আজকের শিরোনাম :

লাগাতার গলছে গ্রিনল্যান্ডের বরফ, কয়েক বছরেই তলিয়ে যাবে বহু শহর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২২, ১০:২৪

গ্রিনল্যান্ডের বরফের পাত গলে যাওয়ায় অনিবার্যভাবে বৈশ্বিক সমুদ্রের স্তর কমপক্ষে ১০.৬ ইঞ্চি বা ২৭ সেন্টিমিটার বাড়িয়ে দেবে। তা জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে যে পদক্ষেপই নেওয়া হোক না-কেন, তাতে এই বরফের পাত গলে যাওয়ায় বিশেষ হেরফের ঘটবে না। কারণ, এটি ‘জম্বি আইস’। যা নিশ্চিতরূপে বরফের মাথা থেকে গলে সমুদ্রে মিশে যাবে। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত গবেষণা নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো গ্রিনল্যান্ডে বরফের ক্ষতি এবং বিশ্বের সমুদ্রপৃষ্ঠের বৃদ্ধি গণনা করেছেন।

‘জম্বি আইস’ কী?
‘জম্বি আইস’ হল মৃত বা ধ্বংসপ্রাপ্ত বরফ। এটা তুষারের অংশ হলেও তার সঙ্গে মিলে যায় না। বরং, ‘জম্বি আইস’ গলে যায় এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে তোলে। গবেষকদলের প্রধান জেসন বক্স জানিয়েছেন, যা ব্যবস্থাই নেওয়া হোক না-কেন, পরিস্থিতি একচুলও বদলাবে না।

কেন এই বরফ গলে যাচ্ছে?
এটি গলে যাচ্ছে উষ্ণায়নের কারণে। গবেষণায় জানা গিয়েছে, গ্রিনল্যান্ডের বরফের মাথা থেকে তুষার কয়েক দশক ধরে গলে নীচে পড়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করছেন এরপর কী হবে? গবেষকরা বলছেন,
গ্রিনল্যান্ডের মোট বরফের ৩.৩% গলে যাবে। বিশ্বের তাপমাত্রা না-বাড়লেও এটা হবেই। তবে উষ্ণতা আরও বৃদ্ধির পূর্বাভাস রয়েছে। এর ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আরও বাড়বে। গবেষণায় বলা হয়েছে, গ্রিনল্যান্ডে ২০১২ সালের মত রেকর্ড বরফ গললে সমুদ্রস্পৃষ্ঠের উচ্চতা ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত বাড়তে পারে।

তবে সেটা কতদিনে, তার কোনও সময় নির্দেশ করেননি বিজ্ঞানীরা। শুধু জানিয়েছেন, সম্ভবত এই শতাব্দীর মধ্যেই গলে যেতে পারে বরফ। আলাস্কা ফেয়ারব্যাংকস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান বিজ্ঞানী জন ওয়ালশ জানিয়েছেন, অতীতে যা ঘটেছে, তার ওপর নির্ভর করেই কী হতে চলেছে, তা অনুমান করা যায়।

সমুদ্রপৃষ্ঠ ১০ ইঞ্চি বৃদ্ধির অর্থ কী?
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে সমুদ্রস্তরের অনিবার্য বৃদ্ধি, উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য একটি খারাপ খবর। UN Atlas of the Oceans এর নথি অনুযায়ী, বিশ্বের ১০টি বৃহত্তম শহরের মধ্যে 8টি শহরই কোনও না-কোনও উপকূলের কাছাকাছি। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বন্যা, জোয়ার এবং ঝড় ঘন ঘন উঠবে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। কারণ, তার প্রভাব পৌঁছবে স্থলভাগের অভ্যন্তরে। যার অর্থ হল স্থানীয় অর্থনীতি এবং পরিকাঠামোর বিপদ। পাশাপাশি, নিচু উপকূলীয় অঞ্চলগুলোও এর ফলে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০১৯ সালের গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘বর্তমানে বিশ্বের ৫৭০টিরও বেশি উপকূলীয় শহরে আনুমানিক ৮০ কোটি মানুষ মানুষ ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ০.৫ মিটার বাড়লেই বাস্তুচ্যুত হবেন।’

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ