আজকের শিরোনাম :

ধর্মপাশায় হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে জলমহাল ভোগদখলের অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৪৬

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলাধীন  "চাদরা গ্রুপ বিল" নামক জলমহালটি হাই কোর্টের আদেশ অমান্য করে উপজলা  প্রশাসনের যোগসাজশে রুপ্তর মিয়া নামে এক ব্যক্তি ভোগদখল করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ক্সএদিকে হাইকোর্টের নির্দেশক্রমে উক্ত জলমহালের ইজারাদার চারদা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি অভিজিৎ বর্মণ বাৎসরিক  খাজনা বাবত ৯লাখ টাকা খাজনা পরিশোধ করেও তিনি জলমহালটি ভোগদখল করতে না পেরে তিনি মারাত্মকভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

জানা গেছে,  উপজেলার চাদরা গ্রুপ "নামক জলমহালটি গত ১৪২৩ বাংলা সন হইতে ১৪২৮ বাংলা সন পর্যন্ত প্রথম চার বছর ব্যসরিক ২৭ লাখ টাকা ও পরবর্তী ২ বছরের জন্য ৩৪ লাখ টাকা করে  খাজনায় ৬ বছরের জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনায় ইজারাপ্রাপ্ত হয় চাদরা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি অভিজিৎ বর্মন।  উক্ত জলমহালের ইজারাদার অভিজিৎ বর্মন জলমহালটি ইজারাপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই নীতিমালা অনুযায়ী বাৎসরিক খাজনা পরিশোধ করেই জলমহালটি ভোগদখল করে আসছিলেন। কিন্তু ইজারাদার অভিজিৎ বর্মন তিনি  ব্যক্তিগত বিভিন্ন  সমস্যায় থাকার কারনে  সময়মতো উক্ত জলমহালটির চলতি বছরের খাজনার টাকা পরিশোধ করতে পারিননি। এরই প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন উক্ত জলমহালটির ইজারার অনুমোদন বাতিল করে খাস আদায়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।  পরবর্তীতে উক্ত জলমহালের  ইজারাদার অভিজিৎ বর্মন জেলা প্রশাসনের ওই আদেশের বিপক্ষে ৮১০/২২ মূলে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন।

উচ্চ আদালত ইজারাদারের দায়েরকৃত রিট পিটিশনটি আমলে নিয়ে এই মূহুর্তে যতটুকু সম্ভব খাজনার অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে চালানের রশিদের কপি আদালতে দায়ের করার জন্য ইজারাদারকে নির্দেশ দেন। ইজারাদার আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ২ লাখ টাকা চালান মূলে সোণালী ব্যাংক বাড্ডা শাখায় চলতি জানুয়ারি মাসের ১৬ তারিখে সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে উক্ত চালানের কপি উচ্চ আদালতে দাখিল করেন। পরবর্তীতে উল্লেখিত রিট পিটিশনের শুনানী শেষে উচ্চ আদালত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইস্যুকৃত চাদরা বিল  গ্রুপ নামে জলমহালটির ইজারা বাতিল ও খাস আদায়ের নির্দেশটি স্থগিত করেন। একই সাথে উচ্চ আদালত আগামি ১ মাসের মধ্যে উক্ত জলমহালের খাজনা বাবদ আরো ৭ লাখ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন চাদরা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডকে। কিন্তু ইজারাদার উচ্চ আদালতের সকল আদেশ যথাযথভাবে পালণ করে আসলেও উপজেলা প্রশাসন উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তাঁদের পক্ষ থেকে খাস ইজারাপ্রাপ্ত রুপ্তন মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে ওই জলমহাল থেকে এখনো সরিয়ে নিচ্ছেননা। এতে করে উক্ত জলমহালের বৈধ ইজারাপ্রাপ্ত চাদরা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পক্ষ থেকে ওই জলমহালটিতে লাখ লাখ টাকার গাছের ডাল ও বাঁশ দিয়ে সংরক্ষণকৃত মাছগুলো বড় বড় জাল দিয়ে রাতারাতি ধরে নিয়ে  যাচ্ছেন খাস ইজারাপ্রাপ্ত রুপ্তন মিয়ার নেতৃত্বে তার লোকজন।

এতে করে উক্ত জলমহালের বৈধ ইজারাপ্রাপ্ত সমিতি চাদরা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড  জলমহালটি ভোগ দখল করতে না পারায় তারা এবার প্রায় কোটি টাকার ক্ষতির সম্মূখীন হবে বলে জানিয়েছেন ওই সমিতির সভাপতি অভিজিৎ বর্মণ।
শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে ওই জলমহালটিতে গিয়ে দেখা যায়, জলমহালের পাড়ে সরকারি সিলমোহর সংবলিত একটি বড় প্লাস্টিকের ত্রিপাল দিয়ে তাবু তৈরী করা হয়েছে এবং জলমহালটিতে  ৬-৭টি ছোট-বড়    নৌকায় করে বড় বড় জাল দিয়ে প্রায় ৪০-৫০ জন লোক মাছ ধরছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জেলে জানান, তারা প্রতিদিন ওই জলমহাল থেকে জাল দিয়ে প্রায় ৪-৫ লাখ টাকার মাছ ধরে আসছেন।

এ ব্যাপারে জলমহালের খাস ইজারাপ্রাপ্ত ব্যক্তি রুপ্তন মিয়া বলেন, উপজলা প্রশাসনের কাছ থেকে আমি জলমহালটি খাস কালেকশনের মাধ্যমে ইজারায় এনেছি বলেইতো সেটি ভোগ দখল করছি। আপনার কিছু বলার থাকলে ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান বলেন, এ ব্যাপারে পরবর্তী অফিশিয়াল কোনো ডকুমেন্ট আমি এখনো পাইনি। পাইলে সে অনুযায়ীই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ইজারাদার জলমহালের খাজনার বাকি টাকা পরিশোধ করলে তাকে অবশ্যই জলমহালের দখল বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

এবিএন/মো. ইমাম হোসেন/গালিব/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ