মনে হয়েছে আমি যুদ্ধাপরাধী : মাহি

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৩, ২১:৫৫

নিজের সঙ্গে হওয়া পুলিশের আচরণকে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে হওয়া আচরণের মতো তুলনা করেছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামের চাওয়ায় তার সঙ্গে এমন আচরণ হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন তিনি।
শনিবার (১৮ মার্চ) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার ও কারাগারে যাওয়ার পর জামিন পান মাহি। রাতে ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে তাকে স্বজদের হাতে তুলে দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার মো. আনোয়ারুল করিম।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে মাহি বলেন, ‘আমার সঙ্গে জেলা কারাগারের কর্মী ও বন্দিরা ভালো ব্যবহার করেছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে তারা মানুষ। তারা জানেন কীভাবে একজন প্রেগন্যান্ট নারীকে সম্মান দিতে হয়। তবে ইমিগ্রেশন থেকে শুরু করে কারাগারে নেয়া পুলিশ সদস্যরা আমার সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, মনে হয়েছে আমি যুদ্ধাপরাধী। আমাকে এক বোতল পানি দিতেও তারা এক ঘণ্টার বেশি সময় নিয়েছে।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের জমি দখলের বিষয়ে অভিযোগ দিতে গেলে কোনো সহায়তা করেননি। উল্টো তিনি আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। বিরোধী পক্ষের হয়ে তিনি আমাদের জায়গা দখলে সহায়তা করতে চেয়েছেন। নয়তো তিনি আমাদের জিডি গ্রহণ করতেন, বা সঠিক তদন্তের ব্যবস্থা করতেন।’
এ সময় মাহি তাদের গাড়ির শো রুমের কর্মীদের ধরে নেয়াসহ স্বজনদের হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনি একজন পুলিশ কমিশনার। তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন না।’
এর আগে বিকেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন মাহির জামিন মঞ্জুর করেন।
মাহির আইনজীবী জানান, প্রেগনেন্সি ও সেলিব্রেটি বিবেচনায় আদালত তাকে জামিন দেয়া হয়।
পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর মাহিকে গাজীপুর জেলা কারাগারে নেয়া হয়। এরআগে, দুপুর ১২টার দিকে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে মাহিয়া মাহি সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
ওমরাহ পালন করতে যাওয়া মাহি সৌদি আরবের মক্কা শহর থেকে শুক্রবার (১৭ মার্চ) ভোরে ফেসবুক লাইভে আসেন। লাইভে স্বামী রকিব সরকারের গাড়ির শোরুম ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ করেন।
মাহি দাবি করেন, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্ব পাশে ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামে তার স্বামীর একটি গাড়ির শোরুম রয়েছে। সেই শোরুমে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীরা তার শোরুমের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা শোরুমের বিভিন্ন আসবাব, দরজা-জানালার কাঁচ, টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করেছে। শোরুমের সাইনবোর্ডও খুলে ফেলেছে। দুর্বৃত্তরা তার অফিসকক্ষ তছনছ করে টাকাপয়সা লুট করে নিয়ে গেছে।
ইসমাইল হোসেন ওরফে লাদেন ও মামুন সরকারের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন মাহি।
লাইভে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বিরুদ্ধে ‘ঘুষ’ নেয়ার অভিযোগ তোলেন মাহি। পরে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে মাহিয়া মাহি ও রকিব সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশ। শুক্রবার রাতে বাসন থানার এসআই রোকন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এছাড়া জমি দখলের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে হুকুমের আসামি করে আরও একটি মামলা দায়ের করেন স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি
এই বিভাগের আরো সংবাদ