সুন্দরবনে ১ এপ্রিল শুরু হবে আনুষ্ঠানিকভাবে মধু সংগ্রহ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৯:৪১

প্রতিবছর ১ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে মধু সংগ্রহ। এবার ও সেই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে। তবে মৌসুম শুরুর আগেই চোরা মধু শিকারীরা তৎপর হয়েছে। প্রতিদিন রাত সুন্দরবেনে ঢুকে মধু চুরি করছে। 

বনবিভাগ সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় বিস্তীর্ণ সুন্দরবন অবস্থিত হলেও মূলত বেশি মধু সংগ্রহ করা হয় সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে। এ কারণে প্রায় ২শ বছর যাবত সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে অনুষ্ঠান করে প্রতিবছর ১ এপ্রিল মধু সংগ্রহ করতে যান মৌয়ালরা। আর তা চলতে থাকে ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কয়েক বছর ধরে সুন্দরবনের মধু ফুল খ্যাত খলিশা ফুলের মধু আগের চেয়ে ১৫-২০ দিন আগেই সংগ্রহ করার উপযুক্ত হয়। আর ওই সময় মাছ ধরার অনুমতি নিয়ে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে জেলেরা গোপনে মধু সংগ্রহ করে নিয়ে যান। ফলে মৌয়ালরা বনবিভাগের অনুমতি নিয়েও প্রত্যাশিত মধু সংগ্রহ করতে পারেন না। এ কারণে মৌয়ালরা জানান, অন্তত ১৫-২০ দিন আগে মধু সমংগ্রহর অনুমতি দিলে মধু বেশী পাওয়া সম্ভব। কারণ কিছু বন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় চোরা মধু আহরণকারীরা বনে প্রবেশ করে মধু চুরির ফলে সময় মত মধু মিলছে না। 

শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার রবিউল জানান, সুন্দরবনের মধুর মধ্যে খলিশা ফুলের মধু খুবই সুস্বাধু ও সুমিষ্টি। এ কারণে খলিশা ফুলের মধু বিদেশে রপ্তানি করা হয়। বিশ্বজুড়ে খলিশা ফুলের মধুর চাহিদা রয়েছে বেশি। 

গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাছুদুল আলম জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কয়েক বছর ধরে খলিশা ফুলের মধু আগের চেয়ে ১৫-২০ দিন আগেই সংগ্রহ করার উপযুক্ত হয়। আর ওই সময় মাছ ধরার অনুমতি নিয়ে জেলেরা গোপনে মধু সংগ্রহ করে। প্রত্যাশিত মধু সংগ্রহ করতে না পেরে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন মধু সংগ্রহকারীরা। তিনি জানান, মৌয়ালদের অনুরোধে এ বিষয়ে বনবিভাগকে অবগত করা হয়েছিল কিন্ত বন বিভাগের পক্ষ থেকে তেমন কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। 

বনবিভাগ সূত্র জানা যায়, গত বছর মধু ও মোম আহরণের জন্য ১ হাজার ১২টি অনুমতিপত্র বা পাস দেয়া হয়েছিল। এসব পাসের বিপরীতে ৬ হাজার ৭৯৭ জন মৌয়াল সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের জন্য যান। ওই সময় মৌয়ালরা ৩ হাজার ৩৭৬ দশমিক ৯০ মেট্রিক টন মধু ও ১১৩ দশমিক শূন্য ৯ মেট্রিক টন মোম আহরণ করেন।

এ ব্যাপারে বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন অফিসার ফরেস্টার হাবিবুল আলম জানান, এবার জাকজমক করেই মধু সংগ্রহ অনুষ্ঠান হবে। 

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বন কর্মকর্তা এসিএফ ইকবাল হোসাইন জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বেশ কয়েক বছর ধরে খলিশা ফুল আগে ফুটছে। ফলে মধুও আগে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্ত যথা সময়ে এবার মধুর সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হবে।

এবিএন/আলমগীর সিদ্দিকী/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ