আজকের শিরোনাম :

বাল্যবিয়েতে দ. এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৩, ১৬:০৫

বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে এবং বিশ্বে অষ্টম অবস্থানে বাংলাদেশ। বুধবার প্রকাশিত জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন বলছে, গত এক দশকে বাল্যবিয়ে ধারাবাহিকভাবে কমা সত্ত্বেও বাংলাদেশে ৫১ শতাংশ তরুণীর শৈশবে বিয়ে হয়েছে। ১৮ বছর হওয়ার আগেই বাংলাদেশে ৩ কোটি ৪৫ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে। আর ১৫ বছর হওয়ার আগে বিয়ে হয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ নারীর। অগ্রগতি সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ায় এখনো প্রতি চারজন তরুণীর মধ্যে ১৮ বছর হওয়ার আগেই একজনের বিয়ে হচ্ছে বলে জানায় সংস্থাটি।

২০১৯ সালের বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের তথ্য ব্যবহার করে বাংলাদেশের বাল্যবিয়ের এ চিত্র তুলে ধরেছে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি মি. শেলডন ইয়েটের উদ্বৃতি দিয়ে বলা হয়, অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের সংখ্যা বিস্ময়কর। লাখ লাখ শিশুর শৈশব কেড়ে নেয়া হচ্ছে এবং মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে তাদের। তাই শিশুরা যেন স্কুলে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করা এবং পরিপূর্ণভাবে নিজের মধ্যে থাকা সম্ভাবনা অনুযায়ী বেড়ে উঠতে পারে সে সুযোগ দিতে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয় প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, যেসব শিশুর শৈশবে বিয়ে হয়ে যায়, তাদের তাৎক্ষণিক এবং জীবনভর এর পরিণতি ভোগ করতে হয়। তাদের স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে এবং তারা অল্প বয়সে গর্ভধারণের বাড়তি ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। ফলে শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যের জটিলতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। বাল্যবিয়ের এই প্রচলন মেয়েদের পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব থেকেও বিচ্ছিন্ন করতে পারে এবং তাদের নিজেদের কমিউনিটিতে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত রাখতে পারে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সার্বিক কল্যাণের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, বিশ্ব একের পর সংকটে জর্জরিত, যা ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের আশা ও স্বপ্নকে চুরমার করে দিচ্ছে, বিশেষ করে মেয়েদের, যাদের বিয়ের কনে হিসেবে নয় বরং শিক্ষার্থী হিসেবে থাকা উচিত। স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান সশস্ত্র সংঘাত এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব পরিবারগুলোকে বাল্যবিয়ের মতো মিথ্যা ধারণার আশ্রয় নিতে বাধ্য করছে। শিশুদের পড়াশোনার করার ও সক্ষম জীবনের অধিকারী হওয়ার অধিকার যাতে সুরক্ষিত হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সবকিছু করতে হবে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, সর্বশেষ বৈশ্বিক হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী আজ জীবিত প্রায় ৬৪ কোটি মেয়ে ও নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের ছোটবেলায়। অথবা বলা যায়, প্রতিবছর ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ের বিয়ে হয় তাদের ছোটবেলায়। পাঁচ বছর আগে এ বিষয়ে সর্বশেষ হিসাব প্রকাশের পর, এ পর্যন্ত ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যাওয়া তরুণীর সংখ্যা ২১ শতাংশ থেকে ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে এই অগ্রগতি সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে বাল্যবিয়ের অবসান করার যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা পূরণের জন্য বিশ্বব্যাপী ওই কমার গতি ২০ গুণ দ্রুততর হতে হবে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ