আজকের শিরোনাম :

মার্চের প্রথম সপ্তাহে আসবে আদানির বিদ্যুৎ : প্রতিমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:০৯ | আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:০৯

ভারতীয় কোম্পানি আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ মার্চের প্রথম সপ্তাহে আসবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। 

আজ রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি। 

নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়ার চেষ্টা করছি। যার জন্য গ্যাসও আমরা বৃদ্ধি করছি। গ্যাসের দাম কিছুটা স্থিতিশীল। আমরা শিল্পে গ্যাস নিরবচ্ছিন্ন রাখার চেষ্টা করছি, বিদ্যুতেও গ্যাসের পরিমাণ বাড়াবো, যাতে ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে মার্চসহ বিদ্যুতের অবস্থা ভালো থাকে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে, সেগুলো একটার পর একটা আসা আরম্ভ হবে। আমরা পায়রা তো পাচ্ছি, পুরোটাই পাচ্ছি আমরা। আমরা আশা করছি রামপালও চলে আসবে। আমরা আশা করছি বরিশালের ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র চলে আসবে। আমরা আশা করছি, এসএস পাওয়ার সেটা চলে আসবে।’

‘আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে যে বিদ্যুৎ আমরা আনবো, সেটা আশা করছি আগামী মাসের (মার্চ) প্রথম সপ্তাহ থেকে বিদ্যুৎ পাবো।’

আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে অর্ধেক ৭৫০ মেগাওয়াট এবং দ্বিতীয় ইউনিট থেকে এপ্রিলে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে বলেও জানান নসরুল হামিদ।

গণমাধ্যমে এসেছে আদানির বিদ্যুৎ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা খুবই বাজে কথা। আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র আমরা নিজেরা দেখতে গিয়েছিলাম। আমাদের টিম গিয়েছিল, সেখানে আমি ছিলাম। তারা বহু আগেই বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বলেছিল। আমরা যেহেতু ফেব্রুয়ারির শেষে একটা তারিখ নির্ধারণ করেছি, সেদিনই আমাদের সিওডি (কমার্শিয়াল অপারেশন ডেট) হবে। সিওডি হওয়া মানেই আমরা আশা করছি মার্চের প্রথম সপ্তাহে বিদ্যুৎ পাবো।’

আদানির সঙ্গে চুক্তির সংশোধনীর কথা বলা হচ্ছে- এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যা চুক্তি হয়েছে, তাই থাকবে। সেখানে বেশিকম হবেই। এটা নির্ভর করে বিশ্বের প্রাইস ও ইনডেক্সের উপর। যেভাবে আমাদের চুক্তি হয়েছে সেভাবেই আমরা বিদ্যুৎ আনব।’

কয়লাম দাম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশাবাদী কয়লার দাম এখন যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় নিলে আমরা প্রতিযোগিতামূলক দামে পাবো। কারও থেকে কারও বেশি না।’

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করছি তেলভিত্তিক বিদু‌্যৎকেন্দ্র পুরোটাই আমরা বন্ধ রাখবো। স্পট মার্কেট ও লং টার্ম মিলিয়ে হয়তো সাড়ে ৭০০ এমএমসিএফ গ্যাস আনা হবে।’

গ্যাসের বর্ধিত মূল্য ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের নভেম্বরে আদানি গ্রুপের পাওয়ার সংস্থার সঙ্গে ২৫ বছরের বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিপি)। সেই অনুযায়ী ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার প্রায় ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লানির্ভর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা বাংলাদেশের। মুর্শিদাবাদ সীমান্ত হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং বগুড়ায় পৌঁছবে সেই বিদ্যুৎ।

তবে ঝামেলা শুরু হয় কয়লার দাম নিয়ে। দেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য বাংলাদেশ যে দরে কয়লা কিনেছে, আদানির কারখানায় টনপ্রতি কয়লার দর প্রায় ১০০ ডলার (৮ হাজার ২২৩ টাকা) বেশি পড়ছে। ফলে বেড়ে যাবে বিদ্যুতের দাম। এই অবস্থায় ‘নিউক্যাসেল সূচক’ অনুসরণ করে আমদানি করা কয়লার দাম নির্ধারণের জন্য আদানি গোষ্ঠীর কাছে বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ।

এদিকে ভারতীয় ব্যবসায়ী ও বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর শেয়ারে নাটকীয় পতন ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো বাজার কারসাজি এবং জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত। এমন অভিযোগ করার পর আদানির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যদিও আদানি গ্রুপ এই অভিযোগকে 'মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়' বলে অভিহিত করেছে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ