একেকজন একেকভাবে মনে রাখব। তবে সব কিছু ছাপিয়ে আমার হৃদয়ে তার যে পরিচয় ধ্রুবতারার মতো উজ্জ্বল হয়ে থাকবে, সেটা হলো তিনি অসম্ভব আত্মবিশ্বাস নক্ষত্র বিজয়ী এক ‘আলোকবর্তিকা’। এক অসম্ভব উৎসাহ দেওয়ার ক্ষমতা ছিলো যার মধ্যে।
যাকে শুধু রাজনৈতিক পরিচয়ে সংজ্ঞায়িত করা আমার জন্য কঠিন। '৭০ এর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ইথারিও ডাকে এককভাবে ছুটে গেছেন মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে। কে কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, কী হিসাব মেলাচ্ছে, কী ব্যাখ্যা দিচ্ছে, কোনো কিছুর ধার ধারেননি তিনি। নিজেই নিজের ভূমিকা ঠিক করে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। কী আছে, কী নাই, তার হিসাবের অপেক্ষায় কিছুই তাকে আটকে পারেনি।
যেসব কাজ নিয়ে তিনি জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন, তার তালিকা করলে তালিকাটি দীর্ঘ হবে। কিন্তু আমি এই তালিকার দৈর্ঘ্য নিয়ে যতটা অবাক হয়েছি, তারচেয়ে বেশি অবাক হয়েছি এটা দেখে যে, প্রত্যেকটা কাজ তিনি ভিন্নভাবে তার নিজস্ব নিয়মে করেছেন। '৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু ডেকে নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দিয়েছিলেন।
এমপি হয়েছিলেন ফরিদপুরের রাজবাড়ী থেকে। যে আরাক ইতিহাস বেশী কথা লিখে আপনাদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটাবো না। আপনাদের শুধু এতোটুকু বলি পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও প্রতি-বিপ্লবীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করলে তাদের কাছ থেকে বিপ্লবীরা কোনদিন ক্ষমতা কেড়ে নিতে পারে নাই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হচ্ছে একমাত্র দল যারা পুনরায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আসীন হতে সক্ষম হয়েছে।
যার প্রধান ভ্যানগার্ড ছিলো বঙ্গবন্ধু পরিষদ। যা ডা. এস এ মালেকের স্মরণ সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা নিজেই স্বীকার করেছেন। ডা. মালেক শুধু বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বই পালন করে নাই।
তিনি ছিলেন এই সংগঠনের প্রান পুরুষ। ছিলেন ৯৬ সরকারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার একমাত্র উপদেষ্টা। আমৃত্যু ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা। জীবন্ত কিংবদন্তি হওয়া সত্ত্বেও আগস্ট মাসে জন্মদিন হওয়ায় তিনি কোনদিন জন্মদিন পালন করতেন না। অবলীলাক্রমে অজানা নিয়ম চালু করার এক অপূর্ব শিল্পী ডা. এস এ মালেক আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
জাতি চিরদিনের জন্য তার কাছে কৃতজ্ঞ হয়ে থাকবে। সরলতা ছিলো তার বহু গুনের মধ্যে একটি। এই সরলতার কারনেই দুইবার আমাদের সম্পর্কের দূরত্ব বেড়েছে তবে কোনদিন তার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হই নাই। বহুবিধ প্রতিভার বিরল সমাবেশে সরলপ্রাণ এই মানুষটির জন্মদিনে জানাই হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা।কীর্তিমান মহাপ্রাণ এই নিবৃত্তচারি মানুষটির জন্মদিন প্রার্থনা করি মহান আল্লাহ তায়ালার তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। আমিন।
লেখকঃ সরদার মাহামুদ হাসান রুবেল সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদ টীম সদস্য, নির্বাচন পরিচালন কমিটি ও সদস্য, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
এই বিভাগের আরো সংবাদ