আজকের শিরোনাম :

জাতির অর্জনের চিত্র সঠিকভাবে প্রকাশ গণমাধ্যমের দায়িত্ব : তথ্যমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:১১

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শুধু ভুলত্রুটি নয়, জাতির অর্জনের চিত্র সঠিকভাবে প্রকাশ গণমাধ্যমের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন-অগ্রগতি এবং একইসাথে ভুলত্রুটি দুটিই তুলে ধরা গণমাধ্যমের দায়িত্ব। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সেটি না হয়ে একপেশে হয়ে যায়। সেটি দেশ ও সমাজকে উপকৃত করে না। যখন জাতির কোনো অর্জন হয়, সেই অর্জনের চিত্রটি যেন সঠিকভাবে প্রকাশিত হয় তা লক্ষ্য রাখা গণমাধ্যমের দায়িত্ব।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবে দৈনিক নতুন আশা পত্রিকা নবআঙ্গিকে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও দৈনিক নতুন আশা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান এমপির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ এমপি, আহসান আদেলুর রহমান এমপি, বেগম অপরাজিতা হক এমপি, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ফিরোজ আলম মিলন এবং পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক অধ্যাপক মোমেনা মান্নান সভায় বক্তব্য দেন।

ড. হাছান বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে আইএমএফের প্রাক্কলন অনুযায়ী ২০২১ সালে আমরা মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে ভারতকে ছাড়িয়েছি, পাকিস্তানকে ছাড়িয়েছি বহু আগেই। সেই রিপোর্ট যখন বিশ্ব গণমাধ্যম তথা ভারত ও  পাকিস্তানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলো, সেখানে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা আর সেখানকার নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের নিজেদের দেশে প্রশংসার ঝড় বয়ে যায়নি। এই দায়িত্ব গণমাধ্যমের, কিন্তু সেটি হয়নি।

আমাদের নারী ফুটবল দল, ক্রিকেট দল, যুবদলগুলো যেভাবে বিশ্বের বিভিন্ন পর্যায়ে শিরোপা অর্জন করেছে এগুলোর পেছনে সরকারের অবদানের কথা স্মরণ করিয়ে দেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আজকে আমাদের দেশ থেকে নানা পণ্য বিদেশে রপ্তানি হয়। সে জন্য যে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, অবকাঠামো, নীতি, প্রণোদনা লাগে সরকারই সেগুলো জোগায়। আমার অনুরোধ, যখন জাতির কোনো অর্জন হয়, সেই অর্জনের চিত্রটা যেন গণমাধ্যমে সঠিকভাবে প্রকাশিত হয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, কোনো কোনো প্রচার মাধ্যম কিংবা টেলিভিশনেও দেখা যায় যে, অনেক সময় ছোট বিষয়কে বড় করে দেখানো হয় কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখানো হয় না। আবার সরকারের অনেক অর্জন ছাপা হয় তৃতীয় পাতায় আর ভুলত্রুটি স্থান পায় প্রথম পাতায়। সেটি দেশ ও সমাজকে উপকৃত করে না। এজন্য সবার সচেতন থাকা দরকার। মানুষের কাছে শুধু হতাশার চিত্র উপস্থাপন করা হলে জাতি হতাশ হবে। সে ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভবপর নয় যা আশাবাদী হলে সম্ভব।

নতুন আঙিকে প্রকাশিত নতুন আশা পত্রিকা মানুষের মধ্যে আশা জাগাবে, শুধুমাত্র হতাশার চিত্র তুলে ধরবে না এ আশা ব্যক্ত করে ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের সরকার গণমাধ্যমবান্ধব সরকার। জননেত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন, গণমাধ্যমের বিকাশের মাধ্যমে বহুমাত্রিক গণতান্ত্রিক সমাজের ভিত মজবুত হয়, সে কারণে গণমাধ্যমের বিকাশের স্বার্থে যা কিছু করা দরকার আমাদের সরকার তা করছে।’ 

তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে মন্ত্রী হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের সময় দেশে দৈনিক পত্রিকা ছিল সাড়ে ৪০০, আজকে সেটি সাড়ে ১ হাজার ২০০ ওপরে। বেসরকারি টেলিভিশনের যাত্রাও শুরু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে। ২০০৯ সালে আবার তিনি সরকার গঠনের সময় বেসরকারি টিভি ছিল ১০টি। আজকে ৪৬টি লাইসেন্স দেওয়া আছে। অনলাইন পত্রিকা রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৫ হাজার আবেদন পড়েছে। আগে হাতেগোণা কয়েকটি ছিল। এভাবে গত প্রায় চৌদ্দ বছরে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে।

শুধু গণমাধ্যমের বিকাশই নয়, সাংবাদিকদের জন্য গঠিত কল্যাণ ট্রাস্ট আজকে সমগ্র দেশের সাংবাদিকদের একটি ভরসার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে ৩ লাখ টাকা পান, অসুস্থ হলে অনুদান পান। ট্রাস্ট থেকে অস্বচ্ছল সাংবাদিকদের ছেলেমেয়েরা যাতে পড়াশোনার জন্য সহায়তা পায়, আমরা সেই ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি। করোনার তীব্র প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ঢেউয়ের সময় উপমহাদেশে সাংবাদিকরা মৃত্যুবরণ করলে শুধু ভারতে সহায়তা দেয়া হয়েছে। আমাদের দেশে আমরা হাজার হাজার সাংবাদিককে করোনাকলীন এককালীন সহায়তা দিয়েছি, এখনো তা চলমান।

আমরা যে জাতীয় প্রেসক্লাবে বসে আজকে কথা বলছি এই জায়গাটিও প্রধানমন্ত্রীর  পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিনামূল্যে বরাদ্দ দিয়েছিলেন স্মরণ করিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় প্রেসক্লাবের ২১ তলা ভবন নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই নির্দেশনা দিয়েছেন এবং প্রাথমিক নকশাও চূড়ান্ত করেছেন। এভাবে গণমাধ্যমের বিকাশে আমাদের সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

এবিএন/এসএ/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ