আজকের শিরোনাম :

খোকসায় গড়াই নদীর ভাঙ্গনে অর্ধশত বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৭ | আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৯

গড়াই নদীর অব্যহত ভাঙ্গনে হিজলাবট দ্বীপচর আবাস প্রকল্প-২ এর শতাধিক ভূমিহীন পরিবার গৃহহারা হবার ঝুঁকিতে পরেছেন। প্রায় অর্ধশত বিঘা জমি ও ফসল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে দ্বীপচর আবাসন প্রকল্প-২ এর ৭০ পরিবারের বসবাসে ঘর ও আড়াই’শ বিঘা ফসলী জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

চলতি শুষ্ক মৌসূম শুরুর সাথে সাথে খোকসা উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের দ্বীপচর আসান প্রকল্প-২ এলাকায় নদী ভাঙ্গন শুরু হয়। গত এক সপ্তাহে ভূমিহীনদের নামে বরাদ্দকৃত প্রায় ৫০ বিঘা ফসলসহ জমি গড়াই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনে বিলীন হওয়া ঝুকির মধ্যে পরেছে আবাসন প্রকল্পে বাসবাস কারী ১০০ পরিবার। গড়াই নদীর ভাঙ্গনে ইতোমধ্যে হিজলাবট দ্বীপচর আবাসন প্রকল্প-২ নদীতে বিলীন হয় গেছে। সরকারি ভাবে বরাদ্দ পাওয়া ৭০ পরিবারের ঘর ও প্রায় আড়াইশ বিঘা আবাদি জমিসহ কৃষকদের ব্যক্তিগত জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে এসব পরিবারের ৫ শতাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে সরেযেতে বাধ্য হয়েছে। আবাসনে বসবাস কারী ভূমিহীনরা নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিয়েছেন। কিন্তু দ্বীপচরের ভাঙ্গনরোধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে তারা অভিযোগ করেন।

শনিবার দুপুরে দ্বীপচর আবাস প্রকল্প এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, গত ১ সপ্তাহ আগে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়। এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙ্গন ছড়িয়ে পরেছে। ইতোমধ্যে ভূমিহীনদের নামে বরাদ্দ দেওয়া ৫০ বিঘা ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। 

ভাঙ্গনে মুখে পরেছে কয়েকশ বিঘা জমির কলা, চৈতালী ফসলসহ বিভিন্ন জাতের ফসল আবাদের জমি। ভাঙ্গনে ৩০ হাত দূরে রয়েছে আব্দুল ওহাব সুপি, সুফিয়া খাতুন, জমেলাসহ ভূমিহীনদের নামে বরাদ্দ দেওয়া সরকারী ঘর ও আবাদি জমি।
নদী ভাঙ্গনে কবলে পরা জমি থেকে কলা গাছ কেটে নিতে দেখা যায় আলাউদ্দিন দম্পতির। তাদের নামে বরাদ্দ দেওয়া সরকারী জমিতে প্রায় ৮ শত কলা গাছ রোপণ করেছিলেন। ইতোমধ্যে ৫/৬ শ গাছ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাঁকী গাছ নদীতে চলে যাচ্ছে। তাই গরুর খাবারের জন্য কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। তার বাড়িও ভাঙ্গনের ঝুকিতে রয়েছে। জমি গেছে, ফসল গেছে এবার মাথা গোজার শেষ আশ্রয়স্থল নদীতে গেলে তিনি ৪ সন্তান নিয়ে কোথায় যাবেন এই নিয়ে তাদের ভাবনার অন্ত নেই।

ভূমিহীন নেতা কাজেম আলী জানান, বছর পাঁচেক আগে দ্বীপচর আবাস প্রকল্প-২ এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়। ইতোমধ্যে ওই প্রকল্পটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সরকারী বরাদ্দের ঘর যে যার মত ভেঙ্গে নিয়েও গেছে। তখন থেকে তারা (ভূমিহীনরা) নদী ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের গেছে। সবাই প্রতিশ্রতি দিয়েছেন। কিন্তু ভাঙ্গন রোধে কেউ ব্যবস্থ নেন নি।
দ্বীপচর আবাসন প্রকল্পটিতে ১০০ ভুমিহীন পরিবারের মাথা গোজার আশ্রয়স্থল রয়েছে। ভাঙ্গনের মুখে প্রায় কোটি টাকার কলাসহ অন্যান ফসল রয়েছে। বিশেষকরে ভূমিহীনরা আবার ভূমিহীন হয়ে পরবে।

পানিউন্নয়ন বোর্ড যদুবয়রা উপবিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, কৃষকদের কলার জমি ভাংতে দেখেছেন। তবে চলতি বছরে নদী ভাঙ্গন রোধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না বলে জানান। তবে আগামী বছরের প্রকল্পটিকে অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে বলে জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস বলেন, নদী ভাঙ্গরোধে ব্যবস্থা নেওয়া বড় ব্যাপার। পানি উন্নয়ন বোর্ডই ভরসার স্থল। তবুও তিনি সহকারী কমিশনার (ভূমি)-কে দিয়ে পরিদর্শন করিয়ে ভূমিহীনদের ঘর বাড়ি রক্ষায় উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবেন।

এবিএন/সুমন কুমার মন্ডল/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ