আজকের শিরোনাম :

আক্কেলপুরে স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্বার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৩, ১৪:০০

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে পড়াশোনা নিয়ে বাবার বকনি সহ্য করতে না পেরে সাদিয়া আক্তার লুনা (১৭) নামে এক স্কুলছাত্রী নিজ ঘরে বাঁশের আড়ার সাথে গলায় ওরনা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

রোববার সকাল পাঁচটার দিকে উপজেলার শিয়ালা গ্রামে ওই ঘটনাটি ঘটে। নিহত শিক্ষার্থী উপজেলার শিয়ালা গ্রামের আব্দুস সোবাহান খানের দ্বিতীয় মেয়ে। সে স্থানীয় কাশিড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক। 

পুলিশ এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাদিয়া আক্তার লুনার বাবা আব্দুস সোবাহান পেশায় কৃষক। তার দুটি মেয়ে এক ছেলে সন্তান রয়েছে। ছোট মেয়ে সাদিয়া দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করে। গত শনিবার বিকেলে বাবা আব্দুস সোবাহান সাদিয়াকে ভালো করে পড়াশোনা করার জন্য বকাবকি করেন। সেই অভিমানে সাদিয়া রাতে আর খাবার না খেয়ে বাড়ির দুই তলায় নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল পাঁচটার দিকে সাদিয়ার বড় বোন লিজা আক্তার সাদিয়াকে ডাকতে দুইতলায় সাদিয়ার ঘরে গিয়ে দেখে সাদিয়া ঘরের বাঁশের আড়ার সাথে গলায় ওরনা পেঁচিয়ে ঝুলছে। ওই সময় সাদিয়ার বড় বোন লিজা চিৎকার করে তার বাবাকে ঢেকে এনে সাদিয়ার মরদেহ মাটিতে নামায়। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। 

সাদিয়ার বড়বোন লিজা আক্তার বলেন, আমি কলেজে পড়াশোনা করি। রাতে আমি নিচ তালায় ঘুমিয়েছিলাম। আর আমার বোন রাতে না খেয়ে উপর তলায় তার ঘরে ঘুমাতে যায়। সকাল পাঁচটার দিকে আমি সাদিয়াকে ঢাকতে তার ঘরে গিয়ে দেখি সাদিয়া গলায় ওরণা পেঁচিয়ে ঝুলছে। আমার বোনের মাথারও সমস্যা ছিল দীর্ঘদিন থেকে। স্থানীয় কবিরাজের চিকিৎসাও চলমান ছিল।

সাদিয়ার বাবা আব্দুস সোবাহান বলেন, আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। পরে উপরার দৃষ্টির (জীন-ভূত) কারনে মাঝে মধ্যই ঘরের এক কোনে লুকিয়ে থাকতো। এমন অবস্থায় সে তেমন পড়াশোনা করতো না। শনিবার বিকেলে সাদিয়া ভালোপড়াশোনা করে না দেখে আমি বকাঝকা করেছিলাম। রাতে খেয়েছিল কিনা আমি জানি না। ওই অভিমানেই মেয়ে আমার গলায় ফাঁস দিয়ে নিজের জীবন শেষ করেছে। 

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে তদন্ত করে দেখা যায়। সাদিয়ার বাবা-মা উপস্থিত গ্রামবাসীর কাছে স্বীকার করে শনিবার বিকেলে সাদিয়ার বাবা সাদিয়াকে পড়াশোনার জন্য বকাঝকা করেছিল। সেই অভিমানে সে রাতের খাবারও খাই নি। পরে সে এইকাজ করেছে।  পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না পাওয়ায়, মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের হয়েছে।

এবিএন/আতিউর রাব্বী তিয়াস/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ