আজকের শিরোনাম :

শনিবার বাজারে আসছে সুস্বাদু হাড়িভাঙা আম

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৩, ১৩:১৩

রংপুরের বিষমুক্ত ও অতি সুমিষ্ট আঁশহীন হাঁড়িভাঙা আম এবার নির্দিষ্ট সময়ের ১০ দিন আগেই বাজারে আসছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ২০ জুনের পরিবর্তে ১০ জুন থেকে গাছ থেকে আম পাড়া শুরু হবে। সে হিসেবে আগামীকাল থেকেই বাজারে আসছে হাড়িভাঙা আম।

শুক্রবার (৯ জুন) রংপুর জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। তারা জানান, বুধবার (৭ জুন) দুপুরে এ সংক্রান্ত নোটিশ জারি করে রংপুর জেলা প্রশাসন।

এর আগে সোমবার আম পাড়ার সময় এগিয়ে নেওয়ার জন্য রংপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন চাষিরা। তাদের দাবি ছিল, ২০ জুনের পরিবর্তে ১০ জুন থেকে বাজারে হাঁড়িভাঙা আম সরবরাহের ব্যবস্থা করা।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন জানান, পদাগঞ্জ থেকে হাঁড়িভাঙা আম চাষিরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। তাতে তারা দাবি করেছিলেন, হাঁড়িভাঙা আম ২০ জুনের পরিবর্তে ১০ জুন থেকে বাজারজাত করতে চান তারা। কারণ অনাবৃষ্টির কারণে আম পাকা শুরু হয়েছে, আম পরিপুষ্ট হয়েছে। আমের সাইজও ছোট হয়ে যাচ্ছে। আম বাগানে রাখা যাচ্ছে না। সে কারণে সরকার নির্ধারিত ২০ জুন যদি আম বাজারজাত শুরু হয়, তাহলে অনেক আম বাগানেই নষ্ট হয়ে যাবে। এতে আম চাষি, বাগানি ও ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়বে। ফলে তারা তারিখ এগিয়ে আনার দাবি জানান।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, স্মারকলিপি পাওয়ার পর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে বিষয়টি নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়। তারা সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তাদের প্রতিবেদনের আলোকে ২০ জুনের পরিবর্তে এবার হাঁড়িভাঙা আম ১০ জুন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাত করা হবে।

চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, আবহাওয়ার কারণেই মূলত আগেই হাঁড়িভাঙা আম এবার পেকেছে। সে কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমি আম চাষি, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের পরিপুষ্ট ও মানসম্মত আম যথাসময়ে নিয়ম মেনে বাজারজাত করার আহ্বান জানাই।

মিঠাপুকুর উপজেলার আখিরাহাট, পদগঞ্জ, মাঠেরহাট, বদরগঞ্জের গাপোলপুর, লাগেরহাট, সর্দারপাড়া, রংপুর নগরের বড়বাড়ী, সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী ইউপিরকাটাবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল বিশাল বাগানে সারি সারি আম গাছ। এবার জেলার এসব এলাকায় প্রায় ৩ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে সব জাতের আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে রয়েছে হাঁড়িভাঙা আম।

এবার জেলায় আম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৭৩০ টন। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙা আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৭০০ টন। আবহাওয়া ভালো থাকলে শুধু হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি করে ২০০-২৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারবেন এ জেলার আম চাষিরা। বিগত কয়েক বছর ধরে রংপুর অঞ্চলকে সমৃদ্ধির দিকে নেওয়া সুস্বাদু, মিষ্টি ও রসালো ফল হাঁড়িভাঙার কদর এখন দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে।

মৌসুমের শুরুতে হাঁড়িভাঙার চাহিদা বেশি থাকায় এর দাম কিছুটা বেশি থাকবে। সেক্ষেত্রে প্রতি কেজি হাড়িভাঙা আম ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে পারে। বাজারে হাড়িভাঙা কেনা ছাড়াও বড় বড় বাগান মালিকদের সঙ্গে সরাসরি এবং অনলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ করেও আম সরবরাহ করা যাবে।

জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, হাঁড়িভাঙা আমের বাজারজাত করতে যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়, সেটি মনিটরিং করা হবে। বিশেষ করে পরিবহনে ব্যবসায়ীদের কোনো হয়রানির শিকার হতে না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি সরকারি পরিবহন সুবিধার বিষয়টিও দেখা হবে।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ