আজকের শিরোনাম :

সাপাহারে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁক-ডাকে জমে উঠেছে আমবাজার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৩, ১৫:১১

দেশের উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ আমবাজার বসে নওগাঁর সাপাহারে। ইতিমধ্যে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁক-ডাকে জমে উঠেছে সাপাহারের আমবাজার। বিভিন্ন জাতের আম উঠতে শুরু করেছে এই বাজারে। কয়েকদিন আগেও সুনসান নীরব ছিলো এই বাজার। দুই/চারদিন থেকে আমের আমদানি হবার ফলে সরব হয়ে উঠেছে এই আমবাজার।   

এই এলাকায় কাকডাকা ভোর থেকে শুরু হয় গাছ থেকে আম সংগ্রহ। আম পাড়া শেষ হলেই নানান ধরণের যানবহনে করে বাজারে আনা হয় এসব আম। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসে আমের হাট। সদরের জিরোপয়েন্ট থেকে পতœীতলার দিবর এলাকা পর্যন্ত বসে আমের হাট। সদরে রয়েছে প্রায় ২৫০টি আমের আড়ৎ এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে আমের আড়ৎ গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৩৬০টি আমের আড়ৎ গড়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। 

প্রতিদিন সদরের আড়ৎগুলোতে প্রায় ১ থেকে দেড় হাজার মণ আম বিক্রয় হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে আরো অন্যান্য জাতের আম বাজারজাত হলে আম কেনা বেঁচা বাড়বে কয়েকগুণ। যার ফলে কর্মব্যস্ত হয়ে উঠবে আড়ৎগুলো। যার ফলে কর্মসংস্থান হবে প্রায় ১ হাজার বেকারের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী গুটি (স্থানীয়) আম ২২ মে থেকে পাড়া শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে গোপালভোগ ২৮ মে, খিরসাপাত/হিমসাগর ২ জুন, নাগফজলি ৭ জুন, ল্যাংড়া/হাঁড়িভাঙা ১০ জুন, ফজলি ২০ জুন, আম্রপালি ২২ জুন এবং আশ্বিনা/বারি-৪/গৌড়মতি/কাটিমন ১০ জুলাইয়ের মধ্যে হারভেস্টেং শুরু হবে। আর এই সময়ের মধ্যে বাগান থেকে আম সংগ্রহ করবেন আমচাষীরা।

চলতি বছরে অনাবৃষ্টির ফলে আম অনেকটা ঝরে যায়। কিন্তু তাতে তেমন কোন ক্ষতির প্রভাব পড়েনি বলে জানান আমচাষীরা। তবে বর্তমানে শুরুতেই আমের বাজার মূল্য কিছুটা কম বলে দাবি করছেন স্থানীয় আমচাষীরা। এছাড়াও আম বিক্রয় করতে হচ্ছে ৫০/৫২ কেজিতে প্রতিমণ হিসেবে। যার ফলে অনেকটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন চাষীরা। 
 
উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের আমচাষি মাহফিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে বাজারে গোপালভোগ জাতের আম বিক্রি করছি ১৪/১৫শ” টাকা দরে। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারনে আম বাগানে পরিচর্যা করতে হয়েছে বেশি। যার ফলে খরচ অনুযায়ী আমের বাজার মূল্য অনেকটা কম। 

বাজারে আম বিক্রয় করতে আসা বেশ কয়েকজন আমচাষীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমরা বাজারে আম নিয়ে আসার পর ৫০-৫২ কেজিতে মণ হিসেবে দিতে হচ্ছে। আমের দাম ঠিকমতো আন্দাজ করা অসম্ভব। সকালে এক প্রকার দাম, বিকেলে আরেক প্রকার। তবে আমাদের পরিচর্যা অনুযায়ী আমের তেমন দাম নেই। পরবর্তীতে দাম বাড়লে আমাদের পুষিয়ে যাবে। তাছাড়া আমের দাম স্থিতিশীল থাকলে ক্ষতি হবে না তবে খুব বেশি লাভ হবে না। 

সাপাহার আড়ৎদার সমিতির সহ-সভাপতি মো. রেজাউল করিম বলেন, বাজারে গুটি, রানিভোগ, গোপাল ভোগ আম উঠতে শুরু করেছে। এ জাতের আম ১২০০-১৫০০ টাকা, গুটি ৮০০-৯০০ টাকা, হিমসাগর ১৫০০-১৭০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। আমের মণ হিসেবে ৪৮-৫০ কেজিতে মণ বিক্রি হয়। এরমধ্যে ক্যারেটের ওজন থাকে। ওজনে বেশি থাকলেও পরে রস কমে ও অনেকটা নষ্ট আম বাদ গেলে ওজন স্বাভাবিকে চলে আসে। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী এ বছরে উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে প্রায় ১৫ মেট্রিকটন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৫শ’ কোটি টাকার আম বাণিজ্য হতে পারে বলে জানা গেছে।

এবিএন/আল মামুন/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ