চা-শিঙাড়া নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশে ঢাবির প্রতিবাদ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২১, ২১:০৮ | আপডেট : ১৭ জুন ২০২১, ২১:২৫

ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তুলনা করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাকালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যখন গবেষণা করছে, তখন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাস্তার ওপর বাঁশ দিয়ে বহিরাগতদের চলাচল সীমিত করতে ব্যস্ত।

সম্প্রতি একটি পত্রিকায় প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের একটি ব্যঙ্গচিত্রকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলে মন্তব্য করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গঠনমূলক সমালোচনা সহ্য করার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শ্রদ্ধাশীল।’

‘তবে কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমালোচনার রীতিনীতি ও মূল্যবোধ উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মানহানি ঘটায় তাহলে দেশের আইন তার যে প্রতিকার দেয় সে বিষয়েও কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল।’

সম্প্রতি ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে ‘Oxford of the East: A moniker that couldn't ring hollower’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের একটি ব্যঙ্গচিত্রও আঁকা হয়েছে।

ইংরেজি দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তুলনা করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাকালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যখন গবেষণা করছে, তখন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাস্তার ওপর বাঁশ দিয়ে বহিরাগতদের চলাচল সীমিত করতে ব্যস্ত।

প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ক্যাফেটরিয়াতে স্বল্প মূল্যে পাওয়া চা, চপ, শিঙাড়া নিয়ে ২০১৯ সালে নবীন শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপাচার্যের দেয়া বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা করা হয়।

এর প্রতিবাদে জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সেদিনের বক্তব্যকে খণ্ডিতভাবে প্রচার করা হয়েছে। যমুনা টেলিভিশনের এক সাংবাদিক উপাচার্যের বক্তব্যের মূল অংশ কাটছাঁট করে ক্যাফেটরিয়ার বিভিন্ন খাবার আইটেমের মূল্যমান-সংক্রান্ত বক্তব্যের অংশবিশেষ নিয়ে ১৫-২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও তৈরি করে। যা ভাইরাল হয়ে যায়।’

‘সেদিন উপাচার্য মূলত নবাগত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাস্যরসে ক্যাফেটরিয়ার সাধারণ, স্বল্পমূল্যের খাবার মেন্যু ও সবার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধার অবারিত সেবা কার্যক্রমের কথা বলেছিলেন।’

এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি কোনো কোনো দায়িত্বশীল মহল বিভিন্নভাবে বিষয়টি যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করছে, যা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত।

ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনে করোনা মহামারির সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা তুলে ধরে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে সাড়া দেয়নি। কোভিড-১৯ টেস্টিং কার্যক্রম শুরু করে বেশ দেরিতে। কিছুদিন পর আবার ল্যাব বন্ধ করে দেয়।

এই বক্তব্যকে বিভ্রান্তিকর দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনো বিলম্ব ছাড়াই ১৯ মার্চ ২০২০ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞানী, জিন প্রকৌশলী ও প্রাণরসায়নবিদদের নিয়ে প্রথম "COVID-19 (Pandemic) রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি” গঠন করা হয়।

‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব উদ্যোগে বায়োসেফটি নিশ্চিত করে তিন সপ্তাহে তৈরি করা হয় কোভিড-১৯ টেস্টিং ল্যাব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন পাওয়ার পর ৫ মে ২০২০ এটির উদ্বোধন করা হয়। সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং কয়েকজন শিক্ষক দ্বারা এটি পরিচালিত হতে থাকে। কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য হাসপাতাল বা ডেডিকেটেড ল্যাবের মতো কোনো ল্যাব ও প্রশিক্ষিত জনবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল না। এ পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানিয়ে টেস্টিং কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হয়েছিল; ল্যাব বন্ধ করে দেয়া হয়নি। ১০ দিন পর যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে, জনবল সংগ্রহ করে পুনরায় টেস্টিং সেবা কার্যক্রম শুরু হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অস্বীকার করার উপায় নেই, অক্সফোর্ড বা জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মৌলিক গবেষণা পরিচালনা করে টিকা/ঔষধ আবিষ্কার বা টেস্টিং কিট উদ্ভাবন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করতে পারেনি। তবে এর কারণ বোধকরি অনেকেই জানেন।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ