আজকের শিরোনাম :

আজ ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী তনুজার জন্মদিন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:২৭

১৯৭০ সালের ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ২০ লাখ মানুষ মারা যায়। সেই জলোচ্ছ্বাসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার আলমগীর কবির নির্মাণ করেন ‘সীমানা পেরিয়ে’ চলচ্চিত্রটি। এটি মুক্তি পায় ১৯৭৭ সালে। সেই সিনেমাতে অভিনয় করেন বুলবুল আহমেদ, জয়শ্রী কবির, মায়া হাজারিকা, কাফী খান, গোলাম মোস্তফা ও বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তনুজা। তনুজা মুখার্জি কাজল ও তানিশার মা। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর ৭৯তম জন্মবার্ষিকী।

তনুজা মুখার্জি ১৯৪৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ের এক মারাঠি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা কুমারসেন সমর্থ ছিলেন কবি ও চলচ্চিত্র পরিচালক আর মা শোভনা সমর্থ চল্লিশের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। এই দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় তিন মেয়ে আর এক ছেলে। তনুজা ছিলেন দ্বিতীয় সন্তান।

তনুজা মুখার্জি একজন বহুমুখী ভারতীয় অভিনেত্রী। তিনি মাত্র পাঁচ বছর বয়সে ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন; সক্রিয় ছিলেন ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত। অনেক বিরতির পর ২০০২ সালে তিনি আবার কাজ শুরু করেন। ভিলা থেরেসারে একটি কিন্ডারগার্টেন থেকে পড়াশোনা শুরু করলেও পড়াশোনা প্রতি আগ্রহ ছিল কম। তাই অভিনয় জগতের মনোনিবেশ করেন। তার সুন্দরী মায়ের সাজসজ্জা খুব ভালো লাগত।

বড় বোন নূতনের সঙ্গে ‘হামারি বেটিৎ’ (১৯৫০) সিনেমাতে ‘বেবি তনুজা’ নামে শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ‘ছাবিলি’ (১৯৬০) চলচ্চিত্রের তিনি মূল নায়িকা হিসেবে অভিনয় শুরু করেন। সিনেমাটির পরিচালক ছিলেন তার মা শোভনা। তিনি কিদার শর্মার ‘হামারি ইয়াদ আয়েগি’ (১৯৬১) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে খ্যাতির শিখরে পৌঁছান।

 পরিচালক শহীদ লতিফের ‘বাহারেঁ ফির ভি আয়েঙ্গি’ (১৯৬৬) সিনেমাতে ‘ওহ্হাসকে মিলে হামসে’ গানের মাধ্যমে তিনি সবার নজর কাড়েন। জিতেন্দ্রর সঙ্গে ‘জিনে কি রাহে’ (১৯৬৯) সিনেমাতে অভিনয় করে ব্যাপক ব্যবসাসফল হন। ওই বছর তনুজা ‘পয়সা ইয়ে পেয়ার’ সিনেমার মাধ্যমে ফিল্ম ফেয়ারে সেরা সহ-অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। ‘হাতি মেরে সাথি’ (১৯৭১) চলচ্চিত্রটি সফলতা লাভ করে। পরবর্তী সময়ে ‘মেরে জীবন সাথি’, ‘দো চোর’, ‘একবার মুসকরা দো’ (১৯৭২), ‘পবিত্র পাপী’ (১৯৭০), ‘ভূত বাংলা’, ‘অনুভব’ ইত্যাদি সিনেমাতেও তিনি অভিনয় করেন।

ষাট দশকের সময়ে তনুজা কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্রেও সমানতালে অভিনয় শুরু করেন। তিনি মনে করেন, বাংলা চলচ্চিত্র তাকে অন্য একটা মাত্রা দিয়েছেন এবং সেটাতে তিনি আত্মতৃপ্তি পেতেন। বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি উত্তমকুমারের বিপরীতে অভিনয় করেন ‘দেয়া নেয়া’ (১৯৬৩), ‘অ্যান্টনি-ফিরিঙ্গি’ (১৯৬৭), ‘রাজকুমারী’ (১৯৭০) অন্যতম।

উত্তমকুমার ছাড়াও তিনি সৌমিত্র চ্যাটার্জির বিপরীতে কয়েকটি ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ‘তিন ভুবনের পাড়ে’ (১৯৬৯) ও ‘প্রথম কদম ফুল’ অন্যতম। অনেক দিন বিরতির পর তিনি ‘সাথিয়া’ (২০০২), ‘রুলস’ (২০০৩), ‘খাকি’ (২০০৪) ও ‘সন অব সরদার’সহ আরও কিছু চলচ্চিত্র অভিনয় করেন। ছোট পর্দাও বেশ কিছু অভিনয় করেছেন। ‘বাব্বান ভাই ভার্সেস বিমলা তাই’ ও ‘আরম্ভ’ উল্লেখ্য করা যেতে পারে।

জীবনে অনেক সংগ্রাম ও সাধনা করে তনুজা ভারতীয় চলচ্চিত্রের নিজের একটা জায়গা করে নিয়েছেন। একবার এক সাংবাদিক তাকে তার আত্মজীবনী লেখার বিষয় প্রশ্ন করলে তিনি বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘কোনো দিনই লিখব না। বই পড়তে ভালোবাসলেও লিখতে পারি না। তা ছাড়া এত দিন ধরে এত ইন্টারভিউ দিয়েছি, সেগুলো নিয়ে রিসার্চ করলেই জীবনী লেখার রসদ পাওয়া যাবে। কারও মনে হলে সে লিখতে পারে। আমার ইচ্ছে নেই।’

হিন্দি, বাংলা, মারাঠি আর গুজরাতি সিনেমাতে কাজ করে এই অভিনেত্রী পেয়েছেন অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ