আজকের শিরোনাম :

রাজনীতিতে ‘ধর্ম’ প্রসঙ্গ

  মুর্শিদা বিনতে রহমান

২৬ এপ্রিল ২০২১, ২৩:১৭ | আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২১, ১০:৩০ | অনলাইন সংস্করণ

ধর্ম, ক্ষমতা ও রাজনীতি শব্দগুলো একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সমসাময়িক বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারা পর্যবেক্ষণ করলে সহজেই অনুমেয় যে, ধর্ম এখনও রাজনীতি চর্চার প্রধান উপাদান হিসেবে বিবেচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বিশ্বে একদিকে বৃহৎ শক্তি হিসেবে আমেরিকার উত্থান এবং অন্যদিকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইল রাষ্ট্রের উত্থানের পর রাজনীতিতে ‘ধর্ম’ ভিন্নভাবে প্রাধান্যে থেকেছে। মধ্যপ্রাচ্যে তেল সম্পদ আবিষ্কারের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য যে রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করে তার প্রধান উপাদান ছিল ধর্ম। মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করে আমেরিকার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায়। ফলে এই কৌশল তারা পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়। বাংলাদেশও তা থেকে মুক্ত নয়। ইতিহাসের ধারাবাহিকতা পর্যবেক্ষণ করলে ধর্ম ও ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার যোগসাজস সহজেই বোঝা যায়।

সভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় মানুষ যখন সংঘবদ্ধ হয়ে নগররাষ্ট্র কিংবা সভ্যতা গড়ে তুলেছে তখন থেকেই ধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিল। ছোট ছোট অনেকগুলো নগররাষ্ট্রের সমন্বয়ে একেকটি সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। প্রতিটি নগররাষ্ট্রের আলাদা আলাদা প্রধান দেবতা থাকত। সেই দেবতার উপাসনার জন্য নির্মাণ করা হতো মন্দির। সুমেরীয় সভ্যতায় এই মন্দিরকে বলা হতো জিগুরাট। স্বাভাবিকভাবেই মন্দিরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল পুরোহিততন্ত্র। শুধু তাই নয় মন্দির ছিল সচিবালয় এবং কর প্রদানের স্থান। মন্দিরের দেয়ালে দাগ কেটে কর নেওয়া ও দেওয়ার হিসেবও রাখা হতো। মিশরীয় সভ্যতা নগররাষ্ট্র প্রকৃতির সভ্যতা ছিল না। সেখানে রাজা (ফারাও) নিজেকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে ঘোষণা করতেন। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের কাছে রাজা ও ঈশ্বর সমার্থক ছিল। রাজা যে দেবতাকে প্রধান হিসেবে মানতেন সাধারণ মানুষও সেই দেবতার উপাসনা করতেন। এরপর গ্রিক-রোমান সভ্যতায় সফিস্টদের উত্থানের ফলে মানুষের চিন্তা চেতনায় কিছুটা পরিবর্তন আসে। কিন্তু তা নির্দিষ্ট একটা গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তবে রাজাদের অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে সফিস্টদের। সক্রেটিস তার জলন্ত উদাহরণ।

মধ্যযুগে আবারো ধর্ম চিন্তা চেতনায় প্রাধান্য বিস্তার করে। সে সময়ের ইউরোপের রাষ্ট্র বনাম চার্চ কিংবা ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের রক্তাক্ত ইতিহাস এটাই প্রমাণ করে যে ধর্মের সঙ্গে ক্ষমতার প্রশ্নটি অঙ্গাঅঙ্গভাবে জড়িত। খ্রিস্টান জগতের বাইরে ইসলাম কিংবা হিন্দু ধর্ম প্রধান অঞ্চলগুলোর ইতিহাসের গতিধারাও একই। সেখানেও ধর্মকে পুঁজি করে শাসকরা সাধারণের ওপর তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। সে সমাজ ব্যবস্থা সাধারণের জন্য উন্নত কোনো জীবনমান নিশ্চিত করেছিল এর কোনো প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। বরং মধ্যযুগীয় চিন্তা চেতনা থেকে বেরিয়ে এসে মানবকল্যাণকে প্রাধান্য দিয়ে চিন্তার জগতে পরিবর্তন এসেছিল রেনেসাঁ। যুক্তিবাদিতা, মানবতা, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ ধারণাগুলো পুরো পৃথিবীব্যাপি আলোড়ন তোলে। সাধারণ মানুষ শাসকচক্রের অন্ধ আনুগত্যের বেড়াজাল থেকে মুক্তির পথের সন্ধান পায়। সূচনা ঘটে আধুনিক যুগের।  

সাধারণ মানুষের মুক্তি কী এত সহজ? শাসক শ্রেণি-ক্ষমতা লোভীরা কী সাধারণ মানুষকে মুক্তি দেওয়ার মানসিকতা পোষণ করে? তাইতো আধুনিক যুগে চিন্তার জগতে পরিবর্তন এলেও মানুষকে শোষণের ভিন্ন ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা হয়। গড়ে উঠতে থাকে সাম্রাজ্য। মানব মুক্তির চিন্তাধারাকে ফেরি করে দেশে দেশে সাম্রাজ্যবাদীরা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শোষণের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে। সেখানেও ধর্ম অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। কলোনির মানুষগুলো সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে তাদের প্রভু হিসেবে মেনে নেয়। একপর্যায়ে জাতীয়তাবাদী চেতনায় আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের ভিত্তিতে কলোনি থেকে তারা বেরিয়ে এলেও মনোজগতে কলোনিয়াল ভাবধারা তাদের মধ্যে অটুট থাকে। তাই পশ্চিমা বিশ্ব আজও আমাদের মতো রাষ্ট্রগুলোর কাছে প্রভু প্রতীম। পশ্চিম আমাদের বিভিন্ন বিষয় যে দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখাতে চায় আমরা ঠিক ঠিক সেভাবেই দেখি।

‘প্রভুর ধর্ম সাধারণের ধর্ম-শাসক যে ধর্মকে বিশ্বাস করবেন জনগণকে সেই ধর্মই পালন করতে হবে-তাই রাষ্ট্র ক্ষমতা অর্জন করা জরুরি’, প্রাচীন এই মূল্যবোধ থেকে কী আমরা বেরিয়ে আসতে পেরেছি? যুক্তিবাদিতা, মানবতা, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবোধ যদি আধুনিকতার মাপকাঠি হয় তাহলে বিশ্ব আজ কোনদিকে ধাবিত হচ্ছে তা বুঝতে এতটুকু কষ্ট হয় না। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে যে বাংলাদেশকে আমরা প্রত্যক্ষ করেছি তাতে একই চিত্র পরিস্ফুট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মান্ধ যেই প্রতিক্রিয়া প্রত্যক্ষ করেছি তাতে মনে হয় যুক্তিবাদিতার কোনো স্থান সেখানে নেই। অথচ বাংলাদেশ ছিল দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র রাষ্ট্র যার জন্ম হয়েছিল ধর্মনিরপেক্ষতাকে সামনে রেখে। ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার ফল যে কত ভয়াবহ হতে পারে তা বঙ্গবন্ধু নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। উপমহাদেশে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা যেভাবে সাধারণের প্রাণ কেড়েছে তা ছিল অত্যন্ত অমানবিক। তাই বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনিই একমাত্র নেতা যিনি রাজনীতিতে ধর্মকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। শুধু তাই নয় তিনি সৌদি বাদশাহর প্রস্তাবও দৃঢ় চিত্তে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে চক্রান্তকারী শক্তি তাঁকে হত্যা করে। এই হত্যার মধ্য দিয়ে মৃত্যু হয় ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নেরও।

১৯৭৫ সালের পর জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ এবং খালেদা জিয়া একসময়ের ঔপনিবেশিক প্রভু পাকিস্তানের অনুগত রাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই তা বাংলাদেশের আদর্শের বিপরীতে কাজ করেছে। বাংলাদেশের ডান ও বামরা একসঙ্গে তাদের প্রভুদের নীতি বাস্তবায়ন করেছে। ফলে কয়েকটি জেনারেশনের মনোজগতে আধিপত্য বিস্তার করেছে পাকিস্তানি ভাবধারা তথা ধর্মান্ধতা। মনে রাখতে হবে পাকিস্তানের ভিত্তিই হলো ধর্মান্ধতা। ধর্ম চর্চা ও ধর্মান্ধতা এক নয়। ১৯৫৪ এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনের কার্যক্রম ও ফলাফল পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে পূর্ব বাংলার মানুষ ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রত্যাখান করেছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীন বাংলাদেশে পাকিস্তানের দালালরা এমনভাবে নীতি পরিচালনা করেছে যে, ২০০৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের তথা ধর্মান্ধতার উর্বরভূমিতে পরিণত হয়েছে। সে ভূমি এতটাই উর্বর হয়েছে যে আজ বঙ্গবন্ধুর দলও ধর্মান্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। আওয়ামী লীগেও আজ ডানপন্থিরা শক্তিশালী।

এবার প্রশ্ন হতে পারে বাংলাদেশের জঙ্গিবাদ বা ধর্মান্ধতার সঙ্গে পাকিস্তান কিংবা আমেরিকার সম্পর্ক কী? সম্পর্ক গভীর। আমেরিকা যখন থেকে বিশ্ব রাজনীতিতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তখন থেকে পাকিস্তান তার সঙ্গী হয়েছে। একইভাবে সঙ্গে ছিল সৌদি আরবও। অর্থাৎ আমেরিকা-সৌদি আরব-পাকিস্তান একটা চেইন অব কমান্ড প্রতিষ্ঠা করেছে। বিশ্বব্যাপী সুন্নী মুসলিমদের প্রধান নেতা হলো সৌদি আরব। উল্লেখ্য, সৌদি আরব নিজ কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মিত্র পক্ষের সঙ্গে গোপন চুক্তি করে ওসমানিয়া সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দিয়েছিল। যুদ্ধের পর আরবরা তো কোনো ক্ষমতা পেলই না বরং ফিলিস্তনে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হলো। দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে ইহুদিরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে দলে দলে ফিলিস্তিনে আসার অনুমতি পেল, জমি কেনার অধিকার পেল এবং সবশেষে ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমর্থন পেল। শুধু ফিলিস্তিন নয় আরব জাগরণের কেন্দ্রভূমি ও উন্নত সংস্কৃতির অধিকারী সিরিয়া যাতে দাঁড়াতে না পারে সেই ষড়যন্ত্রের সাথেও যুক্ত ছিল সৌদি আরব। সৌদি আরব এসময় মুসলিম জাহান রক্ষার চেয়ে ক্ষমতাশালী হওয়ার দিকটি প্রাধান্যে রেখেছে। অর্থাৎ ইসলামী খেলাফতের নেতৃত্ব দেবে সৌদি আরব! শুধু তাই নয় মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ এখন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। সৌদি আরবও করতে যাচ্ছে। দেখার অপেক্ষায় আছি আমাদের অতি মুসলমানরা তখন কী করেন।

পাকিস্তান ১৯৫৫ সাল থেকে আমেরিকার সাহায্য-সহযোগিতায় পুষ্ট হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে পাকিস্তানকে দৃঢ়ভাবে পাশে পেয়েছে আমেরিকা। সেই পাকিস্তান ১৯৭১ সালে ভেঙ্গে গেলে তা আমেরিকার জন্য মোটেই স্বস্তিদায়ক ছিল না। তাই পাকিস্তানের অনুগত শাসক বাংলাদেশে বসাতে আমেরিকার ষড়যন্ত্র উড়িয়ে দেয়া যায় না। এক্ষেত্রেও ধর্ম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ধর্মকে ব্যবহার করে আমেরিকার রাজনৈতিক কৌশলের সূত্রপাত ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। 

থিওডোর হার্জেলের নেতৃত্বে উনিশ শতকের একেবারে শেষে আমেরিকাতে সূত্রপাত হয় ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক আন্দোলন। এরপর ৫০ বছরের মাথায় আমেরিকা তা বাস্তবায়ন করে। আমেরিকা একদিকে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কৌশল অবলম্বন করে অন্যদিকে আরবদের বঞ্চনাকে কাজে লাগিয়ে জঙ্গিবাদের মদদ দেয়। উল্লেখ্য ১৯১৯ সালে প্যারিস শান্তি সম্মেলন চলাকালে কিং-ক্রেন কমিশন মধ্যপ্রাচ্যে যে সফর করেছিল তাতে মার্কিন প্রতিনিধিও ছিল। মার্কিনিরা তখন প্রথমবারের মতো এ অঞ্চলের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার প্রকৃত চিত্র অনুধাবন করে। এরপরই মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কে তাদের কৌশলগত অবস্থান নির্ধারিত হয়। যে আরব জনগোষ্ঠী পাশ্চাত্য শিক্ষা ও অর্থনীতিতে অনগ্রসর তারা কীভাবে এত দামি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটায় তা প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে সহজেই অনুমেয়। এদিকে মুসলিম-তওহিদী জনতা ধর্মান্ধ হয়ে নিজ দেশের মানুষকে হত্যা করে, জাতীয় সম্পদ নষ্ট করে কিংবা জেহাদের ঘোষণা দেয় কিন্তু ইসরাইলের প্রতি হুমকি হতে পারে না। অথচ মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো একত্র হয়ে জোরালো আক্রমণ চালালে তা ইসরাইলের জন্য অবশ্যই হুমকীস্বরূপ হবে। কিন্তু তা আজও সম্ভব হয়নি। এখানে সৌদি আরব বা পাকিস্তান নীরব। রাজনীতিটা এখানেই।

বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমণকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় গোষ্ঠীর যে কার্যকলাপ আমরা প্রত্যক্ষ করলাম তা মনে করিয়ে দেয় ৫০ বছর আগের পাকিস্তানি আক্রমণের কথা। কারণ আক্রমণের প্রকৃতি ও লক্ষবস্তু ছিল এক। এতে খুব সহজেই প্রমাণিত হয় ১৯৭১ ও ২০২১ সালের ঘটনাবলীর মাস্টারমাইন্ড এক। ধরে নিলাম ধর্মান্ধ গোষ্ঠী বাংলাদেশকে তথাকথিত ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করল, ফলাফল কী হবে? পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত মৌলবাদী হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। বৌদ্ধ মিয়ানমারতো মুসলিমদের হত্যা করে দেশত্যাগে বাধ্য করেছে।

এক্ষেত্রে বিশ্বপরিমন্ডলে মায়ানমার বৌদ্ধ চীনের সমর্থন পাবে, আর হিন্দু ভারত ইসরাইল ও আমেরিকার সঙ্গে ইতোমধ্যে তার বন্ধুত্ব পাকাপোক্ত করেছে। তাহলে বাংলাদেশ কার সমর্থন পাবে? সৌদি আরব ও পাকিস্তান তো আমেরিকার সৃষ্টি। সুতরাং দুপাশ থেকে ভারত বা মায়ানমার যা বলবে বাংলাদেশকে তাই মেনে নিতে হবে। মায়ানমার তো এখনই বাংলাদেশের ভূখ- নিজেদের দাবি করে। ফলে দেখা যাবে বাঙালির আত্মপরিচয় বলে কিছুই থাকবে না। এ ভবিষ্যৎ বুঝতে পেরেই বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু বাঙালির সে বোধ কোথায়? আর যা হোক আশে পাশের ধর্মান্ধ মানসিকতা দেখে অন্তত এটা মনে হয় না যে বিশ্ব ও রাজনীতি সম্পর্কে তাদের কোনো জ্ঞান আছে।


লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

এই বিভাগের আরো সংবাদ