আজকের শিরোনাম :

জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃষির বিস্তারে কমছে কীটপতঙ্গ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২২, ১৫:৪৫

জলবায়ু পরিবর্তন ও ব্যাপকভাবে কৃষির বিস্তার বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে কীটপতঙ্গের বংশবিস্তারে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এসেছে, বিশ্বের বিভিন্ন অংশে পোকামাকড়ের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে আর এদের বংশবিস্তার সবচেয়ে বেশি কমেছে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকায়। 

যুক্তরাজ্যের গবেষকরা বলছেন, কীটপতঙ্গের কিছু প্রজাতি একেবারেই বিলুপ্ত হওয়ার আগেই স্বীকার করতে হবে, মানুষ কীটপতঙ্গের জন্য কী পরিমাণ হুমকি সৃষ্টি করেছি।

এই গবেষক দলের নেতা ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) ড. চার্লি আউথওয়েট বলেছেন, ‘পোকামাকড় কমে যাওয়া কেবল প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্যই নয়, মানুষের স্বাস্থ্য এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে।’

পোকামাকড়ের বাস্তুসংস্থান টিকিয়ে রাখার গুরুত্বই এই গবেষণার উপাত্তে উঠে এসেছে বলে জানান তিনি। 

‘অতিমাত্রায় কৃষি সম্প্রসারণের গতি কমাতে হবে এবং জলবায়ূ পরিবর্তন রোধে কার্বন নির্গমন কমাতে হবে,’ বলেন এ গবেষক।

পোকামাকড়ের বংশবিস্তার কমার এই হার বিশ্বজুড়ে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। যদিও এই প্রক্রিয়াটি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে একরকম নয়। কোথাও কিছু পোকামাকড় কমলেও কোথাও কোথাও আবার পরিস্থিতির খুব একটা হেরফের হয়নি। 

গবেষণার জন্য বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৬ হাজার জায়গা থেকে মৌমাছি, পিঁপড়া, প্রজাপতি, ঘাসফড়িং এবং ড্রাগনফ্লাইসহ প্রায় ২০ হাজার প্রজাতির কীটপতঙ্গের নমুনা ও তথ্য সংগ্রহ করেছেন গবেষকরা।

নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষাপত্র অনুযায়ী, এসব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেসব এলাকায় উষ্ণায়ন এবং কৃষির প্রভাব কম, সেসব এলাকার চেয়ে অতিরিক্ত কৃষিপ্রবণ এবং অতিরিক্ত গরম এলাকায় কীটপতঙ্গের সংখ্যা ৪৯ শতাংশ কম এবং অন্যান্য প্রাণীর সংখ্যা ২৭ শতাংশ কম। 

এরপরেও আশার কথা বলছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, গরম আবহাওয়ায় যেসব পোকামাকড়ের ছায়া প্রয়োজন তাদের জন্য আলাদা একটি আশ্রয়ণ তৈরি করা যায়। 

গবেষক ড. টিম নিউবোল্ড যোগ করেন, কৃষিকাজ ব্যাপকভাবে চলে এমন এলাকায় এমনভাবে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল গড়ে তোলা যায়, যাতে চাষাবাদের এলাকায়ও প্রয়োজনীয় কীটপতঙ্গ বংশবিস্তার করতে পারে। 

আরেক গবেষক পিটার ম্যাককন বলেছেন, ‘সার্বিকভাবে পরিবেশের জন্য কীটপতঙ্গের গুরুত্বটা আমাদের বুঝতে হবে। তাছাড়া আমরা যে তাদের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছি, সেটা কিছু প্রজাতি বিলুপ্তির আগেই আমাদের স্বীকার করে নিতে হবে।’
তথ্যসূত্র : বিবিসি

এবিএন/এসএ/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ