আজকের শিরোনাম :

পাঁচবিবিতে তিন ফসলি জমির উর্বর মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:৪৩

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ত্রি-ফসলি জমিতে উর্বর মাটি কাটার হিড়িক। দিনদিন কমছে ফসল উৎপাদন। মাটিবাহী ট্রলি, ট্রাক্টরের দাপাদাপিতে ভাঙছে রাস্তাঘাট। উড়ছে ধুলোবালি। হুমকিতে পরিবেশ-জনস্বাস্থ্য।

এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মাঠ থেকে আমন ধান ওঠার পরই, এমনকি জমিতে ফসল থাকা অবস্থায় ফসলি জমির মাটি কেটে ও বিক্রি শুরু করে দেয়। আর এ মাটি মেসি, ট্রক্টারে করেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইট ভাটায়। সেই সঙ্গে ভরাট করা হচ্ছে বসত-বাড়ি, পুকুর ও ডোবা-নালা। মুলত কৃষিজমির মালিকদের আর্থিক সুবিধার টোপ দেয়। অনেক সময় বাধ্য করে মাটিখেকোরা। তাৎক্ষণিক নগদ টাকা হাতে পেয়ে আগামীর চিন্তা না করেই জমির টপ সয়েল বিক্রি করছেন কৃষকরা। এভাবে লোভের ফাঁদে পা দিয়ে কৃষকরা তাদের ফসলি জমির উৎপাদন হারিয়ে পতিত জমিতে পরিণত করেছে। এতে ফসল উৎপাদন ব্যবহৃত হচ্ছে। হারাচ্ছেন কৃষি জমি। 

কৃষক মজিবর, হেলাল, সখিন্দ্র জানায়, জমিতে ফসল হয় না। তাই মাটি কাটছি। আবার স্বপ্লমুল্যে মাছ চাষের কথা বলেও মাটি কেটে বিক্রি করছেন অনেকে জমির মালিক। এমন কি কাটা হচ্ছে নদীর পাড়ের মাটিও। উপজেলার কাশিয়াবাড়ী, খিরাপাথার, পাকুরিয়া, উচাই, মহিপুর মোড়, নঁওদা, পাকুরতলী, পূর্ব করিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার ত্রিফসলি মাঠ থেকে প্রতিদিন মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব এলাকায় যারা যে সব যন্ত্রযানে মাটিবহন করছে তাদের অনেকেই এসব যান চালানোর তেমন কোন জ্ঞান নেই। শুধুমাত্র ষ্টিয়ারিং ঘোরাতে পারে। তারপর এরা এতো বেপোরয়া গতিতে যান চালায় যে, দেখে রাস্তায় চলাচল করতে হিমসিম খায় চলাচলকারী। এদের কারণে এলাকায় প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারী। উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়ানের বিভিন্ন গ্রামে প্রতিদিন এমন চিত্র এলাকাবাসীর চোখে পড়লেও প্রশাসন যেন দেখছেই না। স্থানীয় প্রশাসন এসব মাটিখেকোর বিরুদ্ধে তেমন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে বেপরোয়া ভাবেই চলছে তাদের কর্মযজ্ঞ। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ৮-১০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেয়ার ফলে পাশের জমিগুলো ভেঙ্গে পড়ছে। ফলে ঐ জমিতে চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। এতে দিন দিন বাড়ছে অনাবাদি জমির পরিমাণ। স্থানিয় আসাদ, তছির, ছানোয়ার, সুভ্রসহ কয়েকটি চক্র দীর্ঘদিন যাবত সংশ্লিষ্টদের মানেজ করে মাটি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্নস্থানে দিনের পাশাপাশি রাতের আঁধারেও মাটি কাটা হচ্ছে। এতে কমছে ফসলি জমি। হুমকির মুখে পরিবেশ এবং নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। ফসলি জমি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামরা করছেন সচেতন উপজেলাবাসী। 

এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ লুৎফর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, ফসলি জমির মাটি কাটা নিষেধ। কৃষি জমির উপরিভাগের মাট কাটলে জমি তার উর্বরতা হারায়। আর গভীর করে কাটলে স্থায়ী ক্ষতি হয়। এছাড়া ফসলি জমি হ্রাস পেয়ে খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যঘাত ঘটবে। কৃষি জমি রক্ষায় আমাদের সবার এগিয়ে আসা উচিৎ। 

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মারুফ আফজাল রাজন জানান, যদি কেউ ফসলি জমির মাটি কাটে তাহলে দেখে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এবিএন/সজল কুমার দাস/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ