আজকের শিরোনাম :

ফরিদপুরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা আজ, ২ লাখ লোকের সমাগমের আশা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:১৮

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রেলপথে ভাঙ্গা জংশন হয়ে পৌঁছাবেন ভাঙ্গার ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে। যোগ দেবেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায়। প্রধান অতিথি হিসেবে সেখানে ভাষণ দেবেন তিনি।

এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ভাঙ্গাজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। রং-বেরঙের ব্যানার আর ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে সড়কের আশপাশ। জনসভায় প্রায় দুই লাখ লোকের সমাগম ঘটবে বলে আশা আয়োজকদের।

সোমবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ। তিনি সার্বিক প্রস্তুতির খোঁজখবর নেন। এসময় সেখানে উৎসুক জনতার ভিড় দেখা যায়।

আজ মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পদ্মা সেতুতে রেল চলাচল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ১১টায় প্রথমে মাওয়া রেলস্টেশনে পৌঁছে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেল চলাচলের। এরপর বিকেল ৩টার দিকে রেলপথে পৌঁছাবেন ভাঙ্গা জংশনে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ভাঙ্গার মানুষের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে। এখানে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীকে একনজর দেখতে মানুষ ক্ষণ গুনছে।’

তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর আমাদের এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। পদ্মা সেতু হয়ে রেল চলাচল শুরু হলে আমাদের এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে।’

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহের আমেজ বইছে। ইতোমধ্যে প্রশাসনের সব দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি সম্পন্ন।  অন্যদিকে এমপি নিক্সন চৌধুরীর সমর্থকরা পাল্লা দিয়ে স্টেডিয়ামের প্রবেশপথসহ শহরের সড়কগুলোতে একাধিক তোরণ, ফেস্টুন, ব্যানার ও কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের ছবি সংবলিত প্লাকার্ড রাস্তার দুই পাশ দিয়ে টানানো শুরু করে দিয়েছে। এতে ছেয়ে গেছে সারা শহর।

এদিকে প্রশাসনের প্রস্তুতি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন জানান, ‘বেশ কয়েকদিন ধরে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, র‍্যাব, বিডিআর, এসএসএফ কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্নের পথে। ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী ১২টার দিকে রেল জংশন উদ্বোধন করবেন। এরপর জনসভায় যোগ দেবেন।’

এদিকে ভাঙ্গা থানার ওসি জিয়ারুল ইসলাম জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে সাদা পোশাকধারী, ইউনিফর্মধারী, অস্ত্রধারীসহ ৫ হাজার পুলিশ নিরাপত্তা বলয় নিশ্চিত করতে সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।’

অন্যদিকে, ভাঙ্গা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার তরুণ কুমার পাল জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আমাদের সব টিম ইতোমধ্যে প্রস্তুত রয়েছে, রেল জংশন ও জনসভা স্থলে পাঁচজন চিকিৎসকের তিনটি টিম কাজ করবে।’

তিনি জানান, ‘এদিকে হাসপাতালের রুম, বেড, অ্যাম্বুলেন্সসহ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।’

এদিকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার জাফর আহমেদ জানান, ‘কয়েকদিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে প্রবেশপথে রাস্তার কাজ প্রশস্ত করার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আমাদের জংশন ও সভাস্থলে তিনটি টিম কাজ করবে। আমাদের টিমে ৭০ জন জনবল ওইদিন কাজ করবেন।’

এদিকে আবাসিক উপপ্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, স্টেডিয়ামের বাইরের বিদ্যুতের কাজ ১০০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে এবং ভেতরের কাজ সম্পন্ন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ জানান, ‘উপজেলা পর্যায়ে এমন একটি জনসভা করতে প্রধানমন্ত্রী রাজি হওয়ায় আমরা জনসভাকে সফল করতে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে সব রকমের প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পথে। নেত্রী যেন খুশি হন এমন একটি সুন্দর জনসভা ভাঙ্গার পক্ষ থেকে উপহার দিতে পারি সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি, ইনশাল্লাহ সফল হবো।’

এ বিষয়ে সর্বশেষ জানতে স্থানীয় এমপি ও আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন বলেন, ‘ইতোমধ্যে স্টেডিয়ামসহ রাস্তার দুই পাশে সাজ-সজ্জার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমার এলাকার মানুষের প্রতি খুশি হবেন এমন সর্বোচ্চ লোকসমাগমের উপস্থিত করতে ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সফর নির্বিঘ্ন করতে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক আনন্দ বিরাজ করছে। পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য সৃষ্টি। সেই সেতুর রেললাইন উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন তিনি। যা আমাদের জন্য গর্বের। এ রেললাইন উদ্বোধন হলে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা আরও নির্বিঘ্ন হবে সঙ্গে দৃশ্যমান হবে রেললাইন।’

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এরমধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে। আগামী বছরের জুনে যশোর পর্যন্ত রেল চালুর লক্ষ্য ঠিক করেছে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১০ অক্টোবর কমলাপুর থেকে একটি ট্রেন ছেড়ে যাবে। পদ্মা সেতুর আগে মাওয়া স্টেশনে হবে সুধী সমাবেশ। সেখানেই উদ্বোধনের কার্যক্রম হবে। এরপর ট্রেনে উঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাঙ্গায় যাওয়ার কথা রয়েছে।

এবিএন/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ