আজকের শিরোনাম :

শোক দিবসে আলোচনা সভা-দোয়া মাহফিল করবে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২২, ১৭:৩৭

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ‘সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ’-এর ব্যানারে শনিবার (১৩ আগস্ট) শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এরপর থেকে শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতাবিরোধী, বঙ্গবন্ধুবিরোধী, একাত্তরের ঘাতকদের সহযোগী আখ্যা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হচ্ছে। তারা বুয়েটে রাজনীতি চান না। শোক দিবস পালন বা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোনো কর্মসূচির বিরোধী নয়। তবে সেটা কোনো দল বা সংগঠনের নামে করাকে অবৈধ মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

একই সঙ্গে সোমবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করার ঘোষণা দেন তারা।

রোববার (১৪ আগস্ট) বুয়েট অডিটোরিয়ামের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এসব কথা জানান।

লিখিত বক্তব্যে বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, বুয়েট অডিটোরিয়াম ভবনের সেমিনার কক্ষে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বুয়েটের সাবেক নেতৃবৃন্দ’ ব্যানারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর বুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। প্রশাসনিক আইন অনুসারে, বুয়েটের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, প্রশাসনিক এবং অ্যাকাডেমিক কাজে নিয়োজিতরা এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে বাধ্য।

‘এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের ব্যানার দেখে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে অবহিত করেন এবং কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামের সামনে অবস্থান গ্রহণ করেন। বুয়েটে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুত্থানের আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে উপস্থাপন করা হয়।’

ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ব্যানারে করা কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘সেমিনার কক্ষে তাদের অনুষ্ঠান যথারীতি সমাপ্ত হয়। শিক্ষার্থীরা সেখানে কোনো বাধা দেননি। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মূল উদ্দেশ্য ছিল, ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের ব্যানার ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ায় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জবাবদিহিতা আদায় করা।’

তারা আরও বলেন, ‘অতীতে বুয়েটে একাধিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বিরাজমান রাজনৈতিক অপসংস্কৃতির বলি হয়েছেন। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন আবরার ফাহাদ। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির কালো থাবায় আমাদের নিরাপদ ক্যাম্পাস যেন পুনরায় ত্রাসের রাজত্বে পরিণত না হয়, সেই আশঙ্কার জায়গা থেকে শনিবার (১৩ আগস্ট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমবেত হই।’

জাতীয় শোক দিবসে আলোচনা সভা-দোয়া মাহফিলের ঘোষণা
এদিকে, শিক্ষার্থীরা ১৫ আগস্ট (সোমবার) বুয়েটে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা বলেন, বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীদের আয়োজনে জাতীয় দিবসসমূহে নিয়মিত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ আগস্ট সোমবার বিকেল ৫টায় ক্যাফেটেরিয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে।

‘একই সঙ্গে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদনে বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে বুয়েটের সব প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি, বর্তমান ও সাবেক সাবেক সব শিক্ষার্থীকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। এছাড়া জাতির শ্রেষ্ঠসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরও সাদর আমন্ত্রণ। আমাদের এ আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আপনাদের সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।’

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারকে রুখে দিয়ে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবসময় প্রস্তুত। সেই সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অনুসরণ করে বুয়েটের সবাই ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক, নৈতিক ও মানবিক সব ধরনের দায়িত্ব, সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে সদা অবিচল থাকবো।’

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ