ছাতকে প্রবাসী স্বামী-স্ত্রীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪:২০

সুনামগঞ্জের ছাতকে লন্ডন প্রবাসী স্বামী-স্ত্রীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃদ্ধা মা, তিন ভাই ও তিন বোন ৪ ফুফুকে বাদ দিয়ে দুই ভাইয়ের নামে ভূয়া একটি উত্তরাধিকারী সনদপত্র তৈরি করে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে বাড়ি ঘরের জায়গা স¤পত্তি নামজারি ও দলিল করার এ মামলাটি দায়ের করা হয়। এ ঘটনাটি ঘটেছে ছাতক উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ কুর্শী গ্রামে। ভয়ঙ্কর এ জাল- জালিয়াতির ঘটনায় সুনামগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ওই গ্রামের মৃত আবদুল মান্নান তালুকদারের পুত্র জিতু মিয়া। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর সুনামগেঞ্জর আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ছাতক, সুনামগঞ্জে সিআর মোকদ্দমা নং-৫৬৮/২২ দায়েরি মামলায় আসামী করা হয় বাদীর আপন বড় ভাই লন্ডন প্রবাসী মানিক মিয়া ওরফে আবদুল মানিক ও বড় ভাবী রেজিনা বেগমসহ আরও চারজনকে। 

জানা যায়, উপেজলার দক্ষিন কুর্শী গ্রামে আবদুল মান্নান তালুকদার নামের এক পুত্র ও চার কন্যাকে রেখে মারা যান তাদের বাবা মুজাফর আলী। 

পরবর্তীতে আবদুল মান্নান তালুকদার মারা গেলে তিনি তার উত্তরাধিকারী হিসেবে রেখে যান পুত্র মানিক মিয়া ওরফে আবদুল মানিক, সাবাজ মিয়া, ছালিক মিয়া, জিতু মিয়া ও আনোয়ার মিয়া, কন্যা রোকেয়া বেগম, সাফিয়া বেগম ও লুবনা বেগম এবং স্ত্রী হাওয়ারুন নেছাকে। সম্প্রতি আবদুল মান্নানের বড় পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী মানিক মিয়া ওরেফ আবদুল মানিক দোলার বাজার ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালিন সাবেক চেয়ারম্যান সায়েস্তা মিয়া ও সাবেক ইউপি সদস্য শিফক মিয়ার সীল স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতি করে একটি উত্তরাধিকারী সনদ তৈরি করেন। পাঁচ ভাই, তিন বোন ও মা জীবিত থাকার পরও মানিক মিয়া ওরফে আবদুল মানিক ও সাবাজ মিয়ার নামে তৈরি করা হয় একটি উত্তরাধিকারী সনদ। জীবিত থেকেও তারা মৃত! পরে এ ভূয়া উত্তরাধিকারী সনদ ছাতক ভূমি অফিসে কৌশলে দাখিল করে বাড়ি ঘরের জায়গা স¤িপত তাদের নামে নামজারি ও দুটি দলিল করে নেন। এতে বাড়ি ঘরের জায়গা স¤পত্তি থেকে বঞ্চিত হন বৃদ্ধা মা ভাই ও অন্যান্য বোনেরা।  বর্তমানে বঞ্চিতরাও ওই বাড়িতে বসবাস করে আসছে। গত বছেরর ২২ আগষ্ট মানিক মিয়া ওরেফ আবদুল মানিক যুক্তরাজ্য থেক তার ছোট ভাই সাবাজ মিয়া ও জিতু মিয়াকে আসামী করে একটি লিখিত অভিযাগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জাহিদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই পলাশ চন্দ্র ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং বাড়িতে বসবাসকারী বৃদ্ধা মা ও ভাই সাবাজ মিয়া ও জিতু মিয়াকে বাড়ি ঘরের জায়গা ছেড়ে দেয়ার হুমিক দেয়। 

দায়েরি মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের স্বাক্ষর ও সীল জাল-জালিয়াতি করে ভূয়া একটি উত্তরাধিকারী সনদ ও উপজেলা ভূমি অফিসে দুইটি জাল-দলিল করেছে। জাল রেজি: দলিল দুইটি হলো, ৪২৩৭/৯১ ও ৭৯১০/৯১ এবং ৪২৩৭/৯১ইং মূল দলিলে ৪ ৫ ও ৬ নং বিক্রেতার নাম পরিবর্তন করে অন্য মানুষের নাম অন্তর্ভূতি করেছে। সাব-রেজি: অফিসের সীল নকল করে অফিস থেকে অবিকল নকল না তুলে জাল-জালিয়াত পূর্ণ অবিকল নকল প্রস্তুত করে নামজারী মোকদ্দমা নং-১২৭৪/২০১৭-১৮ইং ব্যবহার করেছে। এদিকে, জিতু মিয়া কর্তৃক আদালতে দায়েরি মামলা প্রত্যাহারের জন্য নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে আসামীসহ তাদের পক্ষের লোকজন। এমন অভিযোগ করেছেন বাদী জিতু মিয়া। ভূমি খেকো চক্রের অব্যাহত হুমকিতে তিনি তার পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। বিষয়টি তিনি স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে জানালেও রহস্যজনক কারেণ পুলিশ এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। 

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সায়েস্তা মিয়া অস্বীকার কের বেলন, প্রবাসী মানিক মিয়াকে উত্তরাধিকারী সনদ তিনি দেননি। তারা তার স্বাক্ষর প্যাড সীল হয়তো জাল করেছেন। সাবেক ইউপি সদস্য শিফক মিয়াও চেয়ারম্যানের মতো একই কথা বলেন। বৃদ্ধা হাওয়ারুন নেছা বলেন, তার ৫ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে। বর্তমানে তিনি তার বসত বাড়িতেই বসবাস করছেন। আদালতে প্রবাসী স্বামী-স্ত্রীসহ গংদের বিরুদ্ধে দায়েরি মামলার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন জাহিদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র।

এবিএন/অরুন চক্রবর্তী/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ