মোহনগঞ্জে রুবেল হত্যার ঘটনায় মামলা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:০০

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে রুবেল মিয়া (৪৫) নামে এক পিঠা বিক্রেতাকে পরিকল্পিতভাবে গলায় গামছা প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় রবিবার রাতে নিহতের স্ত্রী রিনা আক্তার বাদি হয়ে ৩ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৫-৬ জনকে আসামি করে মোহনগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। 

রবিবার দুপুওে উপজেলার আদর্শনগর বাজার সংলগ্ন সাতমাধলাই নদীর পাড়ে একটি ছাপড়াঘর থেকে রুবেল মিয়ার মরদেহটি উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ থানা-পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ তার মরদেহটি ওইদিন সন্ধ্যায় নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নিহত রুবেল মিয়া পাশের বারহাট্রা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের আলোকদিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত নীল মিয়ার ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার আদর্শনগর বাজারের চৌরাস্তার মোড়ে পিঠা বিক্রি করতেন।
সোমবার রাত ৮টার দিকে মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো.দেলোয়ার হোসেন এ ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার  বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বারহাট্রার আলোকদিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রুবেল মিয়া গত প্রায় ৪-৫ বছর যাবত মোহনগঞ্জ উপজেলার সুয়াইর ইউনিয়নের আদর্শনগর বাজারের পাশের সাতমাধলাই নদীর পাড়ে একটি ছাপড়াঘরে বসবাস করতেন। তিনি সেখানে থেকে বাজারের চৌরাস্তার মোড়ে বসে শীতকালে পিঠা ও গরমকালে আইসক্রিম বিক্রে করে আসছিলেন। আর আদর্শনগর বাজারসহ আশপাশের এলাকায় ভালো পিঠা বিক্রেতা হিসেবে রুবেল মিয়ার রয়েছে  ব্যাপক পরিচিতি। তাঁর দোকানে প্রতিদিন প্রায় ৪-৫ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করা হতো। এরই মধ্যে শনিবার সকালে  রুবেল মিয়ার কাছ থেকে নগদ ৭ হাজার টাকা ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি চোরেরা নিয়ে যায়। এঘটনায় ফয়সাল মিয়া (২০) ও বাপ্পি মিয়া (২১) নামে স্থানীয় দুই বখাটেকে সন্দেহ করেন রুবেল মিয়া। এর পরপরই তিনি রাসেল চৌধুরী নামে বাজারের এক মোবাইল ব্যবসায়ীকে এ বিষয়টি জানান। পরে ব্যবসায়ী রাসেল চৌধুরী ওইদিন দুপুরে ওই দুই বখাটেকে তাঁর দোকানে ডেকে আনেন এবং রুবেল মিয়ার টাকা ও মোবাইল ফোনটি ফেরত দিতে তাদেরকে চাপ দেন। কিন্তু তারা এসময় রুবেলের টাকা ও মোবাইল নেয়নি বলে তারা তখন উল্টো রুবেল মিয়াকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।  পরে ওইদিন সন্ধ্যায় রুবেল মিয়া পাশের সাতগাঁও এলাকায় একটি ওয়াজ মাহফিলের অনুষ্ঠানে পিঠা বিক্রি শেষে রাত ১০টার দিকে তিনি আদর্শনগর বাজারে নিজ চাপড়াঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন রবিবার সকাল ১০টার দিকে আবু হানিফ নামে এক কিশোর প্রতিদিনের ন্যায় রুবেল মিয়ার জন্য সকালের খাবার নিয়ে যায় ওই চাপড়াঘরে। তখন ঘরের দরজায় বাহির থেকে সিকল লাগানো অবস্থায় দেখতে পায় সে। পরে সিকল খোলে সে ভেতরে ঢুকে রুবেল মিয়ার গলায় গামছা প্যাঁচানো মৃত অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে সে ডাক-চিৎকার করে বিষয়টি আশ-পাশের লোকজনদের জানায়। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ওইদিন দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে রুবেল মিয়ার মরদেহটি উদ্ধার করে।

মামলার বাদী ও নিহত পিঠা বিক্রেতা রুবেল মিয়ার  স্ত্রী রিনা আক্তারের দাবি, যারা আমার স্বামীর টাকা ও মোবাইল চুরি করে নিয়ে দিনের বেলায় উল্টো আমার স্বামীকে হুমকি দিয়েছিল।
রাতে তারাই আমার স্বামীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে। আমি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করাসহ তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

এ ব্যাপারে মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, মামলার তদন্ত ও আসামিদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে এই মূহুর্তে অনেক কিছুই গোপন রাখা হচ্ছে। তবে দ্রুতই এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করাসহ এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা হবে।

এবিএন/মোঃ ইমাম হোসেন/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ