সিলেট-সুনামগঞ্জ-মোহনগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারনে দাবি ব্যবসায়ীদের

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২১, ২০:০৭

বহুমুখি সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও যোগাযোগ অবকাঠামোগত কারণে এখনো সুনামগঞ্জের ব্যবসা-বাণিজ্য আশানুরূপ সম্প্রসারণ হচ্ছে না। অতীতের মতো ব্যবসায়ীদের উদ্যোগ-উদ্যম আছে, দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে আমরা আজো পিছিয়ে আছি । এখনো আমাদের একমাত্র প্রধান ও ব্যয়বহুল পরিবহন ব্যবস্থা সড়ক পথ। তাই সহজে কম খরচে দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে বিপুল ব্যয়ের এই সড়ক পথই আমাদের ভরসা। এখন সিলেট- সুনামগঞ্জ-মোহনগঞ্জ রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প যখন আমাদের সামনে বাস্তবায়ন রূপে ধরা দিয়েছে তখন আমাদের বহুল কাঙ্খিত এই উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে অপরাজনীতি হোক আমরা চাই না, চাইনা আমাদের স্বপ্নের এই দাবিটি মুখ থুবড়ে পড়ে থাকুক ।

আমরা তাই জনপ্রতিনিধিদের এ নিয়ে রাজনীতি না করে কিভাবে দাবিটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায় সেই আহ্বান জানাতে চাই । আমরা চাইনা  আমাদের সজ্জন রাজনীতিবিদ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আস্তাভাজন পরিকল্পনামন্ত্রী এম,এ মান্নানকে পাশ কাটিয়ে এই প্রকল্পে বাইরের কোন মন্ত্রীকে অযাচিতভাবে ডেকে এনে পানিা ঘোলা করার রাজনীতি করুন আমাদের জনপ্রতিনীধিরা । রোববার দুপুরে সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি খায়রুল হুদা চপলের সভাপতিত্বে চেম্বারের সম্মেলন কক্ষে ভার্চুয়াল সভায় সর্বস্তরের ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এসব কথা বলেন।

তারা আরও বলেন, আমাদের দাবি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টেকনিক্যাল এক্সপার্টরা যেদিকে রেললাইন সম্প্রসারণের মতামত দিবেন আমরা সেদিকেই বৃহত্তর স্বার্থে রেললাইন সম্প্রসারণ কার্যক্রম মেনে নেব । আমরা উন্নয়ন থেকে আর বঞ্চিত থাকতে চাইনা, চাইনা আমাদের স্বপ্নের প্রকল্পের বিলম্ব হোক। করোনা মহামারিকালে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা সংকটে আমরা হাবুডুবু খাচ্ছি । তবে এর মধ্যেই  সিলেট-সুনামগঞ্জ-মোহনগঞ্জ রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প আলোর মুখ দেখায় আমরা আশাবাদী হয়ে ওঠি ।  নির্বাচিত সংসদ সদস্যবৃন্দও সাধ্যমতো উন্নয়নের কাজ করছেন ।

অল্প সময়ের মধ্যে স্বপ্ন দেখা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,  বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, উত্তরের দুয়ার খ্যাত যাদুকাটায় শাহ আরোফিন-অদ্বৈত্য সেতু, দক্ষিনের দুয়ার খ্যাত কুশিয়ারা সেতুসহ নানা ধরনের  স্থাপনা আমাদের সামনে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে । সেতু, দক্ষিনের দুয়ার খ্যাত কুশিয়ারা সেতুসহ নানা ধরনের  স্থাপনা আমাদের সামনে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। আরো বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নেও আমরা ভাবতে শুরু করি । এর মধ্যে আমাদের স্বপ্নের প্রকল্প সুনামগঞ্জ রেললাইন সম্প্রসারণ কাজও এগুতে থাকে । আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাছাই কার্যক্রমও চলে । এই অবস্থায় উত্তর ছাতক ও দোয়ারাবাসী দাবি করেন ছাতক শহর থেকে সুনামগঞ্জ শহর পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের ।

অন্যদিকে জাউয়াসহ দক্ষিণ ছাতকবাসী দাবি করেন গোবিন্দগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জ শহরে রেল লাইন নিয়ে আসার জন্য ।  তাদের যুক্তি ব্যবসা বাণিজ্যে জন্য এই পথ উপযুক্ত । জনগনের বিভক্ত অংশের দাবির প্রতি কন্ঠ মিলান জনপ্রতিনিধিরাও । সম্প্রতি এই বিতর্কে জড়ান আমাদের সুনামগঞ্জ-৫ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা, সুনামগঞ্জ-৪আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, সুনামগঞ্জ-১ আসনের  সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার।

তারা উত্তর ছাতকবাসীর দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে ছাতক পৌর শহর থেকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরে রেললাইন সম্প্রসারণের জন্য রেলমন্ত্রী বরাবরে দাবি জানান । এই দাবিকে অযৌক্তিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে আমাদের মন্ত্রী এমএ মান্নানকে পাশ কাটিয়ে সিলেট শহরের আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়কে যুক্ত করে আরো বিতর্ক বাড়িয়ে তুলেন । এতে সাধারণ মানুষজনের সাথে আমাদের ব্যবসায়ী সমাজও মমার্হত । তাই সাধারণ জনগণের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যেও শঙ্কা দেখা দিয়েছে যে রেললাইন সম্প্রসারণের প্রকল্প আবারও বিলম্বিত হবে । রাজনৈতিক হিংসার কারণে অধরা থাকবে আমাদের কাঙ্খিত দাবিটি ।

আমাদের ব্যবসায়ী সমাজের স্পষ্ঠ বক্তব্য হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তার টেকনিক্যাল এক্সপার্টরা যেদিকে বৃহত্তর স্বার্থে রেললাইন সম্প্রসারণ করবেন আমরা সেদিকেই মেনে নেব । কারণ এ নিয়ে অপরাজনীতি করে আমরা আর উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে থাকতে চাইনা । আমরা চাই সিলেট-সুনামগঞ্জ-মোহনগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইনের মাধ্যমে  আন্তজেলা যোগাযোগ সম্প্রসারিত হোক । ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগের প্রসার ঘটুক। আমাদের ব্যবসায়ী সমাজের দাবি মাননীয় ৫ জন সংসদ সদস্যের কাছে, তারা যেভাবে আগে মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী এম,এ মান্নানের  নেতৃত্বে মিলেমিশে জেলার উন্নয়নে কাজ করেছেন আবারও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় মিলেমিশে কাজ করবেন ।

তাহলেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা হবে । সবার কাছে আমাদের এই প্রত্যাশা । আসুন, উন্নয়নের প্রশ্নে আমরা সকল বিভক্তি ও বিভ্রান্তি দূর করে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাই । ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেন চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ সভাপতি আমিনুল হক, সহ সভাপতি খন্দকার মনজুর আহমেদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জিয়াউল হক, নুরুল ইসলাম বজলু, শংকর চন্দ দাস, অমল কর, রাখাব উদ্দিন, খছরুল আলম, সুশান্ত রায়, রাজিব রায়, এনাম আহমেদ,জিএম তাহশীজসহ চেম্বারের পরিচালকবৃন্দ।  

এবিএন/অরুন চক্রবর্তী/জসিম/জুয়েল

এই বিভাগের আরো সংবাদ