আজকের শিরোনাম :

বীর কর্ণেল এটিএম হায়দারের ৮০তম জন্মবার্ষিকী

  শহীদ শেখ

১৪ জানুয়ারি ২০২২, ২১:৩৮ | অনলাইন সংস্করণ

লাল চিহ্নিত করা বীর কর্ণেল এটিএম হায়দার
দেখুন তো সামনের সারিতে কাঁধে রাইফেল ঝুলিয়ে জ্যাকেটের কলার উঁচিয়ে  সিনা টান করে সামরিক কায়দায় ডানের দুই জেনারেলের সাথে  সমান তাল রেখে সর্ববামে এগিয়ে যাওয়া বেসামরিক কিন্ত স্মার্ট পোশাকের  এই কমান্ডোকে। চিনতে পেরেছেন কমান্ডো ট্রেনিং প্রাপ্ত  এই দুর্ধর্ষ গেরিলা কমান্ডার কে? পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল নিয়াজীকে  সারেন্ডারের দলিলে স্বাক্ষর করানোর জন্য দৃপ্ত পায়ে বীরের মত এক বাঙালী কমান্ডোর এগিয়ে যাওয়ার এই দৃশ্য পরাজিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সহ নিজবাহিনীর অনেক সিনিয়র  সহকর্মীর  হিংসার কারণ হয়ে দাড়িয়ছিলো।

কমান্ডো ট্রেনিং প্রাপ্ত  এই দুর্ধর্ষ গেরিলা কমান্ডার মেজর এটিএম হায়দার। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর ত্রাস। সামরিক পদবীতে জুনিয়র হয়েও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে  দুঃসাহসিকতা ও বীরত্ব প্রদর্শন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনায় পাকিস্তানি হানাদার ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সিনিয়রদের সমীহ আদায় করে নিয়েছিলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনে ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর  সর্ব প্রথম "আমি মেজর হায়দার বলছি" বাংলাদেশকে শত্রু মুক্ত ও স্বাধীন  ঘোষণা  করা মেজর এটিএম হায়দার। 

আজ বাঙালী জাতির এই বীর কর্ণেল এটিএম হায়দারের ৮০তম জন্মবার্ষিকী। দেশমাতৃকার স্বাধীনতা অর্জনে বিদ্রোহ ঘোষণা করে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যায়লের ছাত্রদের নিয়ে "ক্র্যাক প্লাটুন" নামে গেরিলা বাহিনী গড়ে তুলে যুদ্ধের নয় মাস পাকিস্তানি হানাদারদের  ত্রাস্থ ব্যস্ত করে  অস্থির ও ভীত সন্ত্রস্ত  করে রেখেছিলেন । একা নিজে শুধু  যুদ্ধে লড়াই করেননি, জগত বিখ্যাত বিপ্লবীদের মত সাথে নিয়েছিলেন বোন ক্যাপ্টেন ডাঃ সিতারা বেগম বীরপ্রতিক  ও ছোট ভাই  বীর মুক্তিযোদ্ধা  টি এম সফদর জিতুকে। হায় দূর্ভাগা জাতির এমন বীরের পরিচয় ও বীরত্বের কাহিনী লুকিয়ে রাখা হয়েছিলো দীর্ঘ দিন ।

মেজর এটিএম হায়দারের বোন ক্যাপ্টেন সেতারা

কারণ এমন অসামান্য অবদান ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে পরাজয়ের কালিমা লেপে দেওয়া সহ্য করতে পারেনি নিজ বাহিনীর  একদল  হিংসুটে সিনিয়র  সহকর্মী ও পাকিস্তান প্রত্যাগতরা। আর সুযোগ পেয়ে ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর খুনি জেনারেল  জিয়ার নির্দেশে জলিল ও আসাদ নামক দুই মেজরের নেতৃত্বে নিজবাহিনীর কিছু সৈনিক সেক্টর কমান্ডার জেনারেল খালেদ মোশাররফের সাথে আজন্ম বিপ্লবী এই কর্ণেল এটিএম হায়দারকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে পাকিস্তানের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছিলো। 

মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসারত ক্যাপ্টেন সেতারা

পরবর্তীতে ঘাতকের দল ক্ষমতা দখল করায় দুর্ধর্ষ গেরিলা কমান্ডার মেজর এটিএম হায়দারের বীরত্বের কাহিনী জাতিকে জানতে দেয় নাই। সেই দুঃখে এবং ক্ষোভে তার বোন ডা. ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম (বীরপ্রতীক) প্রবাস জীবন বেছে নিয়েছেন।

বাঙালী জাতির এই বীর কর্ণেল এটিএম হায়দারের ৮০তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।

 

(ফেসবুক থেকে সংগৃহিত)

এই বিভাগের আরো সংবাদ