আজকের শিরোনাম :

নরসিংদীতে নিখোঁজ ৪ আওয়ামী লীগ নেতার সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২২, ১৪:৪৮

৫ বছর আগে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেয়ার পর নিখোঁজ নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীর চার আওয়ামী লীগ নেতার সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন করেছে স্বজন ও এলাকাবাসী। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরে নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন করা হয়। এতে নিখোঁজ চার ব্যক্তির পরিবারের সদস্যসহ দেড় শতাধিক এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন।

নিখোঁজ চারজন হলেন রায়পুরার বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সহসভাপতি রুপ মিয়া মেস্বার, ক্রীড়া সম্পাদক হাবিব মেম্বার, ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল ও ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন। 

পাঁচ বছর আগে বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তৎকালীন এই চার নেতাকে পুলিশ পরিচয়ে প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি স্বজনদের। 

মানববন্ধনে স্বজনরা জানান, ২০১৭ সালের ২৬ মে বিকেলে বালুয়াকান্দি গ্রাম থেকে আওয়ামী লীগ নেতা রুপ মিয়া ও যুবলীগ নেতা আজিজুল এবং বাঁশগাড়ি গ্রাম থেকে আওয়ামী লীগ নেতা হাবিব ও জাকির হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় রায়পুরা থানা পুলিশ। পরে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের আটকে রাখা হয় বাঁশগাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে। সেখান থেকে রাতে থানায় নেয়া হয়েছে বলে জানতে পারলেও পরদিন থানা ও আদালতে তাদের খোঁজ মেলেনি। বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে আসা একটি চক্রের পক্ষ থেকে ঘুষ পেয়ে পুলিশ এই চারজনকে তুলে নিয়ে গুম করেছে বলে দাবি স্বজনদের।

মানববন্ধনে নিখোঁজ আজিজুল ইসলামের মা নূরজাহান বেগম জানান, আমার ছেলের খোঁজ নাই আজ পাঁচ বছর। প্রতিদিন আশায় থাকি আমার ছেলে ফিরবে। পাঁচ বছর হলো, ছেলে তো আর ফেরে না! আমি আমার ছেলের সন্ধান চাই।

নিখোঁজ রুপ মিয়া মেম্বারের ভাতিজা মাইন উদ্দিন জানান, ১৬ বছর সৌদি আরব ছিলাম আমি। আমার কাকার নিখোঁজের সংবাদ পেয়ে দেশে আসি। জেলখানা, কোর্ট কোথাও খুঁজে পাইনি। পুলিশ জানায়, আমরা নাকি তাদের কাছ থেকে চারজনকে ছিনিয়ে নিয়েছি। পরে আমাকেও ধরে নিয়ে পায়ে গুলি করেছে। একটা পা নাই আমার, আমাকেও অস্ত্র মামলা দিয়েছে পুলিশ। আনুমানিক ৪ মাস জেল খেটেছি।  যেই অবস্থাতেই হোক, আমার কাকাসহ চারজনকে ফেরত চাই আমি। 

নিখোঁজ হাবিব মেম্বারের বড় ভাই সফিয়ত উল্লাহ বলেন, আমার ভাইকে ফেরত চাই আমি। বিএনপি থেকে আওয়ামীলীগে যোগ দেয়া স্থানীয় হাইব্রিড আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল হক ও তার সমর্থকরা মিলে পুলিশকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে এই কাজ করিয়েছে। পুলিশ শতশত মানুষের সামনে থেকে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার পর আজ পাঁচ বছর ধরে কোন সন্ধান পাচ্ছি না। সব জায়গায় ঘুরেছি মামলা করতে গিয়েছি কিন্তু আমাদের মামলা পর্যন্ত নেয়নি। বরং পুলিশ আমাকে ধরে নরসিংদীর পাঁচ নাম্বার ব্রিজে নিয়ে গিয়ে পায়ে গুলি করে অস্ত্র মামলা দেয়। পুলিশ পায়ে গুলি করার পর আমার পা কেটে ফেলে দিতে হয়েছে আজ আমি পঙ্গু হয়ে গিয়েছি। আমি এর বিচার চাই, সেই সাথে আমার ভাইসহ চারজনের সন্ধান চাই।

এ সময় বক্তব্য রাখেন, নিখোঁজ পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী।

চারজন নিখোঁজ ও মানববন্ধনের বিষয়ে জানতে চাইলে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। মানববন্ধন কারা করেছে, আমি দেখি আগে।

এবিএন/সুমন রায়/এসএ/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ