আজকের শিরোনাম :

‘হাওর বাঁচাও’ আন্দোলনের টেকসই উন্নয়ন ভাবনা শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:২৭

হাওর ডুবি ও বন্যা পরবর্তী হাওরের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ‘টেকসই হাওর উন্নয়ন ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শনিবার বেলা ১১টায় পৌর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সুনামগঞ্জের ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠন এই সভার আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠনের সভাপতি ইয়াকুব বখত বাহলুল। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠনের সহ-সভাপতি সুখেন্দু সেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্মল ভট্টাচার্য্য, কার্যকরী কমিটির সভাপতি অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল, জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু। 

জেলা হাওর বাঁচাও আন্দোলন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. ওবায়দুল হক মিলনের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মো. আলী হায়দর, রাধিকা রঞ্জন দাস, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. হেলেনা আক্তার, যুগ্ম সম্পাদক প্রভাষক ফজলুল করীম, কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক প্রভাষক দুলাল মিয়া, বাঁধ বিষয়ক সম্পাদক রাজু আহমদ, প্রচার সম্পাদক মো. তৈয়বুর রহমান, অ্যাড. নাজমুল হুদা হিমেল, জামালগঞ্জ উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অঞ্জন পুরকায়স্থ, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল গণি আনসারী, ছাতকের সাংবাদিক শাহ মো. আক্তারুজ্জামান, শহীদ নুর আহমদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, ফারুক মিয়া। সভায় বক্তারা বলেন, চলতি বছরের বোরো মওসুমে পর পর হাওর ডুবি ও বর্ষায় দুই দফা বন্যায় জেলায় মারাত্মক বিপর্যয় ঘটেছে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে অর্থনৈতিক সংকটসহ সার্বিক জীবনযাত্রায় প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলেছে। এক ফসলি বোরো মওসুমের উপর নির্ভরশীল মানুষেরা এখনো বিগত দূর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারছে না। হাওর বাঁচাও আন্দোলন মনে করে হাওর ডুবি ও বন্যা পরবর্তী সময়ে জেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এখনই যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। যা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। কেননা, বিগত সময়ে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীলদের গাফিলতি, অনিয়ম-দুর্নীতি, পরিলক্ষিত হয়েছে। এই কারণে ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠন বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। 

আলোচনা সভায় বক্তারা টেকসই হাওর উন্নয়নে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন, বাঁধ নির্মাণ কাজের প্রাক্কলন সরেজমিনে নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ করা, গণশুনানীর মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের অর্ন্তভূক্ত করে পিআইসি গঠন করে পিআইসির তালিকা অনলাইনে আপলোড করা ও ১৫ ডিসেম্বর একযুগে নির্মাণ কাজ শুরু করে নির্ধারিত সময়ে শেষ করা হয়েছে মর্মে জনসম্মুখে তুলে ধরা, গুরুত্বপূর্ণ ক্লোজারে কজওয়ে নির্মাণ করাসহ ক্ষতিগ্রস্ত স্লুইস গেইটের সংস্কার কাজ করা, স্থানীয় কৃষক কর্তৃক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের অভিযোগ আসলে তা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা, বিগত মওসুমে যেসকল পিআইসি কাজে গাফিলতি ও অনিয়ম দুর্নীতি করেছে তাদেরকে নতুন করে পিআইসিতে অর্ন্তভূক্তি না করা ও এ সকল পিআইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা, যথা সময়ে প্রকল্পের অর্থ ছাড় ও মনিটরিং জোরদার করাসহ নির্মাণকৃত সকল বাঁধের অগ্রগতি প্রতিবেদন তুলে ধরা, আগামী বোরো মওসুমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনা শর্তে ঋণ, বীজ, সারসহ কৃষি উপকরণ প্রদান করা। 

বক্তারা ভয়াবহ বন্যার কবল থেকে বাঁচতে তাঁরা আরও কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরেন, ভরাটকৃত সকল নদী, নালা, খাল, বিল খনন করা ও খনন কার্যক্রম নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করে অর্থ ছাড় দেয়া, নগরায়নের নামে পুকুর, জলাশয়, খাল ভরাট বন্ধ করা ও ভূমি জরিপের মাধ্যমে দখলকৃত খাল উচ্ছেদ করা, সুনামগঞ্জ পৌর শহর রক্ষায় সুরমা নদীর পাশ দিয়ে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা, হাওর ডুবি ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার স্থায়ী পুনর্বাসনের আওতায় নিয়ে আসা, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে জেলায় বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র স্থাপন করা ও ৪৮ ঘণ্টার আগে সতর্কতা জারি করা, বজ্রপাতে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণ করা। 

এবিএন/অরুন চক্রবর্তী/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ