আজকের শিরোনাম :

আল্লাহ আপনাদের হেদায়েত দিক

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২২, ২০:২৮ | আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২২, ১০:১৫

মাহবুব মুমতাজ ভাইয়ের ফেসবুক পোস্টে চোখটা আটকে গেলো। প্রথম আলোর নিউজের একটা স্কিনশট বশেফমুবিপ্রবিরের 'উপচার্যকে অপসারনের দাবিতে টানা কর্মবিরতি'। একটু অবাক হলাম। সার্চ দিয়ে দেখলাম আরো কিছু পত্রিকায় নিউজ হয়েছে। নিউজ গুলো পর্যবেক্ষেণ করে দেখতে পেলাম তারা উপাচার্যের বিরুদ্ধে  প্রশাসনিক ও আর্থিক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতাসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবিকে নানাভাবে উপেক্ষা করা,  চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম, গাড়ীর তেল সংক্রান্ত, গেস্ট হাউসের সুবিধা থেকে শিক্ষকদের বঞ্চিত করা বিষয়ে অভিযোগ করেছে। সংবাদ সম্মেলনে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। তারা অবিলম্বে উপাচার্যের অপসারণের দাবি করেন।

সমস্যা গুলো দেখে কেউ বুঝতে পারবে দাবী গুলো একদিনের নয়। বোধকরি দাবী গুলো করতে তারা বড্ড দেরি করে ফেলেছে। কারন উপাচার্য মহোদয়ের মেয়াদ আছে মাত্র ৫ দিন। তিনি এতো খারাপ মানুষ হলে অপসারণের দাবি তুলতে হবে কেন? তিনিতো এমনিই বাদ পড়ে যাবেন। ছবিতে দেখলাম সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহাকারী অধ্যাপক, সহকারী প্রক্টর ও সিন্ডিকেট সদস্য মাহমুদুল আলম। এখন প্রশ্ন হচ্ছে একজন সিন্ডিকেট সদস্য বা সহকারী প্রক্টর হিসেবে তিনি কি প্রসাশনের বাহিরে? তিনি প্রশাসনিক ও আর্থিক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতাসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবিকে নানাভাবে উপেক্ষা করার প্রতিবাদে কথা বলেছেন। তার উচিত ছিলো সংবাদ সম্মেলন করার আগে প্রশাসনিক পোস্ট থেকে পদত্যাগ করা। যাক সে কথা। হয়তো তিনি ভুলে গেছেন। তারা আরও অভিযোগ করেছে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম নিয়ে। মজার ব্যাপার হলো বর্তমান উপাচার্যই হলেন এই ক্যাম্পাসের প্রতিষ্ঠাকালিন উপাচার্য। এই ক্যাম্পাসের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারি সবই তার স্বাক্ষরে নিয়োগ। যদি তারা নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন।  তবে তাদের নিয়োগও কি প্রশ্নবিদ্ধ হয় না?

দেখলাম তারা উপাচার্যের গাড়ী তেল নিয়েও হিসাব কষা শুরু করেছে। তারা হয়তো জানে না ভিসির গাড়ির তেল প্রাপ্তি আনলিমিটেড। এমনকি সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীতে উপাচার্যের পরিবার থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। বাঙালি আসলেও একটা গোল্ডফিশ জাতি। তারা ভুলে গেছে এই দেশ প্রায় দুই বছর করোনায় লকডাউন ছিলো। তারপরও আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি একই রকম ক্যাম্পাসের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ছিলো চোখে পড়ার মত। 

মাহবুব মুমতাজ ভাইয়ের সেই ফেসবুক পোস্টে কয়েকজন কিছু মজার কমেন্ট করেছে। একজন লিখেছে, স্যার কদিন আগে আপনারা ভিসি স্যারকে খুশি করতে বক্তব্য রেখেছেন, তার দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে চলছে। এখন আবার এগুলো কি বলছেন? আরও কিছু কমেন্ট দেখার জন্য মাহবুব ভাইয়ের ওয়ালে যেয়ে দেখলাম পোস্টটা তিনি ডিলিট করে দিয়েছেন। 

আর একটা কাজ এই ক্যাম্পাসের শিক্ষকরা করেছে, যা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ন্যাক্কারজনক ঘটনা। সংবাদ সম্মেলন শেষে জামালপুরের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমার জন্যও ঘটনাটি চরম লজ্জার। ভিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র জেলার ডিসির কাছে? তারা কি একবারও অনুভব করলো না? বিশ্ববিদ্যালয়টিকে তারা কোথায় নামিয়ে আনলো? এই লেখা বশেফমুবিপ্রবির কোন শিক্ষক পড়বেন কিনা জানিনা। তবুও বলি কাউকে ছোট করা অপমান করা সহজ। বড় করে তুলতে লাগে মন ও মগজ। কোন পত্রিকা স্পেসিফিক ভাবে আপনাদের দাবী ছাপায় নাই। তবে এটা ছাপিয়েছে যে, এই উপাচার্যের পুনঃ নিয়োগ হলে আপনারা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখবেন। অর্থাৎ আপনাদের কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট ফুটি উঠেছে এই দাবী টাবি কোন বিষয় না। মধ্যাকথা যে উপাচার্যের স্বাক্ষরে আপনাদের একটা সম্মানজনক চাকরি হয়েছে তার পুনঃনিয়োগ আপনারাই চাইছেন না। আসলে আপনারা চক্ষু লজ্জাটুকুও  হারিয়ে ফেলেছেন। পরিশেষে শুধু এইটুকু বলবো 'আল্লাহ আপনাদের হেদায়েত দিক'।

লেখকঃ সরদার মাহমুদ হাসান রুবেল, সদস্য, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপকমিটি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ,সাধারণ সম্পাদক ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও টিম সদস্য নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ।

 

এই বিভাগের আরো সংবাদ