আজকের শিরোনাম :

২০ ঘণ্টা পর সীতাকুণ্ডে তুলার গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩৮ | আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৩, ১০:১০

চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের ছোট কুমিরা এলাকায় ইউনিটেক্স গ্রুপের তুলার গুদামে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

প্রায় ২০ ঘণ্টা পর রোববার ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল মালেক বলেন, ‘সবার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন ধোঁয়া আছে শুধু, আমরা পানি ছিটাচ্ছি এখনও। আশা করি কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরোপুরি নির্বাপণ হয়ে যাবে।’

রাতভর যৌথ বাহিনীর ২২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।

ফায়ার সার্ভিসের ভাষ্য, পানি সংকট ও তুলা দাহ্য পদার্থ হওয়ায় নিয়ন্ত্রণে সময় লেগেছে।

জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন আর আগুন নেই। তবে কিছু জায়গা থেকে ধোঁয়া উঠছে।

জেলা প্রশাসন জানায়, সপ্তাহ খানেক ধরে এসএল গ্রুপের গোডাউনটিতে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওয়েল্ডিংয়ের আগুনের স্ফুলিঙ্গ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। গোডাউনে প্রায় ২ হাজার ৭০০ টন তুলা মজুত ছিল। এগুলো দাহ্য হওয়ায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। 

অগ্নিকাণ্ডে ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলমকে। এছাড়া সদস্য করা হয়েছে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ডিআইজি, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সীতাকুণ্ড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশনের (বিটিএমসি) প্রতিনিধি, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমইএ) প্রতিনিধিকে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিজিবির ২২টি ইউনিট একযোগে কাজ করায় বিপুল পরিমাণ পানির প্রয়োজন হয়। এতে আশেপাশের সব জলাশয় শুকিয়ে যায়। শেষ হয়ে আসে কিছু দূরের পুকুর, খাল ও ন্যামসন কন্টেইনার ডিপোর রিজার্ভারও।

এমন পরিস্থিতিতে বাড়বকুণ্ড, ভাটিয়ারী ও চট্টগ্রাম সেনানিবাস এলাকা থেকে আগুন নির্বাপণে প্রয়োজনীয় পানির জোগান দেয়া হয়।

ওই গুদামে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আগুন লাগে। শুরুতে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট। পরে যোগ দেয় আরও পাঁচ ইউনিট। তাতেও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সামরিক বাহিনীকে সাহায্যের অনুরোধ জানান। এতে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে একে একে যোগ দেয় সশস্ত্র বাহিনীর ১৪টি ইউনিট।

রাত সাড়ে আটটার দিকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদের নেতৃত্বে সেনবাহিনীর চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এর ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে নৌবাহিনীর ৪টি ও বিমানবাহিনীর দুটি ইউনিট যোগ দেয় নিয়ন্ত্রণের কাজে। মধ্যরাতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিনহাজের নেতৃত্বে বিজিবির চারটি ইউনিটও আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

কুমিরা ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ চৌধুরী জানান, গুদামে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ওয়েল্ডিয়ের কাজ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, কাজের সময় স্ফুলিঙ্গ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ