ছয় মাসে ধর্ষণের শিকার ৪৭৬, নির্যাতন-হত্যার শিকার ৮০৭ শিশু
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২২, ২০:৫১
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪৭৬ জন নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২৪ নারীকে। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে ৮০৭ জন শিশু।
আজ মঙ্গলবার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত অর্ধ-বার্ষিক মানবাধিকার লঙ্ঘন পরিস্থিতির পরিসংখ্যানগত এই পর্যালোচনা প্রতিবেদন ১০টি জাতীয় দৈনিক ও বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ এবং আসকের নিজস্ব সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
গত ছয় মাসে (চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস) নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময়কালে লাঞ্ছিত এবং হামলার শিকার হয়েছেন ৮২ জন নারী। যাদের মধ্যে যৌন হয়রানির কারণে ৫ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে, যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটে কর্তৃক ৩ জন পুরুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এ সময় পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ২২৮ নারী।
এর মধ্যে ১৪০ নারীকে হত্যা করা হয়েছে। যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ৯৮ জন নারী। যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ৪৯ জনকে এবং যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৬ জন নারী।
চলতি বছরের ২ এপ্রিল রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের এক নারী প্রভাষককে 'টিপ পরার কারণে' লাঞ্ছিত করেন একজন পুলিশ সদস্য। ২ মে নরসিংদী রেল স্টেশনে 'পোশাকের কারণে' একজন তরুণীকে হেনস্তা করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। আসকের তথ্যমতে, এ সময় মোট ১২ জন গৃহকর্মী বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন মোট ৮ নারী, যাদের মধ্যে ৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ছয় মাসে মোট ৮০৭ শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে আত্মহত্যা করেছে ২৬ শিশু। বিভিন্ন সময়ে মোট ৫৬ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ১৩ শিশুর এবং বলাৎকারে ব্যর্থ হয়ে একজন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তথ্য বিশ্নেষণে দেখা যায়, নিহত ২৪৮ শিশুর মধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকায় এই সংখ্যা ৩৪। প্রতিবেদন অনুসারে, গত ছয় মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক ১০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬ জন পুলিশ কর্তৃক এবং ৪ জন র্যাব কর্তৃক নিহত বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এই সময়কালে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৩৮ জন। গত ছয়মাসে গণপিটুনির ঘটনায় নিহত হন ২০ জন। বিগত ছয় মাসে বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচনসহ রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে মোট ২৫১টি। এতে নিহত হয়েছেন ৪৪ জন ও আহত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৮৮৭ জন। এ সময়ের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আসক বলছে, গত ছয় মাসে ১১১ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। আরও বলা হয়েছে, গত ছয় মাসে সীমান্তে বিএসএফ-এর নির্যাতন ও গুলিতে নিহত হয়েছেন ৫ বাংলাদেশি নাগরিক। এছাড়া আহত হয়েছেন ৪ জন ও অপহরণের শিকার হয়েছেন ৬ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, জোরপূর্বক অপহরণ ও রহস্যজনক নিখোঁজ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে হয়রানি, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর হামলা, সীমান্তে নির্যাতন ও হত্যাসহ নানাভাবে প্রতিনিয়তই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে চলেছে। আসক মনে করে, মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে আইনের শাসন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যকীয়। অন্যথায় বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায় এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনা বাড়তে থাকে। আসক রাষ্ট্রের কাছে নাগরিকের সব ধরনের মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার দ্রুততার সাথে নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। এবিএন/আব্দুর রাজ্জাক/জসিম/এআর
চলতি বছরের ২ এপ্রিল রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের এক নারী প্রভাষককে 'টিপ পরার কারণে' লাঞ্ছিত করেন একজন পুলিশ সদস্য। ২ মে নরসিংদী রেল স্টেশনে 'পোশাকের কারণে' একজন তরুণীকে হেনস্তা করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। আসকের তথ্যমতে, এ সময় মোট ১২ জন গৃহকর্মী বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন মোট ৮ নারী, যাদের মধ্যে ৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ছয় মাসে মোট ৮০৭ শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে আত্মহত্যা করেছে ২৬ শিশু। বিভিন্ন সময়ে মোট ৫৬ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ১৩ শিশুর এবং বলাৎকারে ব্যর্থ হয়ে একজন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তথ্য বিশ্নেষণে দেখা যায়, নিহত ২৪৮ শিশুর মধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকায় এই সংখ্যা ৩৪। প্রতিবেদন অনুসারে, গত ছয় মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক ১০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬ জন পুলিশ কর্তৃক এবং ৪ জন র্যাব কর্তৃক নিহত বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এই সময়কালে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৩৮ জন। গত ছয়মাসে গণপিটুনির ঘটনায় নিহত হন ২০ জন। বিগত ছয় মাসে বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচনসহ রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে মোট ২৫১টি। এতে নিহত হয়েছেন ৪৪ জন ও আহত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৮৮৭ জন। এ সময়ের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আসক বলছে, গত ছয় মাসে ১১১ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। আরও বলা হয়েছে, গত ছয় মাসে সীমান্তে বিএসএফ-এর নির্যাতন ও গুলিতে নিহত হয়েছেন ৫ বাংলাদেশি নাগরিক। এছাড়া আহত হয়েছেন ৪ জন ও অপহরণের শিকার হয়েছেন ৬ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, জোরপূর্বক অপহরণ ও রহস্যজনক নিখোঁজ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে হয়রানি, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর হামলা, সীমান্তে নির্যাতন ও হত্যাসহ নানাভাবে প্রতিনিয়তই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে চলেছে। আসক মনে করে, মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে আইনের শাসন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যকীয়। অন্যথায় বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায় এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনা বাড়তে থাকে। আসক রাষ্ট্রের কাছে নাগরিকের সব ধরনের মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার দ্রুততার সাথে নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। এবিএন/আব্দুর রাজ্জাক/জসিম/এআর
এই বিভাগের আরো সংবাদ