আজকের শিরোনাম :

শ্যামনগরে কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত প্রায় খেজুরের রস

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮:৫২

কালের বিবর্তনে জলবায়ু সংকট ও মানব সৃষ্ট কারণে প্রতিকূল পরিবেশে প্রায় বিলুপ্ত হয়েছে খেজুর গাছ আর শীতকালের মিষ্টি খেজুরের রস। এরই মধ্যে উপজেলার সীমিত খেজুর গাছে রসের চাহিদা কিছুটা যোগান দেয়ার আশা করছেন গাছিরা। হেমেন্তর উষ্ণ স্পর্শ কাটতে না -কাটতেই কুয়াশার চাঁদর মুড়ি দিয়ে আগমন ঘটছে শীতের। ভোরের মৃদু কুয়াশা বলে দিচ্ছে শীত খুব কাছে। তারই ধারাবহিকতায় শীতের আগমনের সাথে সাথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন উজেলার গাছিরা। তারা বলছেন, শীতকালে গ্রাম বাংলার বেশিরভাগ মানুষের আয়ের বড় একটি উৎস হল খেজুর গাছ। এ সময় খেজুর গাছের রস ও রস থেকে তৈরি গুড় বিক্রি করে সংসারের খরচ নির্বাহ করেন অনেকেই। তারই ধারাবাহিকতায় শীতের দেখা মিলতেই খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের গাছিরা।

সাধারণত অগ্রহায়ন মাসের মাঝামাঝি সময়ে খেজুর গাছ পরিষ্কারের কাজ শুরু করে। অগ্রহায়ন মাসের শেষের দিকেই শুরু হয় খেজুরের রস আহরন। যা চলতে থাকে ফাল্গুন, চৈত্র মাসের প্রায় শেষ পর্যন্ত। তবে এ বছর একটু আগের ভাগে শীতের আগমন ঘটায় আগে থেকেই রস কাজে সংগ্রহে নেমেছেন গাছিরা। গাছিরা বলছেন, শীতের তিব্রতার উপর নির্ভর করে রস উৎপাদন। শীত বেশি হলে রস বেশি, স্বচ্ছ ও মিষ্টি হয় বেশি। তবে কুয়াশা বেশি হলে রস ঘোলা হয়ে যায়। খেজুরের রস বাঙালীদের কাছে যেমন জনপ্রিয়। ঠিক তেমনি খেজুরের গুড় ও অধিক প্রিয় মিষ্টি প্রেমি মানুষের কাছে। কাশিমাড়ীর এলাকার গাছি ছবেদ আলী  জানান,  আমাদের কাছে শীত আসে। অনেক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে। শীতকালে দিনের বেশি ভাগ সময় আমরা খেজুর গাছ পরিচর্যার কাজে সময় ব্যায় করি। তবে এখন খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় মানুষের চাহিদা পূরণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

শহরের অদূরে জয়নগর এলাকার গাছি বাশার সরদার জানান, এক সময় আমার প্রায় দুই শতাধিক খেজুর গাছ ছিল। বৈরি আবহাওয়ার কারণে কালের বিবর্তনে আবাদি জমি কমে বসতি এলাকা গড়ে ওঠায় সব গাছ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন আমার অর্ধ - শতাধিক খেজুর গাছ আছে। সেগুলো পালাক্রমে রস সংগ্রহরে উপযোগী করার কাজ করছি। তিনি আরো জানান, আমার যে খেজুর গাছগুলো আছে তা থেকে সংগৃহীত রস নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে এলাকায় বিক্রি করে দেই। খেজুরের গুড়ে পর্যাপ্ত দাম না পাওয়ায় এখন আর গুড় তৈরি করি না। কাঁচা রস বিক্রি করে দেই। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে বর্তমান সময়ে এসে আজ গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্য প্রায় বিলুপ্তির পথে বলা চলে। তার বেশ কয়েকটি কারণের মধ্যে রস সংগ্রহ আনেক কষ্টের কাজ বিধায় অনেকে ছেড়ে দিচ্ছে, তাছাড়া বর্তমানে এই খেজুর রস আহারণে দক্ষ গাছি তৈরি হচ্ছে না যেটা আর ও একটি কারণ আর ও একটি বড় কারণ ইট ভাটার জ্বালানি হিসাবে খেজুর কাঠের চাহিদা ব্যাপক সেই কারণে প্রতি বছর বহু গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে যেটা গ্রাম বাংলার এই ওতিহ্য নষ্ট সহ পরিবেশ নষ্টের একটা বড় কারণ। তাই আমাদের আবহমান কাল থেকে পেয়ে আশা গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য সকলকে এগিয়ে আশা উচিৎ।

এবিএন/আলমগীর সিদ্দিকী/গালিব/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ