কচুয়ায় জীবন সংগ্রামে জয়ী পাঁচ নারীকে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা প্রদান

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৮

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার জীবনযুদ্ধে জয়ী পাঁচ সংগ্রামী নারীকে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা দিয়েছে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। সমাজের নানা প্রতিকূলতা ও নির্যাতন পেরিয়ে তারা সফলতা অর্জন করেছেন। 

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনোয়ারা খানম শনিবার জানান, জীবন সংগ্রামে সফল হওয়া এসকল নারীকে সরকার জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ কর্মসূচির আওতায় অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী, শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী, সফল জননী, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমী, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাথার জন্য ২০২৩ সালে সম্মান জনক এই পদক দেয়। তাদের সংগ্রামী জীবন কাহিনী অত্যন্ত হৃদয়স্পর্শী ও শিক্ষণীয়। পাঁচজন নারীর সংগ্রম জীবনের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হলো।

অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী, টেংরাখালী গ্রামের কাজী শহীদুল ইসলামের স্ত্রী রেজা আল আসমাউল হুসনা। সে স্বামীর সংসারে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল ছিলেন। প্রথমে বাড়ি বসে খাবার তৈরি করে মানুষের বাসায় পৌছেঁ দিতেন। লাভবান হওয়ায় একটি দোকান ভাড়া নেন। যুব উন্নয়ন থেকে  এক লক্ষ টাকা লোন নিয়ে হোটেল চালু করেন। এথন তার হোটেলে বিরিয়ানীসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার বিক্রি করা হয়। বর্তমানে তিনি অর্থনৈতিকভাবে সফল একজন নারী ।

শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী, গোপালপুর গ্রামের সাহেব আলি সেখের কন্যা মোসা: তাছলিমা খানম ১৯৯২ সালে ৮ম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় তার বাবা মারা যান। এরপর টিউশনি করে নিজে এবং অন্য ভাইবোনদের লেখাপড়া শেখান। নিজে এইচ.এস.সি পাশ করে। এরপর ২০০০ সালে প্রাইমারী স্কুলে সহকারি শিক্ষক পদে যোগদান করেন এবং এখনো কর্মরত আছেন।

সফল জননী, কচুয়া সদরের অনিল কৃষ্ণ সাহা স্ত্রী অপর্না রানী সাহা এসএসসি পাশ। তাঁর স্বামীর অস্বচ্চলতার কারনে নিজে সেলাই মেশিন এর কাজ ও গরু পালতেন। অভাবের কারনে তিনি সন্তানদের নিজে পড়াতেন। তাঁর ৩ সন্তান এখন সুপ্রতিষ্ঠিত। চন্দনা রানী সাহা এম,এস,এস শিক্ষকতা, চন্দ্রবান সাহা এম,এ,এল,বি আয়কর আইনজীবী, চন্দ্রা রানী সাহা এম,এ উপ-পরিচালক, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুর।

 নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমী, বিলকুল গ্রামের আশরাফ হাওলাদারের কন্যা সামছুর নাহার সে অল্প বয়সে নিজের পছন্দে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের ২ বছরের মধ্যে শুরু হয় তার উপর স্বামীর অমানুষিক নির্যাতন। তার স্বামী পরকীয়ায় জড়ানোর কারনে নির্যাতনের মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে সন্তানসহ বাড়ী থেকে বের করে দেয়। তিনি অসহায় অবস্থায় একজন প্রতিবেশির সহায়তায় ব্র্যাকে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে একটা চাকুরী পান। তার সন্তানকে বি,কম পাশ করিয়েছেন এবং নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।

সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান, গোপালপুর গ্রামের সুচিত্র রঞ্জন মজুমদার কন্যা নন্দিতা রানী উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের সাথে জড়িত রয়েছেন। সমাজের বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্বেও তিনি নিজ এলাকায় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, যৌতুক নিরোধ এর লক্ষ্যে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের সাথে সমন্বয়ে কাজ করেন। সে একটি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য। সে ঝরে পড়া শিশুদের স্কুলগামী করতে কাজ করেছেন। মাদক নির্মূলের জন্য সচেতনতামূলক কাজ করেছেন। মানুষকে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করেছেন। সে সমাজসেবামূলক কাজ করে যাচ্ছে।

এবিএন/শুভংকর দাস বাচ্চু/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ