আজকের শিরোনাম :

এবার নোয়াখালীতে খতনা করাতে গিয়ে সংকটাপন্ন শিশু

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫২

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খতনা করাতে গিয়ে শিশুর গোপনাঙ্গের মাথা কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই শিশুর জীবন সংকটে পড়েছে। ঘটনার পর পরই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক পালিয়েছেন।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিশু আল নাহিয়ান তানভীর উপজেলার ৪ নম্বর চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আলমগীরের ছেলে। বর্তমানে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে শিশু তানভীরকে খতনা করাতে তার পরিবারের লোকজন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তখন সেখানে মেডিকেল অফিসার এবং উপসহকারী মেডিকেল অফিসার উপস্থিত ছিলেন না। সৌরভ নামে এক মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট (শিক্ষানবিশ) শিশুটির খতনা করতে গিয়ে পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ কেটে ফেলেন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে শিশুটির স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং সৌরভকে চড়থাপ্পড় মারেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিম ও উপসহকারী মেডিকেল অফিসার আবু নাছেরসহ জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা অন্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ভুক্তভোগী শিশু তানভীরের বাবা আলমগীর বলেন, আমরা শিশুকে খতনা করাতে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আসছে বলে সৌরভ নিজেই খতনা করায়। এতে আমার ছেলের পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ কেটে যায়। অতিরিক্ত রক্তপাতে আমরা ভয় পেয়ে যাই এবং সৌরভকে আটকে রাখি। বর্তমানে চিকিৎসকরা শঙ্কামুক্ত বললেও আমরা আমরা শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। আমি সৌরভের শাস্তি দাবি করছি।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ফোন দিলে দায়িত্বে থাকা ডা. মো. সাহাদাত হোসেন সাগর ফোন রিসিভ করলেও তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিমের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে বার বার ফোন দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এদিকে, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট (শিক্ষানবিশ) সৌরভের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার আবু নাছের বলেন, ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টি তেমন জটিল ও গুরুতর নয়। শিশুটি এখন ভালো আছে। আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় নোয়াখালীর সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন মাহামুদ চৌধুরী বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিম সাহেব অসুস্থ থাকায় তিনি কারও ফোন ধরতে পারছেন না। এখানে গুরুতর কোনো ঘটনা ঘটেনি। শিশুটি বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছে। তবে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট (শিক্ষানবিশ) সৌরভের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আহনাফ তাহমিদকে সুন্নতে খতনা করাতে নিয়ে যান বাবা ফখরুল আলম। পরিবারের অভিযোগ, আসার পরই হাসপাতালের পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদিরদের নেতৃত্বে তাহমিদকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান হাসপাতালে দায়িত্বরত ডা. মাহাবুব এবং ডা. ইশতিয়াক আজাদ।

এর ঠিক ২০ মিনিট পর আহনাফকে দেখতে চায় পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধা দিলে শুরু হয় হট্টগোল। এরপরই তাকে মৃত ঘোষণা করেন তারা।

এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর খতনার জন্য শিশু আয়ানকে বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ৯টার দিকে শিশুটিকে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া হয়। পরে জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার পিআইসিইউতে (শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

আয়ানের বাবা-মায়ের অভিযোগ, ইন্টার্ন চিকিৎসক দিয়ে সুন্নতে খতনার সময় অতিরিক্ত অ্যানেসথেশিয়া দেওয়ায় ঘটেছে এমন ঘটনা।

এবিএন/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ