আজকের শিরোনাম :

খাগড়াছড়ির তিন উপজেলায় বজ্রপাতে মা ও শিশুসহ চারজনের মৃত্যু

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৪, ১১:৫২

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ৩টি উপজেলায় পৃথক ঘটনায় পাহাড়ে বজ্রপাতে মা ও শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার দীঘিনালা উপজেলায় মধ্যবেতছড়ি গোরস্থান পাড়ায় বজ্রপাতে বসতঘরে আগুন লেগে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিভিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রোববার (৫ মে) ভোর ৫টায় এই ঘটনা ঘটে। এসময় পৃথক পৃথক বজ্রপাতে মাটিরাঙ্গা উপজেলা তিনটি ও রামগড়ে দুটি গবাদিপশুসহ মৃত্যু হয়েছে।

নিহতরা হলেন দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের মধ্য বেতছড়ি গোরস্থান গ্রামের হাসিনা বেগম(৩০) ও তার ছেলে হানিফ মিয়া(৮) এবং রামগড় উপজেলা রামগড় ইউনিয়নের দূর্গম হাজাছড়া এলাকার কংজ্র মারমার ছেলে গনজ মারমা(৫০), মাটিরাংগা উপজেলার বেলছড়ি ইউনিয়নের শশী কার্বারী পাড়ার সুমিতা ত্রিপুরা(৩৬)। 

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়, রবিবার ভোর ৫টার দিকে হাটাৎ ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়, হটাৎ ছাদেক মিয়ার বসত ঘরে বজ্রপাত পরে নিমিষেই পুরো ঘর আগুন পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ঘরের ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় ছাদেক মিয়ার স্ত্রী ও পুত্র ঘরের ভেতরে আগুন পুড়ে মারা যান এবং ছাদেক মিয়ার বড় ছেলে মো: হাবিব(৯) ফজরের নামাজের জন্য বের হয়ে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান।

তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ঘটনার পরপরই দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: কাশেম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: নুরুল হক, মেরুং ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম লাকী, ভাইস-চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মিন্টু ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান সীমা দেওয়ান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শোকাহত পরিবারের খোঁজখবর নেন।

দীঘিনালা মেরুং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম লাকি জানান, বজ্রপাতে হাসিনা বেগমের টিনের ঘরটি পুড়ে নিহতদের মরদেহ অঙ্গার হয়ে গেছে। ঘটনার সময় তার গাড়ি চালক স্বামী ছাদেক আলী বাড়িতে ছিলেন না।

দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: নুরুল হক জানিযেছেন, মরদেহগুলোর উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে।

অপরদিকে জেলার রামগড় উপজেলার ১নং ইউনিয়নের দুর্গম হাজাছড়া এলাকায় বজ্রপাতে গনজ মারমাসহ তার ২টি গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে।

রামগড় থানার ওসি দেবপ্রিয় দাশ জানান, বজ্রপাতের সময় বাড়ির উঠানে বাঁধা গরু গোয়ালঘরে আনতে গিয়ে গরুসহ তার মৃত্যু হয়েছে।

অন্যদিকে মাটিরাঙ্গা থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর জানিয়েছেন, মাটিরাঙ্গার বেলছুড় ইউনিয়নের শশী কার্বারী পাড়াার সুমিতা ত্রিপুরা নামে এক মহিলা বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। লাশটি উদ্ধার কওে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

এদিকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় মেরুং ইউনিয়নের মধ্য বেতছড়ি গোরস্থান পাড়া এলাকায় বজ্রপাতে আগুন ধরে মা-ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মামুনুর রশীদ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে নগদ ২০হাজার টাকা, শুকনো খাবার ও কম্বল প্রদান করে। সহায়তা প্রদান শেষে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দূযোর্গ কারো হাত নাই। বজ্রপাতে আগুন ধরে মা-ছেলে মারা গেছে সত্যি মর্মান্তিক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২০হাজার টাকা, শুকনো খাবার ও কম্বল দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সরকরি ঘর তৈরি করে দেয়া হবে। এবং সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে। পরিদর্শন কালে উপস্থিত ছিলেন, মেরুং ইউপি চেয়ারম্যান মোছা: মাহমুদা বেগম লাকী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: আবদুস সালাম।

উল্লেখ্য রোববার (৫ মে) ভোর ৫টার দিকে মেরুং ইউনিয়ন মধ্যবেতছড়ি গোরস্থান পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, মো. ছাদেক মিয়ার স্ত্রী মোছা. হাসিনা বেগম(৩০) ও পুত্র মো: হানিফ মিয়া(৮)। 

এবিএন/চাইথোয়াই মারমা/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ