আজকের শিরোনাম :

উন্নয়নশীল বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

  ড. আতিউর রহমান

০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:৫০ | অনলাইন সংস্করণ

জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনের ৪০তম সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে বাংলাদেশ, নেপাল ও লাওস গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নীত হয়েছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর এ বছরে বাংলাদেশের এই উত্তরণ নিঃসন্দেহে এক আনন্দের সংবাদ, যদিও আনুষ্ঠানিক তবু এই সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য গৌরবের। যে দেশটিকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে তাচ্ছিল্য করা হয়েছিল, তাকেই এখন বিশ্বসভা উন্নয়নের এক রোল মডেল তথা ‘পোস্টার চাইল্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে। জাতি হিসেবে নিশ্চয়ই এই অর্জনে আমরা শধষবৎশধহঃযড়গর্বিত। বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট ও সর্বশেষ করোনা মহাসংকট সত্ত্বেও বাংলাদেশের এই অর্জনের পেছনে নেতৃত্বের অসামান্য অবদানের কথা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। তাইতো জাতিসংঘ এই প্রস্তাব নেওয়ার পরপরই আমাদের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা যথার্থই মন্তব্য করেছেন যে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছিলেন। কভিড-১৯-এর অভাবনীয় চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তিনি একেবারে সম্মুখসারিতে থেকে এই অসামান্য উন্নয়ন অভিযাত্রার নেতৃত্ব দিয়েছেন।’ একই সঙ্গে তিনি জাতিসংঘের বহুমাত্রিক অংশীদারের সাফল্য হিসেবেও এই অর্জনকে দেখতে বলেছেন। আর সে কারণেই তিনি বলেছেন যে এই উত্তরণকে যেন পুরস্কার হিসেবেই দেখা হয়। বাংলাদেশসহ যেসব দেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটাল, তারা যেন আন্তর্জাতিক মহল থেকে প্রয়োজনীয় সমর্থন পায় সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন। এই উত্তরণের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার জন্য উপযুক্ত সহায়তা কাঠামো, বিশেষ করে টেকসই উন্নয়নের জন্য যে আন্তর্জাতিক আর্থিক সমর্থনের দরকার হবে সেদিকে নজর রাখার জন্য আমাদের রাষ্ট্রদূত আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি আরো বলেছেন যে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর যে সম্মেলন কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তাতে যেন এসব বিষয়ে আলাপ হয়।

বাংলাদেশের এই উত্তরণের পেছনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যে শক্তিমত্তার পরিচয় মিলেছে, তা আসলেই চমকপ্রদ। এটিকে একটি বিরল কীর্তিও বলা চলে। আমাদের বিচক্ষণ প্রধানমন্ত্রী তাঁর গতিশীল নেতৃত্বে উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ও গোষ্ঠীর সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা সচল রেখেছেন। কভিড-১৯-এর হামলায় যখন বিশ্বের প্রায় সব দেশই ‘জীবন ও জীবিকা’ সংরক্ষণে হিমশিম খাচ্ছে, তখন তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে দারুণ মুনশিয়ানার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এই দুঃসময়েও গত অর্থবছরে ৫.২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধিই শুধু আমরা অর্জন করেছি তা-ই নয়, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনারও সূচনা করেছি। পরিকল্পনার প্রথম অর্থবছরে আমরা প্রবৃদ্ধির হার ৭.৭ শতাংশ অর্জন করার স্বপ্ন দেখছি। ফলে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে। মাথাপিছু আয় বাংলাদেশের এই উত্তরণের পেছনে এক বড় চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। ধারাবাহিকভাবে বছরের পর বছর ধরে মাথাপিছু আয়ের প্রবৃদ্ধি ছাড়াও মানবশক্তি এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার পরিচয় বাংলাদেশ তুলে ধরতে পেরেছে। সব সূচক পর পর দুইবার পূরণ করে এই চূড়ান্ত গ্র্যাজুয়েশন অর্জনের কৃতিত্ব আমাদের বিচক্ষণ নেতৃত্বের এবং এ দেশের সব মানুষের।

এ কথা ঠিক এই উত্তরণের ফলে আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য খানিকটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে এবং আমরা যে বাণিজ্য সুবিধাগুলো পাই, তা খানিকটা ব্যাহত হবে। আমাদের রপ্তানি পণ্যকে বিশ্ববাজারে জোর প্রতিযোগিতা করেই টিকে থাকতে হবে। বিশ্ব সরবরাহ চেইনে আগে যে সুবিধাগুলো আমরা পেতাম, তা হয়তো আর সেভাবে মিলবে না। আমরা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে যে বিশেষ প্রবেশাধিকার পেতাম তার অনেকটাই হয়তো আর ধরে রাখা যাবে না। বিশ্ববাণিজ্যের যে মান তা বজায় রেখেই আমাদের রপ্তানি করতে হবে। আমরা যে একপক্ষীয় বাণিজ্য সুবিধা পেয়ে আসছি, তা-ও রাখা সম্ভব হবে না। নিঃসন্দেহে আমাদের বেশ কিছু সুবিধা হাতছাড়া হয়ে যাবে। কিন্তু তাই বলে আমরা আমাদের জাতীয় পরিচয়কে আজীবন খাটো করে রাখব, এমনটি নিশ্চয় কাম্য নয়। আমরা আমাদের উন্নততর জাতীয় পরিচয় তুলে ধরতে যে এই পরিমাণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে প্রস্তুত আছি, সে কথাটি দেশবাসীকে জানাতে দ্বিধার কোনো সুযোগ নেই। এর আগেও আমরা মাল্টিফাইবার অ্যাগ্রিমেন্ট বা এমএফএ উঠে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই আমাদের বস্ত্রশিল্পের অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখতে পেরেছিলাম। তাহলে এত বছর পরে আমরা কেন প্রতিযোগিতা করে বিশ্ববাজারে আমাদের পোশাকশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে পারব না? এই উত্তরণ আমাদের জাতিকে যে গৌরবান্বিত করেছে, তা তো ঠিক। জাতির এই উজ্জ্বলতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা কেন আমাদের রপ্তানি পণ্যের উপযুক্ত মূল্য আদায় করতে পারব না? ভালো লেগেছে জেনে যে আমাদের পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রস্তুত রয়েছেন। বিজিএমইএর সভাপতি ঠিকই বলেছেন যে নয়া বাস্তবতার জন্য তাঁরা তৈরি হচ্ছেন। আর এ জন্য যথেষ্ট সময়ও আমাদের হাতে রয়েছে। ২০২৯ সাল নাগাদ যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রচলিত বাণিজ্য সুবিধা আমাদের জন্য অক্ষুণ্ন রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। স্মার্ট বাণিজ্যিক কূটনীতি চালু রাখতে পারলে এই সুবিধা আরো বাড়ানো যেতে পারে।

আশার কথা, আমাদের বস্ত্র খাতের মৌলিক শিল্পগুলো দ্রুতই গড়ে উঠছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ পোশাকশিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল এসব শিল্প থেকে আমরা অচিরেই সংগ্রহ করতে পারব বলে উদ্যোক্তারা মনে করছেন। তা ছাড়া অনেক উন্নয়নশীল দেশ বিশ্ববাণিজ্যে অনেক নতুন নতুন সুযোগ করে নিয়েছে। সেগুলো আমাদের জানতে হবে এবং নতুন সুযোগ গ্রহণের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে অনেক দেশের সঙ্গেই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলাপ-আলোচনা চালু রয়েছে। কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ চুক্তি নিয়েও অনেক দেশের সঙ্গে আলাপ চলছে। উদ্দেশ্য আমাদের যেসব বাণিজ্য সুবিধা এখন আছে সেগুলো যেন অন্তত চালু রাখা যায়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ২০২৪ থেকে ২০৩৪ সাল পর্যন্ত জিএসপি সুবিধা বজায় রাখার জন্য সব শর্ত পূরণ সম্ভব হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এই বাস্তবতায় আমাদের জাতীয় পরিচয়ের এই উত্তরণের বিষয়টিকে দেখতে হবে। আমরা তো এসব চ্যালেঞ্জের কথা জেনেশুনেই এই উত্তরণের জন্য কাজ করে আসছিলাম। তাই এখন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পালা। নয়া বাস্তবতায় যেন মাঝপথে আমাদের পথচলার গতি কমে না আসে, সে জন্য যা যা করণীয়, তা করে যেতে হবে। আমাদের বড় শক্তি আমাদের উদ্যমী উদ্যোক্তা এবং পরিশ্রমী কর্মিবাহিনী। তাদের জন্য যেসব সহায়ক নীতি চালু রেখে এতটা পথ আমরা পাড়ি দিয়েছি, তা যেন অব্যাহত থাকে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে আমাদের মাঝারি ব্যবস্থাপকসহ সব কর্মীর দক্ষতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণের সুযোগ আরো বাড়াতে হবে। আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর বাস্তবায়ন দ্রুত সম্পন্ন করে সেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণের পথকে সুগম করতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের নিয়ম-কানুন সহজ করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করতে হবে। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়বেই। তাই আমাদের মানবশক্তিকে উপযুক্ত দক্ষতা অর্জনের সুযোগ করে দিতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষাব্যবস্থাকে নতুন যুগের চাহিদামতো জনশক্তি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ আরো বাড়িয়ে দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর করার কৌশল অব্যাহত রাখতে হবে। তবেই না অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানো সম্ভব হবে। একই সঙ্গে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং ডিজিটাল রূপান্তরের ওপর গুরুত্ব বজায় রাখতে হবে। আমাদের উন্নয়নের এই ধারাকে আরো বেগবান করতে তাই সরকারকে অবারিত বিদ্যুৎ সরবরাহ, নির্ঝঞ্ঝাট পরিবহন, দক্ষ বন্দর ব্যবস্থাপনা, দক্ষ জনশক্তি এবং ডিজিটাল গভর্ন্যান্সকে আরো উন্নত করার যেসব নীতি বর্তমান সরকার গ্রহণ করেছে, সেগুলো যেন চলতে থাকে। পাশাপাশি আমাদের সক্রিয় ব্যক্তি খাতকে আরো দক্ষ করার জন্য ব্যবসায় সহায়ক নীতি, তথ্য, আর্থিক খাতের আরো আধুনিকায়ন ও সুশাসন এবং সর্বোপরি মহামারি-উত্তর নয়া পৃথিবীতে নিজেদের শক্তিমত্তা বজায় রাখতে সবুজ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই উন্নয়নের কৌশলকে আরো জোরদার করার কোনো বিকল্প নেই।

তা ছাড়া আমাদের বৈদেশিক অর্থনীতির শক্তিও বেশ জোরালো। জলবায়ুর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার ক্ষেত্রেও আমাদের অর্জন ও অঙ্গীকার সারা বিশ্বের দৃষ্টি কেড়েছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ ভোগের পরিমাণ বেশ ভালো। সে কারণেই আমাদের প্রবৃদ্ধির গতি এতটা স্থিতিশীল ও বাড়ন্ত। অবশ্য দুর্নীতি, অপচয় এবং সরবরাহ চেইনের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারলে আমাদের প্রবৃদ্ধির গতি যেমন আরো বাড়ানো সম্ভব, তেমনি সাধারণ মানুষের জীবনমানেরও আরো উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে। আমাদের সীমিত সম্পদ এবং বিদেশি বিনিয়োগ যেন উৎপাদনশীল খাতে বেশি বেশি করে যায় এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, তা নিশ্চিত করাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। এসব দিকে এখন বেশি করে নীতি মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

আমরা মেড ইন বাংলাদেশে বিশ্বাসী। তাই নিট আমদানির বদলে নিট রপ্তানিকারক দেশে রূপান্তরিত হতে চাই। আমরা গত ৫০ বছরে নীতি গ্রহণে যে উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিয়েছি এবং তার সঙ্গে বাজারব্যবস্থা যেভাবে সাড়া দিয়েছে, তা থেকে এই আশা করতেই পারি যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের গণ্ডি পেরিয়ে উন্নত দেশে পরিণত হতে পারবে। উল্লেখ্য, পঁচাত্তরের পর যে পরিমাণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে তার দুই-তৃতীয়াংশের মতো হয়েছে বিগত ১২ বছরে। এতেই প্রমাণিত হয় যে নেতৃত্বের গুরুত্ব কতটা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক দূরে দেখতে পান। তাই তো তিনি সবুজ প্রবৃদ্ধির কথা বলেন। উন্নত দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন। আসলে আশাই হতে পারে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। উত্তরণের এই মহতী সময়টায় আমাদের আশা করার সেই শক্তিটা আরো জোরালো হোক, সে প্রত্যাশাই করছি।

বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে লড়াকু এক মন। সেই লড়াই করার মনটা সচল থাকুক, সে প্রত্যাশাই করছি। এই মনের জোরেই এক দশক ধরে উদীয়মান এশিয়ায় সর্বোচ্চ মাথাপিছু নমিনাল জিডিপি অর্জন করে তার অর্থনীতি ও সমাজের অভ্যন্তরীণ শক্তি প্রদর্শন করে চলেছে। মূলত বিচক্ষণ প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ও গোষ্ঠীর সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা সচল রাখা গেছে। নেতৃত্বের সেই শক্তির কারণেই আমরা আশা করতে পারি যে আগামী দিনের বাংলাদেশকে আরো উন্নত, সমৃদ্ধ এবং গণকল্যাণধর্মী করে গড়ে তুলতে সক্ষম হব। (সংগৃহীত)

লেখক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ও সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক

এই বিভাগের আরো সংবাদ