আজকের শিরোনাম :

জাতীয় মার্শাল আর্টে প্রথম হলো গোপালগঞ্জের নাসির

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২২, ১১:৪৯

৫৯ জন প্রতিযোগিকে পিছনে ফেলে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল স্মৃতি জাতীয় মার্শাল আর্ট প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হাফেজ মো. আলীমুজ্জামান নাসির। 

গত ৫ আগস্ট থেকে চার দিনব্যাপী রাজধানীর পুরানা পল্টনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জিমনেসিয়ামে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। 

এতে গোপালগঞ্জ স্পোটিং ক্লাব, ঢাকা ক্রীড়া সংস্থা, নরসিংদী ক্রীড়া সংস্থা, বরিশাল ক্রীড়া সংস্থা, নোয়াখালী ক্রীড়া সংস্থা, গাজীপুর ক্রীড়া সংস্থা ও রংপুর ক্রীড়া সংস্থার ৬০ জন প্রতিযোগি অংশ নেন। 

নাসির গোপালগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের পক্ষে ৫৯ প্রতিযোগির সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৪টি স্বর্ণ, ৫টি রোপ্য ও একটি ব্রোঞ্জপদক অর্জন করেন। 

বাংলাদেশ মার্শাল আর্ট ফেডারেশনের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোনেম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মার্শাল আর্ট কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাসান উজ জামান মনি, দপ্তর সম্পাদক মো. নাজমুস সাকিব প্রমুখ।

হাফেজ মো. আলীমুজ্জামান নাসির গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার খায়েরহাট গ্রামের সাংবাদিক মো. পান্নু শিকদারের ছেলে। মা গৃহিনী। 

আলীমুজ্জামান নাসির জানান, ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখতেন একজন বড় যোদ্ধা হওয়ার। ২০১৪ সালে হেফজ শেষ করে ঢাকায় মাওলানা পড়তে যান। এ সময় মার্শাল আর্টে ভর্তি হওয়ার উচ্ছার কথা তাঁর বড় ভাইকে জানান এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মার্শাল আর্ট ক্লাব খুঁজতে থাকেন। ২০১৭ সালের দিকে ঢাকায় মেজবাহ আর্ট একাডেমীতে ভর্তি হন। সেখানে এস এম মেজবাহ উদ্দীনের তত্ত্বাবধানে অনুশীলন শুরু করেন। নাসিরের ভালো প্রতিভা দেখে মেজবাহ উদ্দীন তাকে একটি ম্যাচে খেলার সুযোগ করে দেন। তবে নাসির সে ম্যাচটিতে হেরে যান। এরপর থেকে আর কোন ম্যাচে তাকে হারতে হয়নি। 

২০২১ সালের কিশোরগঞ্জের নেহাল পার্কে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু জাতীয় কুংফু প্রতিযোগিতায় দেশের ১৮টি জেলার ৬৫ জন প্রতিযোগিকে পিছনে ফেলে স্বর্ণপদক অর্জন করেন নাসির। এরপর গত মার্চে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় তাইচি কুংফু প্রতিযোগিতায় ১৮টি জেলার ২০০ প্রতিযোগিকে পিছনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকার করে স্বর্ণের মেডেল অর্জন করেন। 

নাসির বলেন, ‘এ কৃতিত্বের পেছনে আমার বাবার অবদান অনেক। আমার বাবা সব সময় আমাকে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। আমার বড় ভাইও আমাকে নানা ধরণের সহযোগিতা করেছেন। আর সর্বোপরি আমার শিক্ষক মেজবাহ স্যার নিজের ছেলের মতো আমাকে গড়ে তুলেছেন। আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।’ 

নাসির আরও বলন, প্রতিটি মানুষের জন্য মার্শাল আর্ট শেখা জরুরী। শরীরকে সুস্থ রাখা, মনোবল বাড়ানো, আত্মরক্ষা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। 

গোপালগঞ্জ স্পোটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম হেরা বলেন, ‘নাসির গোপালগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের পক্ষে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল স্মৃতি জাতীয় মার্শাল আর্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন। নাসির গোপালগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব তথা গোপালগঞ্জ জেলাকে সবার সামনে তুলে ধরেছেন। গোপালগঞ্জবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছেন। তার এ সাফল্যে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। আমি তার ভবিষ্যৎ সাফল্য ও মঙ্গল কামনা করি। নাসিরের এ অর্জন জেলার মার্শাল আর্টে নবজাগরণ সৃষ্টি করবে।’ 

আওয়ামী লীগ নেতা শরাফত হোসেন লাভলু মৃধা বলেন, ‘কাশিয়ানী উপজেলার খায়েরহাট গ্রামের কৃতি সন্তান আলীমুজ্জামান নাসির যে কৃতিত্ব অর্জন করেছেন এ জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন। সে আমাদের কাশিয়ানীবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছেন। আমি তার সাফল্য কামনা করছি। সে যেন আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারেন।

কাশিয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী খোকন বলেন, ‘আলীমুজ্জামান নাসির আমাদের খায়েরহাট গ্রাম তথা গোপালগঞ্জ জেলার মুখ উজ্জ্বল করেছে। আমাদের সে অনেক বড় করেছে। এ জন্য আমি এবং আমার ইউনিয়নবাসী আনন্দিত ও গর্বিত। তাকে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমাদের এলাকায় একটি ক্লাব করার দাবি নাসিরের কাছে। এ জন্য যা যা লাগবে আমি এবং আমার উপজেলা প্রশাসন তাকে সহযোগিতা করব।’

এবিএন/লিয়াকত হোসেন লিংকন/জসিম/গালিব

এই বিভাগের আরো সংবাদ