আজকের শিরোনাম :

করোনার টিকা সংগ্রহে রাষ্ট্রীয় তৎপরতা

  ড. শরীফ এনামুল কবির

০৪ আগস্ট ২০২১, ১১:১৭ | অনলাইন সংস্করণ

ড. শরীফ এনামুল কবির
কভিড-১৯-এর প্রথম সংক্রমণ ঘটে ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে। এরপর বাড়তে থাকে সংক্রমণ, ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়েছে বিশ্বের ১৬ কোটি ৮২ লাখ মানুষ, যেখানে কভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৩৬ লাখ। করোনার প্রকোপ ঠেকানোর কৌশল হিসেবে বিভিন্ন দেশ নানা সময়ে লকডাউনের মতো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। শেষ রক্ষা হয়নি তাতেও। তাতে বরং ঝক্কি-ঝামেলা বাড়ে। কলকারখানার চাকা ঘোরে না, বন্ধ হয়ে যায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম। ধসে যেতে থাকে অর্থনীতি, বাড়তে থাকে দারিদ্র্যের হার ও বেকারত্ব। এমন অবস্থায় মানবশরীরে শক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার গুরুত্ব উঠে আসে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে। নিজেদের মজুদ বাড়াতে তাই বাংলাদেশের উদ্যোগও চোখে পড়ে টিকা আবিষ্কারের গোড়ার দিকেই। প্রথমদিকে উন্নত অনেক দেশের আগেই বাংলাদেশ টিকা পায়। কিন্তু একটি চালান আসার পর টিকা সংগ্রহ কর্মসূচি খানিকটা হোঁচট খায়। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা টিকার চালান আটকে যাওয়ায় খানিকটা অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এমনকি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয় টিকা কর্মসূচিও।

এ অনিশ্চয়তাও কাটিয়ে এখন স্বস্তিতে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ২৮ জুলাই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বর্তমানে প্রায় এক কোটি ডোজ টিকা মজুদ রয়েছে। আগস্টে আরো দুই কোটি ডোজ আসবে। সুতরাং আগামীতে টিকা নিয়ে সমস্যা হবে না। এর আগে ২৫ জুলাই প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আগামী বছরের শুরুতে দেশে সব মিলিয়ে প্রায় ২১ কোটি ডোজ টিকা আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে চীন থেকে তিন কোটি, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি, সাত কোটি ডোজ কোভ্যাক্স থেকে, এক কোটি রাশিয়ার, জনসন অ্যান্ড জনসনের সাত কোটি ডোজ। এসব টিকা পেলে দেশের অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়া যাবে। যদি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা মেলে তাহলে বাংলাদেশ অন্য কোনো দেশ থেকে পিছিয়ে থাকবে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে এরই মধ্যে টিকা দেয়া হয়েছে এক কোটিরও বেশি।

এদিকে গত কয়েক দিনে দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাটা যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তবে নিরাশার এ খবরের মধ্যে আরেকটি খবর মানুষের মধ্যে আশার আলো জ্বালিয়েছে। শহরের বাইরে গ্রামের মানুষের কাছে খবরটি স্বস্তির আরেক সুবাতাস। খবরটি হলো ইউনিয়ন পর্যায়ে মানুষকে টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত। যেখানে থাকছে না রেজিস্ট্রেশনের বিড়ম্বনাও। কেবল জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড দেখালেই নেয়া যাবে সেই টিকা। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে টিকাদানের পরিধি বাড়াতে সরকারের এ উদ্যোগ।

করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদন শুরু হওয়ার প্রথম দিকেই ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় বাংলাদেশ। চুক্তিমতে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা বাংলাদেশের। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ হারে ছয় মাসে এ টিকা দেশে আসার কথা। জানুয়ারি পর্যন্ত চুক্তিমতো ঠিকঠাক টিকা মেলে। ফেব্রুয়ারিতে চুক্তির ২০ লাখ টিকা এসে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিপত্তি শুরু হয় মার্চে গিয়ে। দেশটিতে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকায় টিকা পাওয়ার দ্বার বন্ধ হয়ে যায় ভারত থেকে। এমন আকস্মিকতায় বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয় বাংলাদেশকে। সে সময় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক যোগাযোগ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। বার্তা যায় দেশটির সর্বোচ্চ মহলে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবুল কালাম আব্দুল মোমেন কথা বলেন তার দীর্ঘদিনের বন্ধু বিদেশমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে। নিজ বাসভবনে দাওয়াত দিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বাংলাদেশে টিকার গুরুত্বই তুলে ধরেন তিনি। এ সাক্ষাতের পরের সপ্তাহেই বিশেষ বিমানে দিল্লির হেড কোয়ার্টারে বাংলাদেশের বার্তা নিয়ে পৌঁছেন হাইকমিশনার। চুক্তিমতো না হলেও অন্তত কয়েক লাখ টিকা দিয়ে বাংলাদেশের কাছে ‘ইজ্জত’ রক্ষার আকুতি তুলে ধরেন। দিল্লির মন গলেনি তাতেও, ২৯ জুলাই পর্যন্ত ভারতের কাছ থেকে পাওনা টিকা পাওয়ার কোনো প্রতিশ্রুতিই মেলেনি। তবে নাছোড়বান্দা ড. মোমেন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক, কানেকটিভিটির সম্মেলন, জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরামের নির্বাচন ইস্যু, নানা ফোরামের আলোচনায় গত মার্চ থেকে জুলাই—এ কয়েক মাসে ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের চুক্তির টিকার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন অন্তত এক ডজন বার, যার ফলও মিলেছে হাতেনাতে। ভারত সরকার পরপর দুবার মোট ১২ লাখ টিকা ‘উপহার’ হিসেবে দেয়। কারণ তখনো তারা চুক্তি মোতাবেক টিকা সরবরাহ করতে পারছিল না।    

একই সময়ে পূর্ব-পশ্চিমেও নজর দেয় ঢাকা। টিকা চেয়ে ১৮ মে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের কাছে কূটনৈতিক পত্র পাঠান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর তিনদিন পর ফোনে প্রয়োজনীয় কথা সেরে নেন এ দুই মন্ত্রী। এ সময় বাংলাদেশে চীনের টিকার নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস মেলে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ওয়াং ইর কাছ থেকে। এ আশ্বাসের সঙ্গে আরেকটু অনুরোধ জুড়ে দেন অধ্যাপক মোমেন, যার সারমর্ম ছিল এমন—পৃথিবীর মানচিত্রে আর কতটুকু জায়গাই-বা জুড়ে আছে লাল-সবুজের পতাকার দেশ? কিন্তু দেখো, ছোট্ট এ সীমানায় গিজগিজ করছে মানুষ। তাই কেবল টিকা সরবরাহই শেষ কথা নয়, চলো আমরা একসঙ্গে এখানে (বাংলাদেশে) টিকা উৎপাদন শুরু করি। সাড়া মেলে এ অনুরোধেও। চীনে উৎপাদিত টিকা বাংলাদেশে প্রক্রিয়াজাতের কার্যক্রম এগিয়েছে অনেক দূর। ঢাকায় এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ওষুধ খাতের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস। এছাড়া চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ায় ছয়টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে ভার্চুয়াল মিটিং হয়, যেখানে চীন টিকা সরবরাহ বজায় রাখতে আশ্বাস দেয়। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, যেহেতু বাংলাদেশে করোনার কারণে মৃতের সংখ্যা কম—সাত হাজারেরও নিচে, সুতরাং বাংলাদেশে টিকার প্রয়োজন নেই। যেসব দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেশি, কেবল তাদেরই যুক্তরাষ্ট্র টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ তালিকায় ছিল যেমন ভারত, ব্রাজিল ইত্যাদি। এ সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত তার বন্ধুবান্ধবদের ফোন দিতে শুরু করেন। বাংলাদেশ টিকা পেতে তাদের হোয়াইট হাউজে আবেদন করতে বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রবাসী ডাক্তার ও অন্যান্য পেশাজীবী ১ হাজার ৬৫৪টি স্বাক্ষর-সংবলিত দরখাস্ত প্রেসিডেন্ট বাইডেনের টেবিলে পৌঁছে দেন। এদের নেতৃত্ব দেন নিউ জার্সির ডাক্তার এএফএম হক, নিউইয়র্কের ডা. মোস্তাক ও ডা. সিদ্দিকী, ডা. কামরুন আবেদীন হেলেন ও আরো অনেকে। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত ছাড়াও ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত অ্যান্ড্রু মিলার যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। তার ফলে প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তিতে ৫৫ লাখ মডার্না টিকা আসে। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর টিকার আর্তি পৌঁছে যুক্তরাজ্যেও। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্কের বিষয়টি উল্লেখ করে মোমেনের বার্তা ছিল, তোমাদের অনেক আছে। তা থেকে আমাদের দেশের মানুষের জন্য মাত্র ১৬ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দাও। অনেক বাংলাদেশীর অবদানে শক্ত ভিত আজকের যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির—এ কথাটিও মনে করিয়ে দেন তিনি। দেরিতে হলেও এ অনুরোধেরও ফল পায় বাংলাদেশ। মেয়াদ শেষে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার আই ইগ্নটভের ফেরত যাচ্ছেন দেশে। যাওয়ার আগে গত ৩ জুন বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে। এ সময় তাকেও জোর অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, এ দেশের জন্মের সময়ই তোমরা সহযোগিতা করেছ। বিপদের এই দিনে তাই তোমাদের আবারো মনে পড়ে। আমরা রাশিয়া থেকে ৫০ লাখ স্পুটনিক-৫ আমদানি করতে চাইছি। অনুমোদন পেলে বাংলাদেশের কয়েকটি কোম্পানি রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনও করতে পারবে। এসব ক্ষেত্রে তোমার সহযোগিতা লাগবে। এতে রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক-৫ বাংলাদেশে আসার পথ সুগম হয়।

১৭ জুন জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন নিউইয়র্কের সাবেক বাসিন্দা ড. মোমেন। টিকা পেতে মরিয়া বাংলাদেশ, তাই এ বৈঠকেও টিকা ইস্যু জোরালোভাবেই তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ধনী-গরিব সব দেশের মানুষের জন্য টিকা সহজলভ্য করতে জাতিসংঘের উদ্যোগ নেয়া উচিত। সবার টিকাপ্রাপ্তির বিষয়ে জি৭ সম্মেলনে তার নেয়া উদ্যোগ এবং টিকা তৈরিতে বাংলাদেশের সক্ষমতার তথ্য উপস্থাপন করার কথা তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের কাছেও টিকাপ্রাপ্তির বার্তা ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।

অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা আড়াই কোটি; জনগণের জন্য এরই মধ্যে দেশটি সংগ্রহ করেছে ৯ কোটি ৩০ লাখ ডোজ টিকা। খবর পাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ড. মোমেন। তাদের অনুরোধ করেন, বাড়তি টিকা যথাসময়ে ব্যবহার না করলে মেয়াদ পার হয়ে যাবে, থাকবে না কার্যকারিতা। এগুলো বরং বাংলাদেশকে দিলে জনগণ উপকৃত হবে। অস্ট্রেলিয়া ইতিবাচকভাবে এ অনুরোধ আমলে নিয়েছে। তবে ইন্দোনেশিয়ায় মহামারী শুরু হওয়ায় এখনো অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশ টিকা পায়নি।

বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে জাপান সবসময়ই একটি বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে এ দেশের পাশে থেকেছে। করোনা মহামারীর কালেও তাদের পাশে রাখতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাপান বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশকে কয়েক ধাপে ৩০ লাখ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়ার কথা জানায়। গত ২৪ জুলাই প্রথম চালান উপহার হিসেবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২ লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ টিকা বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। এর আগে ঢাকায় টিকা পৌঁছেছে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকেও। আগস্টে টিকা আসবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকেও। আরো কয়েকটি দেশ থেকে টিকা আমদানির বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন। তাসখন্দে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ড. মোমেনের সাক্ষাৎ হলে চীনা মন্ত্রী আরো ১০ লাখ অর্থাৎ সব মিলিয়ে ২১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা উপহার দেন। চুক্তি হলে পরে আরো উপহার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অর্থনৈতিক ও জনকূটনীতি—বাংলাদেশের কূটনীতিতে নতুন অনুষঙ্গ যোগ করেছেন ড. মোমেন। দেশের নানা সংকট মোকাবেলা বা উন্নয়নে সব স্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করা এ উদ্যোগের লক্ষ্য। করোনা সংকট মোকাবেলায় তিনি জনকূটনীতি ব্যবহার করেন। কোভ্যাক্সে যুক্তরাষ্ট্রের বরাদ্দকৃত অনুদানের টিকা পেতে হোয়াইট হাউজে দেনদরবার করার জন্য অনুরোধ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত কমিউনিটি ও রাজনৈতিক নেতা এবং গণমাধ্যম-সংশ্লিষ্টসহ তার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেলফোন, মেসেজ, ই-মেইল ও ভিডিওবার্তায় তিনি কোভ্যাক্সে যুক্তরাষ্ট্রের বরাদ্দকৃত অনুদানের টিকা পেতে হোয়াইট হাউজে দেনদরবার করার জন্য অনুরোধ করেন। কমিউনিটির বিভিন্ন ভার্চুয়াল প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ভারতীয়-আমেরিকানরা দেনদরবার চালিয়ে হোয়াইট হাউজকে ভারতের জন্য টিকা বরাদ্দে সম্মত করিয়েছে। ফলে বাংলাদেশীদেরও শক্ত লবিং করা দরকার। দেশের জন্য টিকা নিশ্চিতের যুদ্ধে, দেশের মানুষকে বাঁচানোর লড়াইয়ে বাংলাদেশী-আমেরিকানদের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ উদ্যোগ সফল হয়। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ৫৫ লাখ ডোজ মডার্না ও ফাইজারের টিকা দিয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ দূতিয়ালি করা। টিকা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রাথমিক যোগাযোগ করছে তারা। দরদাম, আমদানির প্রক্রিয়াসহ অন্যান্য শর্ত ঠিক করে পুরো কার্যক্রম সম্পন্ন করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে এসব কাজে গতি আনাই ভালো। এদিক থেকে সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার তৎপরতা বাড়ানো জরুরি।

লেখক: সাবেক সদস্য, পাবলিক সার্ভিস কমিশন; সাবেক উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

সৌজন্যে : দৈনিক বণিক বার্তা।

এই বিভাগের আরো সংবাদ