আজকের শিরোনাম :

ধর্মপাশায় চাঁদাবাজির দায়ে দুই হলুদ সাংবাদিককে ঝাড়ুপেটা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৪, ১১:০৫

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় চাঁদাবাজি করার দায়ে দুই হলুদ সাংবাদিককে ঝাড়ুপেটা করেছে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

ঝাড়ুপেটার শিকার হওয়া ওই হলুদ সাংবাদিকরা হলেন  দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ধর্মপাশা উপজেলা প্রতিনিধি মো. মিঠু মিয়া ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি মো.ইসহাক মিয়া।

আহত দুইজনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার বাদশাগঞ্জ বাজারের শামসুন্নাহার মার্কেটে তাদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী  এ হামলার ঘটনাটি ঘটায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে মিঠু মিয়া অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া শেষ করে তিনি অভাবের সংসারের হাল ধরেন। প্রথমে তিনি বাদশাগঞ্জ বাজারের এক দর্জির দোকানে যোগদান করেন কাজ শিখার জন্য। সেখানে কযেকমাস কাজ শিখার পর নিজেই ওই বাজারে একটি দর্জির দোকান দেন। বাদশাগঞ্জ বাজারে সবাই তাকে এখনো মিঠু ট্রেইলার হিসেবেই জানেন। এরমধ্যে গত প্রায় ৫-৬ বছর আগে হঠাৎ করে দর্জির পেশা ছেড়ে দিয়ে সাংবাদিক হয়ে যান মিঠু মিয়া। আইডি কার্ড নিযে আসেন একাধিক অনলাইন পোর্টালসহ আঞ্চলিক পত্রিকার। এর কিছুদিন পর তার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার কার্ড নিয়ে আসেন তিনি। স্থানীয় সাংবাদিকদের পাঠানো বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ কপিরাইট করে তার নিজ পত্রিকায় ছাপানো শুরু করেন। আর এ জন্যে অন্যান্য সাংবাদিকরা তাকে বারবার সতর্ক করার পরও কোনো কাজ হয়নি। তখন থেকেই সাংবাদিকতাকেই তিনি ব্যবসা হিসেবে বেছে নেন মিঠু মিয়া।   প্রত্যন্ত হাওর এলাকার নিরীহ মানুষজনেরকে বিভিন্নভাবে বেকায়দায় ফেলে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই কাজ। ব্যস্ত সময় কাটান সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে দালালী তদবির নিয়ে।   জড়িয়ে যান এলাকার সাধারন মানুষের সাথে প্রতারনাসহ নানান অবৈধ কর্মকান্ড। তিনি এসব অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে ধর্মপাশার পৃথক দুইটি প্রেসক্লাব থেকেই বহিস্কার করা হয়। এমনকি যায়যায়দিন পত্রিকা থেকেও তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে গত প্রায় ৮-৯ মাস আগে বিভিন্নভাবে লবিং করে পূনরায় তিনি যায়যায়দিন পত্রিকার কার্ড নিয়ে আসেন। এর পর থেকে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। এরই মধ্যে সীমান্ত চোরাচালান চক্রের সাথেও গড়ে উঠে তার সখ্যতা।

মাটিকাটা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মোমেন বলেন, মিঠুকে আমরা ট্রেইলার মিঠু হিসেবেই জানতাম। কিন্তু হঠাৎ করে লেখাপড়া না করেই সে এত বড় সাংবাদিক হয়ে গেছে। এলাকার মানুষ তা কিছুই বোঝে উঠতে পারছেনা। বর্তমানে আমাদের মতো সাধারন লোকজন মিঠুর অত্যাচারে অতিষ্ঠ। তিনি আরো বলেন, এলাকার সাধারন কৃষকেরা  হাওর থেকে মাটি কেটে বাড়ি মেরামত করতে গেলেও সাংবাদিক মিঠু মিয়াকে চাঁদা দিতে হয়। তাকে টাকা না দিলে প্রশাসনকে দিয়ে জনগনকে নানাভাবে হয়রানি করে সে। আর এ কারনেই শনিবার দুপুরে এলাকাবাসী মিঠুসহ আরো এক সাংবাদিককে ঝাড়ুপেটা করেছে। আমরা এদেরমতো দূর্নীতিবাজ সাংবাদিকদেরকে এ পেশা থেকে বহিস্কার করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে মারধরের শিকার সাংবাদিক মিঠু মিয়া ও ইসহাক মিয়ার বক্তব্য নেওয়ার জন্য দুইজনেরই ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও দুইজনেরই ফোন বন্ধ রাখায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ধর্মপাশা প্রেসক্লাবের যুগ্ম আহবায়ক মো. ইমাম হোসেন বলেন, এদের মতো সাংবাদিকরা আমাদের সাংবাদিক সমাজের কলঙ্ক। এদের মতো হলুদ সাংবাদিকদের জন্য আজ মূল ধারার সাংবাদিকদেরকে নিয়ে সাধারন মানুষের মুখে বাজে মন্তব্য শুনতে হয়।

এ ব্যাপারে ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা (পিপিএম) বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবিএন/মোঃ ইমাম হোসেন/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ