গাজীপুরে রেল দুর্ঘটনা: ২১ ঘণ্টা পরও শেষ হয়নি উদ্ধার অভিযান

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ১১:২২

গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশনের এক কিলোমিটার দূরে ছোট দেওড়া এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা তেলবাহী ওয়াগন ও যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষের ২১ ঘণ্টা পার হলেও শেষ হয়নি উদ্ধার অভিযান। ডাবল লাইনের ঢাকা জয়দেবপুর রেলরুটের একটি লাইন দিয়ে চলাচল করছে ট্রেন।এর আগে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে স্টেশনের দক্ষিণে আউটার সিগন্যালে সংঘর্ষে এ দু’টি ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। আহত হন লোকোমাস্টারসহ চারজন।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ছোট দেওড়া এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা তেলবাহী ওয়াগন ও যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনার পর জয়দেবপুর স্টেশন দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম রুটের ট্রেন চলাচল ২ ঘণ্টা বন্ধ হয়ে যায়।

বিকেলে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর উদ্ধার তৎপরতা শুরু  হয়। এছাড়া টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের পেছনের অংশের অক্ষত বগিগুলো বিকল্প ইঞ্জিনের মাধ্যমে দুর্ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। রাতভর উদ্ধার অভিযানে তেলবাহী ওয়াগনের লাইনচ্যুত ৫টি বগির মধ্যে তিনটি বগি অপসারণ করে পার্শ্ববর্তী স্টেশনে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত ৪টি বগি রেল লাইনের পাশে ফেলে রাখা হয়েছে। দু’টি ইঞ্জিন ও ওয়াগনের দু’টি বগি উদ্ধার তৎপরতা চলছে। রেলওয়ের উদ্ধারকারী দলের দাবি, এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে পুরো উদ্ধার তৎপরতা সম্পন্ন হবে।

এদিকে, দায়িত্বে অবহেলার কারণে জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার মো. হাশেম, পয়েন্টম্যান সাদ্দাম হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে তারা পালাতক রয়েছেন। জয়দেবপুরের স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী মিয়া জানান, গতকাল পৌনে ১১টার দিকে টাঙ্গাইল কমিউটার ও মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। রেললাইনের পয়েন্টের ভুলের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মালবাহী ট্রেনের পাঁচটি এবং যাত্রীবাহী ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। কমিউটার ট্রেনটিতে যাত্রী কম ছিল। এ কারণে হতাহত মানুষের সংখ্যা কম।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়েন্টের ভুলের এমটি রেক (যাত্রীশূন্য) ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে আপঘুন্টি স্টেশন মাস্টার হাশেম ও পয়েন্টসম্যান সাদ্দাম হোসেনসহ তিনজন  বরখাস্ত করা হয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও গাজীপুর জেলা প্রশাসন ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। দায়িত্বরত রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনের যন্ত্রাংশ ও তেল যেন খোয়া যেতে না পারে তার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। গাজীপুর মহানগর পুলিশের ফিক্সড ও টহল টিম, র‌্যাব সদস্য, ২ প্লাটুন বিজিবি, আনসার সদস্য এবং রেলওয়ে পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। তবে সন্ধ্যার দিকে বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে অন্যদের রেখে চলে যান। ঘটনাস্থলে অগ্নি সতর্কতায় কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল।

এবিএন/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ