উলিপুরে টিসিবি পণ্যে নিম্নমানের চাল সরবরাহ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:০৬

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পণ্যে পোকা, পঁচা, দুর্গন্ধযুক্ত ও নিম্নমানের চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার পৌরসভার ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে টিসিবি ডিলার মেসার্স বণ্যা স্টোর ও তবকপুর ইউনিয়নের দুইটি পয়েন্টে তাছনিম ট্রেডার্স ও লুবান ট্রেডার্স এসব নিম্নমানের চাল বিতরণ করেন। এ সময় ভোক্তারা পোকা ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল নিতে অস্বীকৃতি জানালেও অনেকে নিরুপায় ও বাধ্য হয়ে এসব চাল নিচ্ছেন তারা।

নি¤œমানের চাল বিক্রির অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করলেও এর দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন টিসিবি পণ্যে সরবরাহকারী ডিলার মেসার্স বণ্যা স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী বাদশা মিয়া। তিনি বলেন, ভোক্তাদের অভিযোগ ও আপত্তির কথা।

ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) জানিয়েছি ও খাদ্য বিভাগকে ভালো মানের চাল দেওয়ার জন্য বলেছি। তারা যেমন চাল দেন আমরা তেমনটাই বিক্রি করি। একি কথাই বলেন তাছনিম ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী রাকিবুল হাসান তৌফিক ও লুবান ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী সাজ্জাদুল ইসলাম।

জানা গেছে, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় টিসিবি সুবিধাভোগী ৫৩ হাজার ২৬২ জন। গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) পৌরসভার ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৮২২ জন ও তবকপুর ইউনিয়নের ৫, ৬, ৭ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুইটি পয়েন্টে প্রায় দুই হাজার ৮০০ জন সুবিধাভোগীদের মাঝে টিসিবির চাল, ডাল ও তেল বিক্রির তারিখ নির্ধারণ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি টিসিবি ডিলাররা ওএমএস ডিলারদের নিকট চাল সংগ্রহ করে বিক্রি করেন। প্রতিটি প্যাকেজে দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও পাঁচ কেজি করে চাল বিক্রি করা হয়। কিন্ত এসব পণ্যেও মধ্যে পোকা ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল বিক্রি করা হয়। অভিযোগ রয়েছে এসব চালেও ওজনে কম দেন ডিলাররা।

কার্ডধারী রফিকুল ইসলাম জানান, টিসিবি পণ্যের যে চাল দিচ্ছে তা পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত মানুষ খাওয়াতো দূরের কথা গরু-ছাগলকে খাওয়ালে তাদের পেট খারাপ হবে। তার সাথে সুর মিলিয়ে একই কথা বলেন এনামুল, নুরুজ্জামানসহ অনেক ভোক্তা।

আরেক সুবিধাভোগী শরীফা বেগম জানান, আমরা গরিব মানুষ একটু কমদামে টিসিবির মাল নিতে আসি। এখানে পোকা ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল দিচ্ছে, খাওয়া লাগবে উপায় না পেয়ে এই চাল নিলাম। তারা যেমন মাল দিবে তাই নিতে হবে এমন কথা জানান মোর্শেদা বেগম।

ওএমএস ডিলার আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, আমরা খাদ্য গুদাম থেকে চাল উত্তোলন করে টিসিবি ডিলারদের দিয়েছি। চাল খারাপ থাকার কথা না। আমরা তাদের চাল দিয়েছি তারাও দেখে চাল নিয়েছেন।

তবকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বলেন, গত মঙ্গলবার তার ইউনিয়নে দুইটি পয়েন্টে তাছনিম ট্রেডার্স ও লুবান ট্রেডার্স নিম্নমানের চাল বিতরণ করেছেন। 

খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) শফিকুল ইসলাম অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, উলিপুর খাদ্য গুদামে চাল সংকট থাকায় ওই চালগুলো কুড়িগ্রাম সদর থেকে দুই মাস আগে আনা হয়েছে। আমি কুড়িগ্রামে কথা বলেছি চাল পরিবর্তন করে ভালো মানের চাল দিবে।  

উলিপুর পৌর মেয়র মামুন সরকার মিঠু বলেন, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চাল পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত এমন অভিযোগ পাইনি। তবে গত সোমবার ছয় নম্বর ওয়ার্ডের টিসিবির চালে পোকা রয়েছে এমন কথা শুনে তা বিতরণ করতে নিষেধ করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতাউর রহমান বলেন, চালে সমস্যা থাকার অভিযোগ পেয়েছি। নিম্নমানের চাল বিতরণের বিষয়টি অবগত হওয়ার পর তাদের ভালো মানের চাল দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।

এবিএন/আব্দুল মালেক/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ