আজকের শিরোনাম :

ডোমারে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৪৭

জেলার ডোমারে  পল্লবী রায় (২৩) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে বলে দাবি করছেন নিহতের স্বজনরা। আর স্বামীর স্বজনরা বলছে আত্মহত্যা।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের  নিমোজখানা বাবুপাড়া এলাকার পোড়া মানিকের বাড়ীতে এই ঘটনাটি ঘটে। নিহত পল্লবী রানী ওই গ্রামের টোল কালিগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিশ্বদেব রায়ের স্ত্রী। সে নীলফামারী কলেজের অর্নাস শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল।

পল্লবী রায়ের প্রায় ৫ বছর বয়সী আগের স্বামীর অনন্যা নামে  এক মে সন্তান রয়েছে। পল্লবী রায়ের মৃত্যুর পর থেকেই তার স্বমীকে খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা।

নিহতের বাবা গৌরাঙ্গ রায় বলেন, আমার মেয়ের সাথে গত ৫  মাস আগে বিয়ে হয় শিক্ষক বিশ্বদেবের। এর আগে বিস্বদেবের কাছে আমার মেয়ে প্রাইভেট পড়তো। সেখান থেকেই তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানার পর আমি আমার মেয়ে কে অন্যত্র বিয়ে দেই। বিশ্বদেবও অন্য জায়গায় বিয়ে করে। আমার মেয়ের আগের সংসারে এক মে সন্তান রয়েছে । বিশ্বদেব  আমার মেয়ের জামাই বাড়ীতে গিয়ে তাদের মধ্যে ডিভোর্স ঘটায়। ডিভোর্সের পর থেকেই আমার মেয়ে তার মেয়ে অনন্যাকে নিয়ে আমার বাড়ীতে থাকে। এখানে থাকার মধ্যেই আমার মেয়েকে ৪ মাস আগে পালিয়ে বিয়ে করে বিশ্বদেব। বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ে তার স্বামীর বাড়ীতে রয়েছে। সেখানে বিশ্বদেবের আগের বউও থাকে।

বুধবার সকালে আমার ভাগিনা ফোন দিয়ে জানায় চেয়ারম্যান রিমুন ফোন দিয়ে বলেছে পল্লবী ফাঁস দিয়েছে। ঘটনা শুনার পর এখানে এসে দেখি আমার মেয়ে ছাপড়া ঘড়ের ভিতর গলায় ওড়না দিয়ে মাটিতে পা লাগানো অবস্থায় ঝুলে রয়েছে। কিভাবে এই ঘটনা ঘটেছে জানতে চাইলে বিশ্বদেবের পরিবার টালবাহানা করতে থাকে। আমি এখানে আসার পর খেকেই বিশ্বদেবের কোন খোজ পাইনি। সে পালিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন আমার মেয়েকে মেরে ঘড়ের মধ্যে তারা ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা প্রচার করছে তারা।

নিহত পল্লবীর সতিন জুই রায় বলেন, সকালে বাসন মাজার পর পল্লবী এসে বলে দিদি শরীরটা খারাপ লাগছে ভাত কিভাবে রান্না করবো। তখন আমি তাকে বলি তুই রেষ্ট নে আমি ভাত রান্না করবো।এই বলে সে ঘড়ের ভিতর চলে যায়। ভাত রান্না হওয়ার পর আমার স্বামী বিশ্বদেব পল্লবীকে ডাকতে তার ঘড়ে গিয়ে দেখে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘড়ের স্বরের সাথে সে ঝুলিয়ে রয়েছে। এ সময় আমার স্বামী চিৎকার করলে আমরা সকলেই গিয়ে দেখতে পাই সে ঘড়ের মধ্যে আত্মহত্যা করেছে। তবে কি কারণে সে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি তারা বলতে পারছেনা।

পরে তার  ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

গৃহবধূর মামাতো ভাই বিকাশ বলেন, বিয়ের পর থেকে পল্লবীকে তার স্বামী বিভিন্ন সময় মারধর করত। তিনি আরো বলেন, শিক্ষক বিশ্বদেব ও তার পরিবার  পল্লবীকে মেরে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার কথা প্রচার করছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে ডোমার সার্কেল আলী মোঃ আব্দুল্লাহ মৃত্যুর বিষয়টি নিস্চিত করে বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলার মর্গে প্রেরণ করা হবে। তদন্ত রিপোর্ট আসলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

এবিএন/মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ