আজকের শিরোনাম :

মানিকগঞ্জে ২১ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আটক

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৫

মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত এক গার্মেন্টেস কর্মীকে গণধর্ষণ মামলায় দীর্ঘ ২১ বছর বিভিন্ন ছদ্মবেশে পলাতক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোঃ আবুল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব ৪, সিপিসি ৩, মানিকগঞ্জ।

গ্রেফতারকৃত আবুল মিয়া (৪৫) সিংগাইর উপজেলার ধল্লা উত্তর পাড়া গ্রামের গেদা ফকিরের পুত্র।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব ৪, সিপিসি ৩ মানিকগঞ্জের অধিনায়ক লে. কমান্ডার মো: আরিফ হোসেন।

এর আগে তাকে রবিবার রাতে জেলার সিংগাইর থানাধীন ভূমদক্ষিন এলাকা হতে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব ৪ সিপিসি ৩ মানিকগঞ্জ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত গার্মেন্টেসকর্মী গণধর্ষণ মামলায় দীর্ঘ ২১ বছর বিভিন্ন ছদ্মবেশে পলাতক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো: আবুল মিয়া ওরফে রাজিবকে গ্রেফতারে তৎপর হয়ে রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিংগাইর থানাধীন ভূমদক্ষিন এলাকা হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও এজাহারের বিবরণে জানা যায়,  ভিকটিম গার্মেন্টেস কর্মী সিংগাইর থানাধীন ধল্লা চর উলাইল সাকিনে বসবাস করতো। ভিকটিম ঢাকা জেলার হেমায়েতপুরে একটি গার্মেন্টেসে চাকুরী করে জীবিকা নির্বাহ করত। ভিকটিম প্রতিদিন তার বাড়ি থেকে গার্মেন্টেসে আসা যাওয়ার পথে বিবাদী আবুল মিয়া ভিকটিমকে প্রায় কুপ্রস্তাব দিত। ভিকটিম তার কুপ্রস্তাবে সাড়া না দিলে বিবাদী আবুল মিয়া ভিকটিমের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে গার্মেন্টস থেকে আসার পথে সিংগাইর থানাধীন ধল্লা বাজারে পৌছালে পূর্বে থেকে ওত পেতে থাকা বিবাদী আবুল মিয়া, মানিক, খালেক ও কালাম  ভিকটিমকে মুখ ও গলা চেপে ধরে জোরপূর্বক অপহরণ করে ধল্লা ইউনিয়নস্থ জনৈক ফজলু মিয়ার গাজিন্ধার চকে নিয়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দলবদ্ধ ভাবে গণধর্ষন করে। ভিকটিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে প্রাণনাশের  হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে ভিকটিমের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিমকে উদ্ধারপূর্বক সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের বাবা মো: ভোলা বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে একটি গণধর্ষণ মামলা দায়ের করে। যাহার সিআর মামলা নং ৫৬৪/০৩ ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ৭/৯ (৩)/৩০।

মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে আবুল ও মানিক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ঘটনার সত্যতা ও সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। বিজ্ঞ আদালত পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমান ও উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আসামী আবুলকে ৭ ধারায় ১৪ বছর এবং ৯(৩) ধারায় আবুল ও মানিককে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করেন।

র‌্যাব ৪, সিপিসি ৩ মানিকগঞ্জের অধিনায়ক লে. কমান্ডার মো: আরিফ হোসেন জানান, মামলায় গ্রেফতার এড়াতে আসামি পলাতক থাকায় বিজ্ঞ আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। আত্মগোপনে থাকাকালীন সময়ে মামলা রুজুর পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে আসামী দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মনাম রাজীব ব্যবহার করে আত্মগোপনে থেকে কখনো দিনমজুর ও সবজী বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। র‌্যাব ৪, সিপিসি ৩, মানিকগঞ্জের একটি চৌকশ আভিযানিক দল উক্ত আসামীকে গ্রেফতারে তৎপর হয়ে সোর্স নিয়োগপূর্বক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সিংগাইর থানাধীন ভূমদক্ষিণ এলাকা হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এবিএন/মো: সোহেল রানা খান/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ