সৈয়দপুরে পানিবন্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১০৮ পরিবার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৭

নীলফামারীর সৈয়দপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ড্রেনেজ ব্যবস্থার অচলাবস্থার কারণে বর্ষার পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় পানিবন্দি হয়েছে ওই প্রকল্পের ঘরে বসবাসকারীরা। গত চারদিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় তারা।  রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দিনভর বৃষ্টির ফলে তাদের দুরাবস্থা আরও বেড়েছে।

উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছ আশ্রয়ণে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় ১০৮টি পরিবার দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। ঘরের চারপাশে থৈ থৈ পানি। বারান্দা থেকে বাইরে পা ফেলার জায়গা নেই। প্রয়োজনে কোথাও যেতে হলে হাঁটু পানি মারিয়ে যেতে হচ্ছে। চলাচলের রাস্তাগুলো সব পানির নিচে। এমনকি টিউবওয়েলের পাড়, উঠানের রান্নাঘরের চুলা ডুবে গেছে।

আবাসনবাসী কর্মজীবী হতদরিদ্র মানুষগুলো আরও সমস্যায় পড়েছে শিশুদের চলাফেরা নিয়ে। একদিকে পানিতে পড়ার আশঙ্কা, অন্যদিকে সাপ, পোকামাকড়ের ভয়। সব মিলিয়ে করুণ মানবেতর জীবনযাপন করছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার মাথা গোঁজার ঠাঁই প্রাপ্তরা।

শমসের আলীর ছেলে জসিম উদ্দিন (বাসা ৬৫) বলেন, এই আশ্রয়ণের ঘরগুলো নির্মাণের সময় সঠিক পরিকল্পনা করা হয়নি। ধানী নিচু জমিতে কোন মাটি ভরাট না করেই ঘর তৈরী করা হয়েছে। রাস্তা ও উঠান আগের মাটিতেই করায় এবং সেই লেবেলেই ড্রেন বানানোর ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়, নিষ্কাশন হয়না। আর বেশি বৃষ্টি হলেতো দিনের পর দিন পানিতে আবদ্ধ হয়ে পড়ে পুরো আশ্রয়ণ। ১০৮ নং বাসায় বসবাসকারী আল তারা বলেন, আমাদের ঘরগুলো পাশের বিশ্বরোড থেকে প্রায় ৫ ফুট নিচু। আবাসনে আসার যে মূল রাস্তা করা হয়েছে সেটা কিছুটা উচু করা হলেও প্রতিটি ঘরের সাথে সংযোগ ও গলি পথগুলো নিচু হওয়ায় ড্রেন দিয়ে উল্টা পানি আঙ্গিনায় আসে। 

শাহজাদী (বাসা ৭৪) বলেন, তিন দিন ধরে পানির নিচে ডুবে থাকলেও কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি। ঘরে যে সামান্য খাবার ছিল তা শেষ হওয়ায় না খেয়েই কাটছে। চারদিকে পানি থাকায় না পারছি ছোট বাচ্চাদের রেখে কাজে যেতে, না পারছি কারো কাছে হাত পাততে। কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছি। দিন কোনরকমে পার হলেও রাতে বেজায় দুশ্চিন্তায় কাটাচ্ছি। আশ্রয়ণের একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, একেবারে নিম্নজমিতে আশ্রয়ণটা করা হয়েছে বলে আজ এ অবস্থা।

সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুর ইসলাম বলেন, আশ্রয়ণের বসবাসরত মানুষের পানিবন্দি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

কথা হলে, কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, ঘরে পানি এখনও ঢুকেনি। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হবে।

এবিএন/এম. ওমর ফারুক/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ